টানা ১২ মাস ধরে কমছে খাদ্যপণ্যের দাম

টানা ১২ মাস ধরে বিশ্ববাজারে খাদ্য মূল্য কমছে। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও)-এর পণ্যমূল্য সূচকে এ চিত্র দেখা যাচ্ছে। সূচকের তথ্য মতে, গত বছর রাশিয়ার ইউক্রেন আক্রমণের ধাক্কায় খাদ্যপণ্যের যে রেকর্ড মূল্যবৃদ্ধি ঘটেছিল, সে তুলনায় মার্চ মাসে মূল্য ২০ দশমিক ৫ শতাংশ কমেছে। খবর রয়টার্স।

গম, ভুট্টা, চালসহ সেরিয়াল পণ্যগুলোর দাম কমেছে

এফএওর সূচকে বিশ্বব্যাপী বিক্রিত খাদ্যপণ্যের মূল্য তুলে ধরা হয়। সূচকে মার্চ মাসে খাদ্যপণ্যের যে মূল্য দেখা গেছে, তা ২০২১ সালের জুলাইয়ের পর সর্বনিম্ন।

এফএও জানিয়েছে, মার্চ মাসে খাদ্যপণ্যের বৈশ্বিক মূল্যসূচকের গড় ছিল ১২৬ দশমিক ৯ পয়েন্ট, যা এক মাস আগের তুলনায় ৩ পয়েন্ট কম। ফেব্রুয়ারি মাসে মূল্যসূচকের গড় ছিল ১২৯ দশমিক ৮ পয়েন্ট।

জাতিসংঘের সংস্থাটিরে মতে, আন্তর্জাতিক বাজারে সরবরাহের প্রাচুর্য, বিভিন্ন দেশে আমদানি চাহিদায় পতন এবং কৃষ্ণসাগরীয় বন্দরগুলোর মাধ্যমে ইউক্রেনীয় শস্য রপ্তানির জন্য স্বাক্ষরিত চুক্তির মেয়াদ বৃদ্ধি- সবকিছু মিলেই খাদ্যপণ্যের মূল্যসূচক নিচে নেমেছে।

চিনি ও মাংসের মতো কয়েকটি পণ্যের দাম বাড়লেও বিভিন্ন ধরনের সেরিয়াল, ভেজিটেবল অয়েল ও ডেইরি পণ্যের দরপতনের কারণে খাদ্যপণ্যের সার্বিক মূল্যসূচক কমেছে বলে রোমভিত্তিক সংস্থাটি জানিয়েছে।

এফএওর মুখ্য অর্থনীতিবিদ মাক্রিমো তোরেরো এক বিবৃতিতে বলেছেন, বৈশ্বিক পর্যায়ে দাম কমলেও বিভিন্ন দেশের অভ্যন্তরীণ বাজারে খাদ্যপণ্যের মূল্য এখনও বেশি, যা খাদ্য নিরাপত্তার ক্ষেত্রে বাড়তি ঝুঁকি সৃষ্টি করছে।

তিনি বলেন, নীট খাদ্য আমদানিনির্ভর উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য এ কথাটি বেশি সত্য। ডলার অথবা ইউরোর বিপরীতে স্থানীয় মুদ্রার বিনিময় হারে পতন এবং ঋণের বোঝা এসব দেশের জন্য পরিস্থিতি আরও কঠিন করে তুলেছে।

মাসভিত্তিক হিসাবে মার্চ মাসে এফএওর সেরিয়াল মূল্যসূচক ৫ দশমিক ৬ শতাংশ কমেছে। এর মধে্য গমের মূল্য ৭ দশমিক ১ শতাংশ, ভুট্টার মূল্য ৪ দশমিক ৬ শতাংশ ও চালের মূল্য ৩ দশমিক ২ শতাংশ কমেছে। ভেজিটেবল অয়েলের মূল্য কমেছে ৩ শতাংশ, যা বিগত বছরের মার্চের তুলনায় ৪৭ দশমিক ৭ শতাংশ কম। ডেইরি পণ্যের মূল্য কমেছে শূন্য দশমিক ৮ শতাংশ।

অন্যদিকে চিনির মূল্য ১ দশমিক ৫ শতাংশ কমেছে। ভারত, থাইল্যান্ড ও চীনে উৎপাদন হ্রাস পাওয়ার আশঙ্কা থেকেই চিনির মূল্যবৃদ্ধি শুরু হয়েছে। এছাড়া মাংসের মূল্য শূন্য দশমিক ৮ শতাংশ বেড়েছে।