ঢাবি শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদ: নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতা বন্ধ ও দোষীদের শাস্তির দাবি

রবিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা দেশজুড়ে নারীর বিরুদ্ধে চলমান সহিংসতা ও হয়রানির প্রতিবাদে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেছেন। তারা নারী নির্যাতন ও হয়রানির ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন।

ছবি - সংগৃহীত

দেশজুড়ে ধর্ষণ, নিপীড়ন ও হয়রানির একাধিক ঘটনা ঘটায় নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যর্থতার জন্য শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা সরকার এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দায়ী করেছেন।

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির জন্য স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর ভূমিকার সমালোচনা করে তারা নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যর্থতার জন্য উপদেষ্টার অপসারণের দাবিও জানিয়েছেন।

ঢাবির শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্কের ব্যানারে অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে এক প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন।

সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ঢাবি গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক গিতিয়ারা নাসরিন। তিনি বলেন, অপরাধীরা জানে যে তাদের অপরাধের কোন শাস্তি হবে না, তাই তারা নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতা অব্যাহত রাখছে। ধর্ষক, নারী নির্যাতনকারী ও হয়রানিকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করে তিনি বলেন, ‘অপরাধীদের অবশ্যই বিচারের আওতায় আনা হোক।’

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার ভূমিকার সমালোচনা করে ঢাবি ইংরেজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক তাসনিম সিরাজ মাহবুব বলেন, পদত্যাগ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার জন্য একটি সম্মানজনক প্রস্থান হতে পারে, তবে তিনি পদত্যাগ না করায় উপদেষ্টাকে অপসারণের দাবি করেন।

এদিকে, সম্প্রতি এক ঢাবি ছাত্রীর যৌন হয়রানির ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্কের পক্ষ থেকে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সামিনা লুৎফা চার দফা দাবি তুলে ধরেন।

দাবিগুলো হলো: ভুক্তভোগীর ব্যক্তিগত তথ্য থানা থেকে ফাঁস হওয়ায় দায়িত্বে অবহেলার জন্য দায়ী পুলিশ কর্মকর্তাদের শাস্তি; ভুক্তভোগীকে হুমকি ও হয়রানিতে জড়িতদের শাস্তি; ঘটনাস্থলে উপস্থিত জনতার যথাযথ তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করা; এবং যৌন হয়রানি ও নৈতিকতা পুলিশিংয়ে জড়িত ঢাবি কর্মচারীকে যথাযথ প্রক্রিয়ায় বরখাস্ত করা।

হিসাববিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোশাহিদা সুলতানা ঢাবি কর্মচারীর দ্বারা সম্প্রতি এক ঢাবি ছাত্রীর যৌন হয়রানির ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন না করার সমালোচনা করেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন হয়রানি প্রতিরোধ সেলের অধীনে ব্যবস্থা গ্রহণ না করে ভুক্তভোগীকে থানায় মামলা করার পরামর্শ দেওয়ার জন্য তিনি প্রশাসনের নিন্দা জানান।

এছাড়া, ঢাবির ইংরেজি, পাবলিক প্রশাসন, স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউট, পদার্থবিজ্ঞানসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে পৃথক সমাবেশ ও মিছিল করে নারীর বিরুদ্ধে সাম্প্রতিক ধর্ষণ ও হয়রানির ঘটনার প্রতিবাদ জানান।

এর আগে, শনিবার ভোরে মাগুরায় আট বছর বয়সী এক শিশুকে ধর্ষণসহ সাম্প্রতিক ধর্ষণের ঘটনার প্রতিবাদে বিভিন্ন হল থেকে বহুসংখ্যক ছাত্রী মিছিল বের করেন।