শেষ বলের রোমাঞ্চে জিতল স্কটল্যান্ড, আমিরাতকে হারিয়েছে ওমান

শুরুর ব্যর্থতা কাটিয়ে উঠেছিল আয়ারল্যান্ড। ৭০ রানের ৫ উইকেট হারানো দলটি শেষ পর্যন্ত বড় সংগ্রহই গড়েছিল। কিন্তু বোলারদের ব্যর্থতায় ভেস্তে গেছে জয়ের স্বপ্ন। চরম উত্তেজনা ছড়ানো ম্যাচে শেষ বলের লড়াইয়ে জিতেছে স্কটল্যান্ড। দিনের অন্য ম্যাচে সংযুক্ত আরব আমিরাতকে হারিয়েছে ওমান।

শেষ বলের রোমাঞ্চে জিতল স্কটল্যান্ড

বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের সপ্তম ম্যাচে টস জেতে স্কটল্যান্ড। জিম্বাবুয়ের বুলাওয়েতে আগে ব্যাট করে নির্ধারিত ৫০ ওভার শেষে ৮ উইকেট হারিয়ে স্কোরবোর্ডে ২৮৬ রান তোলে আয়ারল্যান্ড। জবাবে শেষ বলে জয়ের বন্দরে পৌঁছায় স্কটিসরা। নায়কোচিত ইনিংসের সুবাদে ম্যাচ সেরা হয়েছেন ৩২ বছর বয়সী মিচেল লিসক।

শুরুতে স্কটল্যান্ডের বোলারদের তোপের মুখে পড়ে আয়ারল্যান্ড। একশ রানের আগে পাঁচ উইকেট হারানো দলটিকে উদ্ধার করেন ছয়ে নামা কার্টিস ক্যামফের। ২৪ বছর বয়সী অলরাউন্ডারের অনবদ্য শতকের ওপর ভর করে লড়াই করার মতো পুঁজি দাঁড় করায় আইরিশরা।

ক্যামফেরকে যোগ্য সঙ্গ দেন জর্জ ডকরেল। বাহাতি স্পিনিং অলরাউন্ডারের সঙ্গে ১৩৬ রানের জুটি গড়েন ক্যামফের। অষ্টম ব্যাটার হিসেবে আউট হওয়ার আগে ক্যামফের করেন ১০৮ বলে ১২০ রান। ৯৩ বলে ৬৯ রান করেন ডকরেল। স্কটিশদের হয়ে পাঁচ উইকেট নিয়েছেন ব্রেন্ডন ম্যাকমুলান।

রান তাড়া করতে নেমে শুরু থেকেই উইকেট হারায় স্কটল্যান্ড। ওপেনার ক্রিস্টোফার ম্যাকব্রাইড ৬০ বলে ৫৬ রান করেন। পরের পাঁচ ব্যাটার বলার মতো কোনো রান করতে পারেননি। সাতে নামা মিচেল লিসক প্রতিরোধ গড়েন। ক্রিস গ্রেভসের সঙ্গে প্রথমে গড়েন ৩০ রানের জুটি। ১৫২ রানে ৭ উইকেট হারায় দলটি। এরপর নয়ে নামা মার্ক ওয়াটের সঙ্গে লিসকের জুটিতে ম্যাচে ফেরে রিচি বেরিংটনের দল।

দলীয় ২৩৪ রানের মাথায় ৪৩ বলে ৪৭ রান করে ওয়াট ফিরে গেলে আবার শঙ্কায় পড়ে স্কটল্যান্ড। জয় থেকে তখনও ৫৩ রান দূরে, হাতে আছে ৩০ বল। অপর প্রান্তে স্বীকৃত সব ব্যাটার আউট হয়ে গেলে দায়িত্বটা নিজের কাঁধেই নিয়ে নেন লিসক। জশ লিটলের করা ৪৭তম ওভার থেকে দুই ছক্কা আর দুই বাউন্ডারিতে নেন ২২ রান।

জিততে হলে স্কটল্যান্ডের দরকার তখন ১৮ বলে ২২ রান। খুব একটা কঠিন সমীকরণ হয়ত না, কিন্তু দুই উইকেট হাতে নিয়ে আবার কঠিনও বটে। শেষ ওভারে জয়ের সমীকরণ নেমে আসে ৮ রানে। প্রথম বলে আইরিশ ফিল্ডারের বাজে ফিল্ডিংয়ে বাউন্ডারি পান লিসক। পরের বলে নেন এক রান। কিন্তু তৃতীয় বলে শায়ান শরীফকে আউট করে ম্যাচে ফেরে আয়ারল্যান্ড। চতুর্থ বলটা ডট হলে হারের শঙ্কায় পড়ে স্কটল্যান্ড। পঞ্চম বলটি ব্যাটে না লাগাতে পারলেও দৌড়ে স্ট্রাইক নিয়ে নেন লিসক। শেষে বলে জিততে হলে করতে হবে দুই রান। ব্যাটের কানায় লেগে উইকেটরক্ষকের পাশ দিয়ে বাউন্ডারি হয়ে গেলে উল্লাসে মাতে স্কটল্যান্ড। ৬১ বলে ৯১ রান করে প্রায় একাই আয়ারল্যান্ডকে হারিয়ে দেন লিসক। ইনিংসে চারটি ছক্কার সঙ্গে বাউন্ডারি ছিল ৯টি।

দিনের অন্য ম্যাচে সংযুক্ত আরব আমিরাতকে সহজেই হারিয়েছে ওমান। টসে হেরে ব্যাটিয়ে নেমে ৮ উইকেটে ২২৭ রান করে আমিরাত। জবাবে ২৪ বল এবং ৫ উইকেট হাতে রেখে ম্যাচ জিতে নেয় ওমান। ম্যাচ সেরার পুরস্কার জিতেছেন শোয়েব খান।

আমিরাতের প্রথম সাতজন ব্যাটারের মধ্যে কেবল দুজন ব্যক্তিগত রানটাকে দুই অংকের কোটায় নিতে পেরেছেন। আটে নামা আয়ান আফজাল খানের অপরাজিত ৫৮ রানের ওপর ভর করে মোটামুটি সংগ্রহ পায় মোহাম্মদ ওয়াসিমের দল। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ অরবিন্দ করেন ৪৯ রান। এছাড়া রমিজ শাহজাদের ব্যাট থেকে আসে ৩৮ রান।

রান তাড়া করতে নেমে তিন ফিফটিতে সহজ জয় তুলে নেয় ওমান। সর্বোচ্চ আকিব ইলিয়াস করেন ৫৩ রান। তার থেকে এক রান কম করে অপরাজিত থাকেন শোয়েব খান। এছাড়া মোহাম্মদ নাঈম করেন ৫০ রান।

এ নিয়ে টানা দুই ম্যাচে দুটি জয় পেল ওমান। চার পয়েন্ট নিয়ে বি গ্রুপের পয়েন্ট তালিকার সবার ওপরে আছে দলটি। দুই ম্যাচে দুটিতেই হেরে সবার নীচে অবস্থান করছে আমিরাত। এক ম্যাচে ২ পয়েন্ট নিয়ে তালিকার দুইয়ে আছে শ্রীলঙ্কা। নিজেদের প্রথম ম্যাচ জিতে দুই পয়েন্ট পেলেও নেট রান রেট ব্যবধানে শ্রীলঙ্কার পরে আছে স্কটিশরা। দুই ম্যাচ খেললেও এখনও কোনো পয়েন্ট সংগ্রহ করতে পারেনি আয়ারল্যান্ড।