ইউক্রেন-স্লোভাকিয়া টানাপোড়েন: জ্বালানি যুদ্ধে নতুন মোড়

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি অভিযোগ করেছেন, রাশিয়ার ইন্ধনে স্লোভাকিয়ার প্রধানমন্ত্রী রবার্ট ফিকো ইউক্রেনের বিরুদ্ধে একটি ‘দ্বিতীয় জ্বালানি ফ্রন্ট’ খুলেছেন। মস্কোর নির্দেশেই ফিকো এই পদক্ষেপ নিয়েছেন বলেও দাবি করেছেন জেলেনস্কি। এ ঘটনায় ইউক্রেনের মধ্য দিয়ে ইউরোপে রাশিয়ার প্রাকৃতিক গ্যাস সরবরাহ নিয়ে উত্তেজনা আরও বেড়েছে।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি

বর্তমানে ইউক্রেনের মধ্য দিয়ে স্লোভাকিয়া, মলদোভা, হাঙ্গেরিসহ বেশ কয়েকটি ইউরোপীয় দেশে রাশিয়ার প্রাকৃতিক গ্যাস সরবরাহ করা হয়। ২০২২ সালে রাশিয়ার ইউক্রেন আক্রমণের আগে সই করা চুক্তির মেয়াদ শেষ হলে এই সরবরাহ বন্ধ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

সম্প্রতি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন ফিকো। এরপর গত শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) তিনি ইঙ্গিত দেন, নতুন বছরের ১ জানুয়ারি থেকে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ হলে ইউক্রেনে জরুরি বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দিতে পারে স্লোভাকিয়া।

জেলেনস্কি শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লেখেন, রাশিয়ার কৌশলে ফিকো ইউক্রেনের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় জ্বালানি ফ্রন্ট খুলেছেন। শীতকালে ইউক্রেনের জরুরি বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করার হুমকি রাশিয়ার কৌশলেরই অংশ। ইউক্রেনীয়দের দুর্ভোগ বাড়াতেই এ পরিকল্পনা।

স্লোভাকিয়া কৌশলগত কারণে ইউক্রেনের মাধ্যমে রাশিয়ান গ্যাস সরবরাহ বজায় রাখতে চায়। বিকল্প পথ ব্যবহার ব্যয়বহুল ও পরিবহন কার্যক্রম ব্যাহত করবে। এতে দেশটি প্রায় ৫০০ মিলিয়ন ইউরো (৫২১ মিলিয়ন ডলার) ট্রানজিট ফি হারাবে। কিন্তু যুদ্ধ চলাকালে গ্যাস পরিবহনে রাশিয়ার সঙ্গে নতুন চুক্তি করবে না ইউক্রেন।

২০২২ সালের শেষে রাশিয়া ইউক্রেনের বিদ্যুৎকেন্দ্রে হামলা চালালে কিয়েভ প্রতিবেশী দেশগুলো থেকে বিদ্যুৎ আমদানি করতে বাধ্য হয়। বর্তমানে ইউক্রেনের বিদ্যুৎ আমদানির ১৯ শতাংশ আসে স্লোভাকিয়া থেকে। জেলেনস্কি ইউরোপের একক জ্বালানি বাজারের নিয়ম মেনে চলার আহ্বান জানিয়ে স্লোভাকিয়াকে দায়িত্বশীল আচরণের অনুরোধ করেছেন।

২০২৩ সালে ইউরোপীয় ইউনিয়নের গ্যাস আমদানিতে রাশিয়ার গ্যাসের পরিমাণ ছিল ১০ শতাংশেরও কম। ২০২১ সালে এই হার ছিল ৪০ শতাংশের বেশি। বেশ কিছু দেশ রাশিয়ার গ্যাস ব্যবহার বন্ধ করলেও পূর্ব ইউরোপের ইইউ সদস্যরা এখনও রাশিয়ার গ্যাসের ওপর নির্ভরশীল।