রাশিয়ার হুঁশিয়ারি: টরাস ক্ষেপণাস্ত্র দিলে সরাসরি ইউক্রেন-যুদ্ধে জড়াবে জার্মানি

জার্মানি যদি ইউক্রেনকে টরাস দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করে, তবে দেশটি সরাসরি ইউক্রেন যুদ্ধে জড়িয়ে পড়বে বলে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন জাতিসংঘে নিযুক্ত রাশিয়ার স্থায়ী প্রতিনিধি ভাসিলি নেবেনজিয়া। বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) তুর্কি বার্তা সংস্থা আনাদোলুকে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে তিনি এই মন্তব্য করেন।

ভাসিলি নেবেনজিয়া

নেবেনজিয়া আনাদোলুকে বলেন, ‘এই ধরনের পদক্ষেপের (টরাস সরবরাহ) ফলে জার্মানি সরাসরি এই সংঘাতের একটি পক্ষ হয়ে উঠবে।’ তিনি অভিযোগ করেন, জার্মানি এবং আরও বেশ কয়েকটি পশ্চিমা দেশ ইউক্রেনকে সমর্থন দিয়ে এরই মধ্যে পরোক্ষভাবে এই যুদ্ধে জড়িত রয়েছে।

রুশ প্রতিনিধি বলেন, ‘এই দেশগুলো তাদের প্রক্সি বাহিনী (ইউক্রেন) ব্যবহার করে রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালাচ্ছে। টরাস ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করার মাধ্যমে উত্তেজনা বৃদ্ধির দিকে আরও একটি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’

উল্লেখ্য, টরাস ক্ষেপণাস্ত্রগুলো ৫০০ কিলোমিটারেরও (৩১০ মাইল) বেশি দূরত্বে আঘাত হানতে সক্ষম। বিশেষ করে সেতু এবং মাটির গভীরে থাকা সুরক্ষিত কমান্ড বাঙ্কারের মতো লক্ষ্যবস্তুতে নিখুঁতভাবে আঘাত করার ক্ষমতার জন্য এই ক্ষেপণাস্ত্র পরিচিত।

সাক্ষাৎকারে নেবেনজিয়া ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়েও কথা বলেন। এ সংক্রান্ত আলোচনা ব্যর্থ হলে দেশটির বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক শক্তি প্রয়োগের হুমকির বিষয়ে তিনি মন্তব্য করেন, যুক্তরাষ্ট্র এক্ষেত্রে একটি রাজনৈতিক সমাধান চায় এবং রাশিয়াও একই মত পোষণ করে।

যুদ্ধবিরতির প্রসঙ্গে তিনি গত ১৮ মার্চ ফোনালাপে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে জ্বালানি অবকাঠামোতে আংশিক যুদ্ধবিরতির বিষয়ে হওয়া সম্মতির কথা স্মরণ করেন। নেবেনজিয়া জানান, মস্কো সেই উদ্যোগকে সমর্থন জানিয়েছিল এবং রুশ বাহিনীকে তা মেনে চলার নির্দেশও দিয়েছিল।

তিনি দাবি করেন, রাশিয়া শুরু থেকেই এই প্রস্তাব মেনে চললেও ইউক্রেন প্রকাশ্যে সমর্থন জানিয়েও প্রতিদিন আক্রমণ চালিয়েছে। রুশ প্রতিনিধি বলেন, ‘ইউক্রেন ১২০টিরও বেশি হামলা করেছে, যার মধ্যে রাশিয়ার জ্বালানি অবকাঠামোও রয়েছে। দেশটি জ্বালানি অবকাঠামোয় আংশিক যুদ্ধবিরতি মেনে চলেনি। অতএব, এই মুহূর্তে যুদ্ধবিরতির কথা বলা অবাস্তব। আমরা চাই ইউরোপীয় দেশগুলো ইউক্রেনকে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ করুক।’