ইস্পাত-অ্যালুমিনিয়ামে ট্রাম্পের শুল্ক: বৈশ্বিক প্রতিক্রিয়া ও বাণিজ্য যুদ্ধের আশঙ্কা

আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়াম আমদানির ওপর শুল্ক আরোপ কার্যকর করেছেন। এই পদক্ষেপে আমেরিকার বৃহৎ বাণিজ্যিক অংশীদারদের সঙ্গে উত্তেজনা বৃদ্ধির আশঙ্কা করা হচ্ছে।

ডোনাল্ড ট্রাম্প

এই নতুন নিয়ম অনুযায়ী, আমেরিকায় আমদানি করা ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়ামের ওপর ২৫% শুল্ক আরোপ করা হবে এবং সকল দেশের জন্য বিদ্যমান ছাড় বাতিল করা হবে।

এর প্রতিক্রিয়ায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) কয়েক বিলিয়ন ইউরো মূল্যের মার্কিন পণ্যের ওপর পাল্টা শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছে।

ট্রাম্প আশা করছেন এই শুল্ক আমেরিকার ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়াম উৎপাদন বৃদ্ধি করবে। তবে সমালোচকরা বলছেন, এতে মার্কিন ভোক্তাদের জন্য দাম বৃদ্ধি পাবে এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কমে যাবে।

মার্কিন ইস্পাত প্রস্তুতকারকদের প্রতিনিধিত্বকারী সংস্থা আমেরিকান আয়রন অ্যান্ড স্টিল ইনস্টিটিউট (এআইএসআই) এই শুল্ককে স্বাগত জানিয়ে বলেছে যে এটি কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে এবং দেশীয় ইস্পাত উৎপাদন বাড়াবে।

সংস্থাটির সভাপতি কেভিন ডেম্পসি বলেছেন, এই পদক্ষেপ বিদেশি উৎপাদকদের শুল্ক এড়ানোর জন্য ব্যবহৃত ছাড়, ব্যতিক্রম এবং কোটার ব্যবস্থার অবসান ঘটাবে।

ডেম্পসি আরও বলেন, ‘এআইএসআই ইস্পাতের ওপর শুল্কের অখণ্ডতা পুনরুদ্ধার এবং অসৎ বাণিজ্য চর্চা মোকাবেলার জন্য একটি শক্তিশালী কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য প্রেসিডেন্টের পদক্ষেপকে সাধুবাদ জানায়।’

আমেরিকা অ্যালুমিনিয়াম এবং ইস্পাতের একটি বড় আমদানিকারক দেশ এবং কানাডা, মেক্সিকো এবং ব্রাজিল এই ধাতুগুলির বৃহত্তম সরবরাহকারীদের মধ্যে রয়েছে।

কোনো ব্যতিক্রম নেই

অন্যান্য দেশগুলো তাৎক্ষণিকভাবে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে।

ব্রিটেনের বাণিজ্যমন্ত্রী জোনাথন রেইনল্ডস বলেছেন, তিনি হতাশ এবং জাতীয় স্বার্থে প্রতিক্রিয়া জানাতে ‘সকল বিকল্প খোলা আছে’।

ইউরোপীয় কমিশন এক বিবৃতিতে বলেছে যে তারা ২৬ বিলিয়ন ইউরো (২১.৯ বিলিয়ন পাউন্ড, ২৮.৩ বিলিয়ন ডলার) মূল্যের মার্কিন পণ্যের ওপর পাল্টা শুল্ক আরোপ করছে।

অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ বলেছেন, নতুন শুল্ক আরোপের জন্য ট্রাম্প প্রশাসনের সিদ্ধান্ত ‘সম্পূর্ণ অন্যায্য’।

তিনি আরও বলেন, ‘এটি আমাদের দুই দেশের স্থায়ী বন্ধুত্বের চেতনার বিরুদ্ধে এবং আমাদের অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব ৭০ বছরেরও বেশি সময় ধরে যে সুবিধা প্রদান করেছে তার সম্পূর্ণ বিপরীতে।’

মন্দার আশঙ্কা

এই শুল্কের অর্থ হলো আমেরিকান ব্যবসায়ীদের দেশে ধাতু আনতে ২৫% শুল্ক দিতে হবে।

এর ফলে মহাকাশ, গাড়ি উৎপাদন এবং নির্মাণ সহ অনেক আমেরিকান শিল্পের জন্য ব্যয় বৃদ্ধি পাবে।

কিছু অর্থনীতিবিদ সতর্ক করে দিচ্ছেন যে শুল্ক আমেরিকান ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়াম শিল্পকে সাহায্য করতে পারে কিন্তু সামগ্রিক অর্থনীতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে।