কায়েস সাঈদ: তিউনিসিয়া বিক্রির জন্য নয়

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণের শর্ত প্রত্যাখ্যান করে তিউনিসিয়ার প্রেসিডেন্ট কায়েস সাঈদ বলেছেন, তার দেশ বিক্রির জন্য নয়। তিউনিসিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট হাবিব বুরগুইবার মৃত্যুবার্ষিকীতে দেওয়া এক বিবৃতিতে তিনি এ কথা বলেন। খবর মিডলইস্টমনিটর।

কায়েস সাঈদ

দেশের জাতীয় সিদ্ধান্তগুলো অবশ্যই জনগণের ইচ্ছার ওপর ভিত্তি করেই নির্ধারিত হবে উল্লেখ করে তিনি দেশের কিছু রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে তিউনিসিয়াকে বিদেশি স্বার্থের কাছে বিক্রি করার চেষ্টার অভিযোগ করেছেন তিনি। নাম উল্লেখ না করে এসব দলের ব্যাপারে তিনি মন্তব্য করেন, তারা দেশ, জাতি ও সমাজের সঙ্গে সম্পৃক্ততার অনুভূতি হারিয়ে ফেলেছেন। তারা সাংবিধানিক বিভ্রান্তিতে ভুগছে এবং ক্ষমতার জন্য হাতাহাতি করছে।

সম্প্রতি আইএমএফ তিউনিসিয়াকে ১৯০ কোটি ডলার ঋণ চুক্তির অংশ হিসেবে একটি প্যাকেজ বাস্তবায়নের শর্তারোপ করে। প্যাকেজের অন্তর্ভুক্ত ছিল ধীরে ধীরে ভর্তুকি ব্যবস্থা হ্রাস করা, সরকারি প্রতিষ্ঠানের সংস্কার ও মজুরি বিল নিয়ন্ত্রণ করা। কিন্তু সাঈদ বলেন, ভর্তুকি কমানোর যে প্রস্তাব আইএমএফ দিয়েছে, তার সঙ্গে তিনি একমত নন। কারণ তিউনিসিয়ার লোকজন এমননিতেই আর্থিক চাপের মুখে আছে। ভর্তুকি উঠিয়ে নিলে জনগণকে সেটি আরও দারিদ্র্যের দিকে নিয়ে যাবে।

তিউনিসিয়া ও আইএমএফ

তিনি এ সময় ইতিহাস উল্লেখ করে বলেন, ১৯৮৪ সালে একবার সরকার শস্যপণ্যের ওপর ভর্তুকি তুলে নেয়। এতে দেশজুড়ে ব্যাপক বিক্ষোভের সূত্রপাত হয়। এবং প্রচুর হতাহতের ঘটনা ঘটে।

আইএমএফের সঙ্গে একটি চুক্তিতে পৌঁছাতে ব্যর্থ হলে বিকল্প সমাধান সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে সাইদ বলেন, আমাদের নিজেদের ওপরই নির্ভর করতে হবে।

কায়েস সাঈদ দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, তিনি ও তার সরকার মৃত্যুকে ভয় পান না এবং তারা প্রয়োজনে দেশের জন্য মৃত্যুবরণ করবেন।

বিরোধীদের সাংবিধানিক বিভ্রান্তি এবং রাষ্ট্রপতির পদ শূন্য হওয়ার দাবি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে সাঈদ বলেন, এ ধরনের গুজনের কোনো ভিত্তি নেই। বরং এটি নাগরিক শান্তিকে হুমকির মুখে ফেলে।

স্বাস্থ্যগত কারণে কয়েকদিন ধরে জনসমক্ষে উপস্থিত ছিলেন না কায়েস সাঈদ। তবে বিরোধী ন্যাশনাল স্যালভেশন ফ্রন্ট গত ২৩ মার্চ থেকে প্রেসিডেন্টের অনুপস্থিতির কারণগুলো প্রকাশ করার দাবি জানিয়েছে।

২০২১ সালের জুলাই থেকে তিউনিসিয়া গুরুতর রাজনৈতিক সংকটে ভুগতে শুরু করে। সে সময় সাঈদ সরকারকে বরখাস্ত করার পাশাপাশি পার্লামেন্ট ও বিচার বিভাগীয় পরিষদ ভেঙে দেন এবং প্রায় এককভাবে ক্ষমতা নিজের হাতে নিয়ে নেন। বিরোধীরা একে সংবিধানের বিরুদ্ধে অভ্যুত্থান হিসেবে বর্ণনা করেন।