রুশ কর্তৃপক্ষ: ইউক্রেনীয় ড্রোন হামলার কারণেই আজারবাইজানি বিমান বিধ্বস্ত

রুশ বিমান কর্তৃপক্ষের প্রধান দিমিত্রি ইয়াদ্রভ দাবি করেছেন, ইউক্রেনীয় ড্রোন হামলার কারণেই গ্রোজনিতে অবতরণের সময় আজারবাইজানি বিমানটির গন্তব্য পরিবর্তন করতে হয়েছিল এবং পরবর্তীতে কাজাখস্তানে বিধ্বস্ত হয়েছে। এই সপ্তাহের শুরুতে যে রুশ অঞ্চলে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে সেখানে ড্রোন হামলা চলছিল বলে তিনি জানিয়েছেন।

ছবি - সংগৃহীত

আজারবাইজান এয়ারলাইন্সের বিমানটি বাকু থেকে চেচনিয়ার রাজধানী গ্রোজনি যাচ্ছিল। গ্রোজনি বিমানবন্দরের আকাশসীমা বন্ধ থাকায় পাইলট কাজাখস্তানের আকতাউ বিমানবন্দরে অবতরণের চেষ্টা করেন। দুবার ব্যর্থ চেষ্টার পর বিমানটি বিধ্বস্ত হয়। এতে ৩৮ জন নিহত এবং ২৯ জন আহত হয়েছেন।

জীবিত যাত্রীরা জানিয়েছেন, গ্রোজনির ওপর দিয়ে উড়ে যাওয়ার সময় বিমানে তীব্র শব্দ শোনা গিয়েছিল। ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্ট আয়দান রহিমলি বলেন, ‘একটি তীব্র শব্দের পর অক্সিজেন মাস্ক আপনাআপনি বেরিয়ে আসে।’ আরেকজন ক্রু সদস্য জুলফুগার আসাদভ বলেন, শব্দটি বিমানের বাইরে থেকে এসেছিল বলে মনে হয়েছে। আজারবাইজানের ডিজিটাল উন্নয়ন ও পরিবহন মন্ত্রী রাশাদ নবিয়েভ জানিয়েছেন, গ্রোজনির ওপর দিয়ে উড়ে যাওয়ার সময় বিমানটি বহিরাগত আঘাত পেয়েছিল।

ইয়াদ্রভ বলেন, গ্রোজনিতে অবতরণের চেষ্টার সময় বিমানটি ঘন কুয়াশার মুখোমুখি হয়েছিল। সেই সময় ইউক্রেনীয় ড্রোন সেখানে হামলা করছিল এবং বিমানবন্দরের আকাশসীমা বন্ধ ছিল। দুবার অবতরণের চেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার পর কাজাখস্তানের আকতাউ বিমানবন্দরে বিমানটি পরিচালনা করার সিদ্ধান্ত নেন পাইলট। তিনি আরও বলেন, ‘গ্রোজনি বিমানবন্দরের পরিস্থিতি বেশ জটিল ছিল।’

তবে আজারবাইজানি আইনপ্রণেতা রাসিম মুসাবেকভ এবং কিছু বিমান বিশেষজ্ঞ মনে করছেন, রুশ বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার গুলিতেই বিমানটি বিধ্বস্ত হয়েছে। মুসাবেকভ দাবি করেছেন, গ্রোজনির ওপর দিয়ে উড়ে যাওয়ার সময় রুশ বাহিনীর গুলিতে বিমানটি বিধ্বস্ত হয় এবং রাশিয়া থেকে ক্ষমা প্রার্থনা দাবি করেছেন। বিমানের লেজে ক্ষতির চিহ্ন দেখে বিশেষজ্ঞরাও একই ধারণা পোষণ করছেন। যদিও ইয়াদ্রভ এই দাবির বিষয়ে কোন মন্তব্য করেননি। ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভও কোন মন্তব্য করতে অস্বীকার করে বলেছেন, ‘বিমান দুর্ঘটনার তদন্ত চলছে।’

অন্যদিকে, আজারবাইজান এয়ারলাইন্স ‘প্রযুক্তিগত ত্রুটির’ কথা বলে বিমান দুর্ঘটনার জন্য দায়ী করেছে এবং বিস্তারিত কিছু না জানিয়ে কয়েকটি রুশ বিমানবন্দরে তাদের বিমান চলাচল স্থগিত করেছে। আজারবাইজান থেকে তদন্তকারীরা গ্রোজনিতে তদন্ত কাজে যোগ দিয়েছেন। আজারবাইজান এয়ারলাইন্স এবং অন্যান্য বিমান সংস্থা, যেমন ফ্লাইদুবাই এবং এল আল, রুশ শহরগুলোতে তাদের বিমান চলাচল স্থগিত বা পরিবর্তন করেছে আকাশপথের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগের কারণে।