গাজায় হামলা চালাতে গিয়ে ইসরায়েলি ভূখণ্ডেই বোমা ফেলল যুদ্ধবিমান!

গাজা উপত্যকায় হামলা চালানোর সময় কারিগরি ত্রুটির কারণে একটি ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান ভুলবশত নিজেদের নির ইতজাক বসতির কাছে বোমা ফেলেছে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী (আইডিএফ) এই তথ্য নিশ্চিত করেছে। বোমাটি বসতির নিকটবর্তী একটি খোলা জায়গায় পড়ায় কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি বলে জানানো হয়েছে।

ম্যাপে গাজা উপত্যকার অবস্থান

ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, ‘মঙ্গলবার গাজায় হামলা চালাতে যাওয়ার পথে একটি যুদ্ধবিমান থেকে কারিগরি ত্রুটির কারণে নির ইতজাক এলাকার কাছে খোলা জায়গায় একটি বোমা পড়ে।’

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, এই ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি এবং বিষয়টি খতিয়ে দেখতে তদন্ত চলছে।

স্থানীয় সংবাদমাধ্যম ইয়েদিওত আহারোনোতকে নির ইতজাক বসতির বাসিন্দারা জানিয়েছেন, গাজায় চলমান সামরিক অভিযানের কারণে তারা প্রায়শই বিস্ফোরণের শব্দ শুনে অভ্যস্ত। তাই মঙ্গলবারের বিস্ফোরণের শব্দ শুনেও তারা বিশেষ কোনো অস্বাভাবিকতা টের পাননি বা এতে তাদের মধ্যে কোনো সন্দেহ তৈরি হয়নি।

গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন শুরুর পর থেকে এটিই প্রথম এ ধরনের দুর্ঘটনা নয়। এর আগেও ইসরায়েলি ভূখণ্ডে ভুলবশত গোলা বা বোমা ফেলার ঘটনা ঘটেছে। চলতি বছরের জুনে গাজাকে লক্ষ্য করে ছোড়া একটি ট্যাংকের গোলা লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে সীমান্ত বেড়ার কাছে ইসরায়েলি ভূখণ্ডে এসে পড়েছিল।

এরও আগে, মে মাসে, এশকল অঞ্চলের মোশাভ ইয়াতেদের বাড়িঘরের মাঝে একটি এফ-১৫ যুদ্ধবিমান থেকে ফেলা ৫০০ কেজি ওজনের একটি বোমা অবিস্ফোরিত অবস্থায় পাওয়া যায়। সেসময় ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ঘটনাটিকে ‘ব্যতিক্রমী, বিরল এবং বিপজ্জনক’ বলে মন্তব্য করেছিল।

উল্লেখ্য, গত ১৮ মার্চ থেকে ইসরায়েলি বাহিনী গাজায় পুনরায় ব্যাপক হামলা শুরু করে, যা জানুয়ারিতে হওয়া স্বল্পকালীন যুদ্ধবিরতি এবং বন্দী বিনিময় চুক্তিকে কার্যত অকার্যকর করে দেয়। ২০২৩ সালের অক্টোবর মাস থেকে গাজায় ইসরায়েলের চালানো নৃশংস হামলায় অন্তত ৫১,০০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।

গাজায় যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ সংঘটনের অভিযোগে গত বছরের নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এবং তার তৎকালীন প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে। এছাড়া, গাজা উপত্যকায় চালানো এই যুদ্ধের জন্য ইসরায়েল আন্তর্জাতিক বিচার আদালতেও (আইসিজে) গণহত্যার মামলার মুখোমুখি হয়েছে।