ইরানের সর্বোচ্চ নেতা: পুরনো চুক্তি ভঙ্গের পর নতুন করে আলোচনার অর্থ নেই

ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনেয়ী আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আলোচনার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন। খামেনেয়ী বলেছেন, এটি বিশ্ব জনমতকে প্রভাবিত করার জন্য একটি কৌশল মাত্র।

আয়াতুল্লাহ আলী খামেনেয়ী

ট্রাম্প সম্প্রতি ইরানের পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে নতুন করে আলোচনার আহ্বান জানিয়ে একটি চিঠি পাঠিয়েছিলেন। সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্টের কূটনৈতিক উপদেষ্টা আনোয়ার গারগাশ এই চিঠিটি ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাকচির কাছে পৌঁছে দেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে এক বৈঠকে খামেনেয়ী ট্রাম্পের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে বলেন, পূর্বে দীর্ঘ আলোচনার মাধ্যমে একটি সম্পূর্ণ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল, যা পরবর্তীতে আমেরিকা একপাক্ষিকভাবে বাতিল করে দিয়েছে।

‘আমরা বছরের পর বছর আলোচনা করেছি, একটি সম্পূর্ণ ও স্বাক্ষরিত চুক্তিতে পৌঁছেছি, এবং তারপর এই ব্যক্তি (ট্রাম্প) এটি ছিঁড়ে ফেলেছেন,’ খামেনেয়ী ২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তির কথা উল্লেখ করে বলেন। ‘এমন পরিস্থিতিতে কীভাবে আলোচনা করা সম্ভব? যখন আমরা জানি যে তারা তাদের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করবে না, তখন আলোচনার কী মানে থাকে?’

২০১৫ সালের চুক্তির মাধ্যমে ইরানের পরমাণু কর্মকাণ্ড সীমিত করার বিনিময়ে তাদের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যহার করা হয়েছিল। কিন্তু ২০১৮ সালে ট্রাম্প এই চুক্তি থেকে আমেরিকাকে প্রত্যাহার করে নেন এবং ইরানের ওপর নতুন করে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন। এর এক বছর পর, ইরানও চুক্তির শর্তাবলী পালন করা কমিয়ে দেয়।

জানুয়ারিতে হোয়াইট হাউসে ফিরে আসার পর থেকে, ট্রাম্প ইরানের ওপর ‘সর্বোচ্চ চাপ’ প্রয়োগের নীতি পুনঃস্থাপন করে নতুন করে আলোচনার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।

খামেনেয়ী বলেন, অতিরিক্ত দাবি জানানো ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা ‘ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞার ফাঁস আরও শক্ত করবে এবং চাপ বাড়াবে’।

ইরান সবসময়ই পরমাণু অস্ত্র তৈরির অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।

‘আমরা যদি পরমাণু অস্ত্র তৈরি করতে চাইতাম, তাহলে আমেরিকা আমাদের থামাতে পারত না। আমরা নিজেরাই এটা চাই না,’ খামেনেয়ী বলেন।

তবে, আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (আইএইএ) গত মাসে জানিয়েছে যে ইরানের ৬০% সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের মজুত – যা অস্ত্র-গ্রেড স্তরের খুব কাছাকাছি – উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।