১২০ জনের মর্মান্তিক মৃত্যু, দুইজনকে জীবিত উদ্ধার

দক্ষিণ কোরিয়ার মুয়ান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে রবিবার জেজু এয়ারের একটি বিমান অবতরণের সময় দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। এ ঘটনায় ১২০ জনের মৃত্যু হয়েছে। দু'জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে, তারা দু’জনেই বিমানের কর্মী।

ছবি - সংগৃহীত

দক্ষিণ কোরিয়ার জাতীয় অগ্নিনির্বাপণ সংস্থা এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘এখন পর্যন্ত দু'জনকে উদ্ধার করা হয়েছে এবং ১২০ জনের মৃত্যু নিশ্চিত হয়েছে।’ উদ্ধার অভিযান এখনও চলছে।

স্থানীয় এমবিসি সম্প্রচারকারীর শেয়ার করা ভিডিওতে দেখা গেছে, জেজু এয়ারের বিমানটি মুয়ান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের রানওয়েতে অবতরণ করার সময় ইঞ্জিন থেকে ধোঁয়া বের হচ্ছিল। এরপর দ্রুতই সম্পূর্ণ বিমানটি আগুনে ঢেকে যায়।

মুয়ান ফায়ার স্টেশনের প্রধান লি জিওং-হিউন এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, খারাপ আবহাওয়া এবং পাখির আঘাতের কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। তবে, সঠিক কারণ একটি যৌথ তদন্তের পরে ঘোষণা করা হবে।’

স্থানীয় অগ্নিনির্বাপণ বিভাগের একজন কর্মকর্তা লি হিউন-জি, পূর্বেই সতর্ক করেছিলেন যে, ‘গুরুতর আহতদের কারণে মৃতের সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে পারে।’ উদ্ধারকারীরা বিমানের পেছনের অংশ থেকে যাত্রীদের সরিয়ে নিচ্ছিল বলে জানান তিনি।

ফ্লাইট রাডারের তথ্য অনুযায়ী, দুর্ঘটনাকবলিত বিমানটি একটি বোয়িং ৭৩৭-৮এএস। একটি ছবিতে দেখা গেছে, বিমানের লেজের অংশটি রানওয়ের পাশে আগুনে ঢেকে আছে। ঘটনাস্থলে অগ্নিনির্বাপক ও জরুরি যানবাহন উপস্থিত ছিল।

মুয়ান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরটি সিউল থেকে প্রায় ২৮৮ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে মুয়ান কাউন্টিতে অবস্থিত।

অগ্নিনির্বাপণ সংস্থা জানিয়েছে, তারা ৩২টি অগ্নিনির্বাপক ইঞ্জিন এবং অসংখ্য অগ্নিনির্বাপককে ঘটনাস্থলে পাঠিয়েছে।

‘রবিবার সকাল ৯টা ৩ মিনিটে জেজু এয়ারের ২২১৬ নম্বর ফ্লাইটটি অবতরণের সময় এই দুর্ঘটনা ঘটে। বিমানে দুই থাই নাগরিকসহ মোট ১৭৫ জন যাত্রী এবং ছয়জন ক্রু সদস্য ছিলেন,’ মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে।

প্রাথমিকভাবে আগুন নেভানো হয়েছে এবং দুর্ঘটনাস্থলে উদ্ধার অভিযান চলছে বলে সকাল ১১টার দিকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়।

কম খরচে বিমান পরিবহন সেবা প্রদানকারী জেজু এয়ার ক্ষমা প্রার্থনা করেছে এবং আক্রান্তদের সাহায্যের জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

এয়ারলাইনটি তাদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘এই দুর্ঘটনার জন্য আমরা জেজু এয়ার কর্তৃপক্ষ আপনাদের কাছে আন্তরিকভাবে ক্ষমা প্রার্থনা করছি।’

ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি চোই সাং-মোক যাত্রীদের উদ্ধারের জন্য সকল সম্পদ ব্যবহারের আহ্বান জানিয়েছেন।

এই দুর্ঘটনা ২০০৫ সালে প্রতিষ্ঠিত দক্ষিণ কোরিয়ার অন্যতম বৃহৎ কম খরচের বিমান সংস্থা জেজু এয়ারের ইতিহাসে প্রথম মারাত্মক দুর্ঘটনা।