হিন্দি বনাম তামিল: ভাষার দ্বন্দ্বে উত্তপ্ত ভারত
- Details
- by আন্তর্জাতিক ডেস্ক
ভারত বিশ্বের অন্যতম ভাষাগত বৈচিত্র্যপূর্ণ দেশ। বিশ্বের সর্ববৃহৎ জনসংখ্যার এই দেশটিতে হাজারো ভাষায় কথা বলে মানুষ। যদিও দেশটিতে সরকারি ভাষা স্বীকৃত ২২টি। তারমধ্যে কেন্দ্রীয় সরকার চাচ্ছে, সব রাজ্যে হিন্দি ভাষা চালু থাকুক। আর এ নিয়ে তৈরি হয়েছে দ্বন্দ্ব। বিশেষ করে তামিলনাড়ুতে হিন্দিবিরোধী বাতাস বইছে জোরসে।
ভারতের অন্য রাজ্যগুলোর তুলনায় শিক্ষা ও কর্মক্ষেত্রে অনেক এগিয়ে তামিলনাড়ুর শিক্ষার্থীরা
ভারতের ২০১১ সালে অনুষ্ঠিত সর্বশেষ আদমশুমারি অনুসারে, মাত্র ২২টি সরকারি ভাষা রয়েছে, যার মধ্যে ৪৬% শতাংশের বেশি মানুষের ব্যবহৃত হিন্দিই সর্বাধিক ব্যবহৃত ভাষা।
ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার বিশেষ করে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে বড় অভিযোগ, বিভিন্ন রাজ্যে হিন্দির আগ্রাসন চালাতে সচেষ্ট তারা।
ভাষার দ্বন্দ্বে সম্প্রতি মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে কেন্দ্রীয় বিজেপি সরকার ও তামিলনাড়ু রাজ্য সরকার। জোর করে হিন্দি চাপিয়ে দেওয়ার অভিযোগ তুলে সরব হয়েছেন দক্ষিণের রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিন।
সমস্যার সূত্রপাত পাঁচ বছর আগে ২০২০ সালে। ওই বছর নতুন শিক্ষানীতি (নিউ এডুকেশন পলিসি) চালু করে মোদি সরকার। ওই শিক্ষানীতিতে প্রতিটি রাজ্যে শিক্ষার্থীদের বাধ্যতামূলকভাবে তিনটি করে ভাষা শেখানোর কথা বলা হয়েছে।
নতুন শিক্ষানীতি অনুযায়ী, প্রতিটি রাজ্যে প্রথম ভাষা হিসেবে স্কুলপড়ুয়াদের বাধ্যতামূলক শিখতে হবে মাতৃভাষা। দ্বিতীয় ভাষা হিসেবে হিন্দি বা ইংরেজি বেছে নিতে হবে। এ ছাড়া তৃতীয় একটি ভাষা বেছে নিতে হবে সংশ্লিষ্ট রাজ্যকে।
নতুন শিক্ষানীতির এই বিষয়টিতেই প্রবল আপত্তি রয়েছে তামিলনাড়ুর। রাজ্যটিতে বর্তমানে স্কুলে দু’টি ভাষা শিখে শিক্ষার্থীরা। একটি স্থানীয় তামিল ও আরেকটি ইংরেজি।
স্ট্যালিন সরকারের অভিযোগ, তৃতীয় ভাষা হিসেবে হিন্দিকে চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে কেন্দ্রীয় সরকার। স্ট্যালিন বলেন, এই সিদ্ধান্তের নেপথ্যে রয়েছে উত্তর ভারতের হিন্দি সংস্কৃতিকে জোর করে তামিলভূমি এবং বাসিন্দাদের ওপর চাপিয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্র।
১৯৪৭ সালে ব্রিটিশরা ভারত ছেড়ে যাওয়ার পর, সদ্য স্বাধীন দেশে ইংরেজির পরিবর্তে হিন্দিকে একটি সংযোগ ভাষা হিসেবে প্রচার করার চেষ্টা চলে। ১৯৫০ সালে প্রণীত সংবিধানেও হিন্দির প্রসারকে উৎসাহিত করার কথা বলা হয়। এর ফলে অ-হিন্দিভাষী রাজ্যগুলোতে তীব্র বিরোধিতা শুরু হয়। এতে ১৯৫০ সালের পর দীর্ঘ ১৫ বছর বিকল্প সরকারি ভাষা হিসেবে ইংরেজি ব্যবহার অব্যাহত রাখতে বাধ্য হয় ফেডারেল সরকার।
১৯৬৫ সালে হিন্দি চাপিয়ে দেওয়ার আশঙ্কায় তামিলনাড়ুজুড়ে সহিংস বিক্ষোভ শুরু হয়, যার ফলে ফেডারেল সরকার একটি আইন পাস করে যা ইংরেজিকে সরকারি ভাষা হিসেবে অব্যাহত রাখার নিশ্চয়তা দেয়।
তবে ১৯৬৮ সালের জাতীয় শিক্ষানীতিতে প্রথমবার তিন-ভাষা সূত্র গ্রহণ করা হয় এবং একই বছরে সরকার অ-হিন্দিভাষী রাজ্যগুলোতে হিন্দি শেখানোর বাধ্যতামূলক নীতিমালা প্রণয়ন করে। তারই ধারাবাহিকতায় ২০২০ সালে জাতীয় শিক্ষানীতি (এনইপি) গ্রহণ করে নরেন্দ্র মোদির সরকার।
তামিলনাড়ুতে বিগত পাঁচ বছরেও শিক্ষানীতির তিন ভাষা গ্রহণ না করায় সম্প্রতি রাজ্যটিতে শাস্তি হিসেবে শিক্ষাবিস্তারে আর্থিক অনুদান বন্ধ করে দিয়েছে নরেন্দ্র মোদীর প্রশাসন। আর এতেই তামিলনাড়ুতে নতুন করে হাওয়া পাচ্ছে হিন্দি-বিরোধিতা।
গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...
খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর
Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.
Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.