মিরপুরে বাংলাদেশের দাপুটে দিন

প্রায় ২৭ মাস পর আজ মিরপুরে বাংলাদেশের বিপক্ষে টেস্ট খেলতে নামে আফগানিস্তান। দীর্ঘ বিরতির পর লঙ্গার ভার্সনে তাদের প্রথম দিনটা সুখকর হয়নি। রশিদ খানবিহীন আফগানিস্তানের অনভিজ্ঞ বোলিং আক্রমণকে উড়িয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ। সিরিজের একমাত্র টেস্ট দাপুটে এক দিন পার করল লিটন দাসের দল।

ব্যাট হাতে আফগানিস্তানের বোলারদের শাসন করেছে বাংলাদেশ

মিরপুর শের-ই-বাংলা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে পাঁচ উইকেট হারিয়ে ৩৬২ রান তুলেছে বাংলাদেশ। খেলা হয়েছে ৭৯ ওভার। দিনশেষে মেহেদি হাসান মিরাজ ৪৩ ও অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিম ৪১ রান করে অপরাজিত আছেন।

সবুজ উইকেটের ফায়দা তুলতে টস জিতে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন আফগান অধিনায়ক হাসমতউল্লাহ শহিদি। টসের পর লিটনও অবশ্য বলেছেন তিনিও বোলিংই নিতেন। অধিনায়কের সিদ্ধান্তকে সঠিক প্রমাণ করতে শুরুতেই উইকেট নেন নিজাত মাসুদ। অভিষিক্ত এই বোলার নিজের প্রথম বলেই তুলে নেন জাকির হাসানকে। দলীয় ছয় রানের প্রথম উইকেট হারায় বাংলাদেশ।

প্রথম ধাক্কার পর দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ায় বাংলাদেশ। আরেক ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয়কে সঙ্গে নিয়ে ২১২ রানের জুটি গড়েন তিনে নামা নাজমুল হোসেন শান্ত। মধ্যাহ্ন বিরতির আগেই ফিফটি তুলে নেন ফর্মের তুঙ্গে থাকা শান্ত। বিরতির আগে দলীয় শতরান পূর্ণ করে বাংলাদেশ।

প্রায় ওয়ানডে মেজাজে ব্যাট করা বাংলাদেশ এটা ধরে রাখে ইনিংসের শেষ অবদি। লাঞ্চ বিরতি থেকে ফিরে এসে আরও চাঙ্গা হয়ে ওঠেন শান্ত ও জয়। এ সময় শান্ত তুলে নেন ক্যারিয়ারের ‍তৃতীয় শতক। তার শতকের পর প্রায় তিনশ ছুঁই-ছুঁই স্কোর নিয়ে চা বিরতিতে যায় বাংলাদেশ। বিরতির একটু আগে অবশ্য ব্যক্তিগত ৭৬ রানে নিজের উইকেট হারান জয়।

বিরতি থেকে ফিরে মুমিনুল হককে সঙ্গে নিয়ে আবার জুটি গড়েন শান্ত। তবে এই জুটি ৩৮ রানের বেশি আগায়নি। অফ-ফর্মে থাকা মুমিনুল ফিরেছেন ব্যক্তিগত ১৫ রান করে। সাবেক অধিনায়কের ফেরার সঙ্গে সঙ্গে বিপদ ভর করে বাংলাদেশ শিবিরে। এ সময় ৩৪ রানের মধ্যে তিন উইকেট হারায় স্বাগতিকরা। নাজমুল আউট হন ১৪৬ রান করে।

লম্বা সময় ব্যাট করে কিছু সময়ের জন্য হয়ত মনযোগ হারিয়েছিলেন বাঁহাতি এই ব্যাটার। যেভাবে খেলছিলেন মনে হচ্ছিল ক্যারিয়ারের প্রথম দ্বিশতকের দেখা পাবেন। সেক্ষেত্রে ভাগ্য আজ তার পক্ষে ছিল। নো বলে আউট হয়ে একবার জীবন পেয়েছেন শান্ত। সেটাকে অবশ্য কাজে লাগাতে পারেননি। আমির হামজার বলটাকে লং অনে তুলে মারতে গিয়ে ধরা পড়েন নাসির জামালের হাতে। দারুণ ইনিংসটির সমাপ্তি ঘটে সেখানেই।

এরপর আর কোনো বিপদ ঘটেনি। মুশফিক আর মিরাজ মিলে দিন পার করে দেন অনায়েসে। ৭২ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি তাদের। দুজনেই ব্যাট করেছেন ৬০ এর মতো স্ট্রাইকরেটে। দিনশেষে বাংলাদেশ রানও তুলেছেন ওভার প্রতি ৪.৫৮ ইকোনোমি রেটে।