স্মিথের পর মুশফিক...

আজ বুধবার ওয়ানডে সংস্করণ থেকে অবসরের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক স্টিভেন স্মিথ। কয়েক ঘণ্টা পর তার পদাঙ্ক অনুকরণ করলেন মুশফিকুর রহিম। একদিনের ক্রিকেট থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন ৩৭ বছর বয়সী কিংবদন্তি উইকেটরক্ষক-ব্যাটার।

প্রবল সমালোচনার মধ্যেই ওয়ানডে সংস্করণ থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন মুশফিকুর রহিম। ছবি: ফাইল

এবারের চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে ভরাডুবি হয়েছে টাইগারদের। তিন ম্যাচের সবকটিতেই হেরেছে দল। এই ব্যর্থতার পর দলের বেশ কয়েকজন ক্রিকেটারকে নিয়ে সমালোচনা হয়েছে। মুশফিক ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে নিয়ে একটু বেশিই চর্চা হচ্ছিল। আলোচনার বিষয়বস্তু তাদের ভবিষ্যত।

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) একাধিক পরিচালক অবসর প্রসঙ্গে বল মুশফিক-মাহমুদউল্লাহর কোর্টে ছুড়ে দিয়েছিলেন। সেটিরই প্রতিক্রিয়ায় অবসরের সিদ্ধান্ত এলো মুশির। আজ রাতে ফেসবুকে অবসরের ঘোষণা দেন এই তারকা। মাহমুদউল্লাহ কী করেন সেটিই এখন দেখার।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্টে মুশফিকর লিখেছেন, ‘আজ থেকে ওয়ানডে সংস্করণ থেকে আমি অবসরের ঘোষণা দিচ্ছি। সবকিছুর জন্য আলহামদুলিল্লাহ। বৈশ্বিক পর্যায়ে আমার অর্জন হয়তো সীমিত। তবে যতবার দেশের জন্য মাঠে নেমেছি, নিবেদন ও সততার সঙ্গে শতভাগের চেয়ে বেশি দিয়েছি।’

সীমিত ওভারের ক্রিকেটের আরেক সংস্করণ টি-টোয়েন্টি থেকে মুশফিক অবসর নেন ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে। সেটিও ফেসবুকে ঘোষণা দিয়ে। মুশির বিদায়ে শেষ হলো বাংলাদেশ ক্রিকেটের একটি অধ্যায়। যা আনন্দ, বেদনা, গৌরব ও অর্জনের মিশ্রণ। বেশ কিছু হতাশাও আছে।

দীর্ঘ ক্যারিয়ারের বৈশ্বিক কোনো ট্রফি দূরের কথা, এশিয়া কাপের শিরোপাও জেতা হয়নি মুশফিকের। অবশ্য বাংলাদেশের কোনো ক্রিকেটারের এই অর্জনের সৌভাগ্য হয়নি। তাই দুর্ভাগ্য নিয়েই সরে যেতে হলো মুশিকে। এবারের চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে তিন ম্যাচ মিলিয়ে তিনি করেন স্রেফ নয় রান!

খুব স্বাভাবিকভাবেই তীব্র সমালোচনা হয়েছে মুশফিককে নিয়ে। অথচ অভিজ্ঞতার কারণে তার প্রতি ছিল প্রত্যাশা। যেটির ধারেকাছেও যেতে পারেননি মুশি। সেটি তিনি নিজেও মানছেন। অবসর ঘোষণায় মুশি বলেছেন, ‘গত কয়েক সপ্তাহ আমার জন্য খুব চ্যালেঞ্জিং ছিল। বুঝতে পারছি যে এটাই আমার নিয়তি।’

মুশফিক আরও লিখেছেন, ‘আমি আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানাই আমার পরিবার, বন্ধু-বান্ধব ও ভক্তদের। তাদের জন্য গত ১৯ বছর ধরে আমি ক্রিকেট খেলছি।’ ক্যারিয়ারের শেষের বাজে সময়টার জন্য মুশির হয়তো আক্ষেপ আছে। কিন্তু বাংলাদেশ ক্রিকেটের পরিবর্তনের নায়কদের একজন ছিলেন তিনি।

বাংলাদেশ ক্রিকেটের উত্থানে পঞ্চপাণ্ডবের ভূমিকা অনেক। যাদের চারজনেরই বাংলাদেশের ওয়ানডে অধ্যায় শেষ হয়ে গেল। সবচেয়ে হতাশার দিকটি হচ্ছে, মাঠ থেকে বিদায় নিতে পারেননি কেউ। হয়তো সেই সুযোগটা মাহমুদউল্লাহও পাচ্ছেন না। রোষাণলে পড়েছে এই অলরাউন্ডারের ভবিষ্যতও!

বাংলাদেশ দলের হয়ে সবচেয়ে বেশি ২৭৪টি ওয়ানডে খেলার রেকর্ড মুশফিকের দখলে। দীর্ঘ এই যাত্রায় নয়টি সেঞ্চুরি ও ৪৯টি ফিফটিতে তার রান ৭৭৯৫। মুশির ক্যারিয়ার সেরা ইনিংসটি ১৪৪ রানের; যা খেলেন ২০১৮ সালে এশিয়া কাপে। দেশের ক্রিকেটারদের মধ্যে ওয়ানডেতে মুশির চেয়ে বেশি রান আছে কেবল তামিম ইকবালের (৮৩৫৭)।