ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি সম্পূর্ণ বাতিলের দাবি যুক্তরাষ্ট্রের, বিশেষ দূতের পরস্পরবিরোধী মন্তব্য

মাস্কাটে আসন্ন দ্বিতীয় দফা পরমাণু আলোচনার প্রাক্কালে ইরানের প্রতি কঠোর অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত উইটকফ জানিয়েছেন, ওয়াশিংটনের সাথে কোনো চুক্তিতে পৌঁছাতে হলে তেহরানকে অবশ্যই তার ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণসহ সম্পূর্ণ পারমাণবিক কর্মসূচি বাতিল করতে হবে। ওমানের রাজধানীতে আগামী শনিবার এই আলোচনা পুনরায় শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।

ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের পতাকা

মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস বুধবার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, উইটকফের এই সাম্প্রতিক মন্তব্য তার আগের বক্তব্যের সাথে অসামঞ্জস্যপূর্ণ। এর আগে তিনি ইঙ্গিত দিয়েছিলেন যে, ইরান যদি শান্তিপূর্ণ বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য সীমিত পরিসরে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করে, তবে যুক্তরাষ্ট্র তাতে আপত্তি নাও করতে পারে।

কিন্তু মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে উইটকফ স্পষ্ট করে বলেন, ‘মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি, স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধির জন্য যেকোনো চূড়ান্ত চুক্তিতে ইরানকে তার পারমাণবিক সমৃদ্ধকরণ ও অস্ত্রায়নের প্রচেষ্টা সম্পূর্ণ বাতিল করার একটি কাঠামো অন্তর্ভুক্ত থাকতে হবে।’ তিনি আরও যোগ করেন, ‘বিশ্বের জন্য এটি অপরিহার্য যে আমরা একটি কঠিন, ন্যায্য এবং টেকসই চুক্তি সম্পাদন করি। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আমাকে এটাই করতে বলেছেন।’

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরও উইটকফের এই কঠোর অবস্থানের প্রতি সমর্থন জানিয়েছে এবং তারাও ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ বাতিলের পক্ষে বলে উল্লেখ করেছে।

উল্লেখ্য, গত শনিবার ওমানে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে পরমাণু চুক্তি নিয়ে প্রথম দফার আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। ইরানের পক্ষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি এবং যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি স্টিভ উইটকফ এতে নেতৃত্ব দেন। তেহরান প্রথম দফার আলোচনাকে 'পারস্পরিক শ্রদ্ধার ভিত্তিতে গঠনমূলক' বলে অভিহিত করেছিল।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সম্প্রতি ইরানকে সতর্ক করে দিয়েছেন যে, নতুন চুক্তিতে ব্যর্থ হলে তেহরানকে সামরিক হামলা ও কঠোর নিষেধাজ্ঞার সম্মুখীন হতে হবে। প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালে ইরানের সঙ্গে ছয় বিশ্বশক্তির পারমাণবিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হলেও ২০১৮ সালে ট্রাম্প প্রশাসন যুক্তরাষ্ট্রকে একতরফাভাবে সেই চুক্তি থেকে প্রত্যাহার করে নেয়।