প্রধান বিচারপতির ক্ষমতা কমাতে চান শাহবাজ শরিফ

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ বলেছেন, প্রধান বিচারপতির ক্ষমতা খর্ব করার জন্য আইন তৈরি করা না হলে, ইতিহাস আমাদের ক্ষমা করবে না। সে আইন তৈরির লক্ষ্যে পাকিস্তান পার্লামেন্টে সুপ্রিম কোর্ট (প্র্যাকটিস অ্যান্ড প্রসিডিউর) বিল, ২০২৩ উত্থাপন করা হয়েছে। খবর এনডিটিভি।

শাহবাজ শরিফ

গতকাল মঙ্গলবার পার্লামেন্টের যৌথ অধিবেশনে ভাষণ দেওয়ার সময় দেশের শীর্ষ বিচারকের ক্ষমতার পরিধি নিয়ে মন্তব্য করেন শাহবাজ শরিফ। তিনি এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি মনসুর আলি শাহ এবং বিচারপতি জামাল খান মান্দোখাইলের ভিন্নমতের রায় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেন। প্রধান বিচারপতির ক্ষমতা সীমিত করার জন্য নতুন আইনের প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে বলতে গিয়ে শাহবাজ শরিফ একপর্যায়ে বলেন, আইনটি পাস না হলে ইতিহাস আমাদের ক্ষমা করবে না।

ওই দুই বিচারপতি দাবি ছিল, শীর্ষ আদালত কখনও এক ব্যক্তি তথা প্রধান বিচারপতির একক সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভরশীল হতে পারে না। পাকিস্তানের সংবিধানের ১৯১ ধারা উল্লেখ করে তারা বলেন, সমস্ত বিচারপতির সম্মতিতে তৈরি আইননির্ভর বিচারব্যবস্থার দ্বারাই সুপ্রিম কোর্ট পরিচালনা করতে হবে। ওই দুই বিচারক প্রধান বিচারপতির সীমাহীন কর্তৃত্বের ভিত্তিতে বিভিন্ন বিষয়ে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে ব্যবস্থা নেওয়া, বিভিন্ন মামলার শুনানির জন্য পছন্দের বেঞ্চ গঠন করাসহ নানা বিষয়ের সমালোচনা করেন।

পাকিস্তানের প্রধান বিচারপতি উমর আতা বান্দিয়াল

এ বিষয়ে শাহবাজ শরিফের মন্তব্য জানার পরপরই পাকিস্তানের আইনমন্ত্রী আজম নাজির পার্লামেন্টে সুপ্রিম কোর্ট (অনুশীলন ও পদ্ধতি) বিল, ২০২৩ পেশ করেন। এই বিলে বলা হয়েছে, সংবিধানের ১৮৪ (৩) ধারার অধীনে যে কোনো স্বতঃপ্রণোদিত মামলার বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের সবচেয়ে সিনিয়র তিন বিচারকের একটি কমিটি সিদ্ধান্ত নেবে।

মূলত গত ২২ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানের প্রধান বিচারপতি উমর আতা বান্দিয়াল দেশের পাঞ্জাব প্রদেশ ও খাইবার পাখতুনখাওয়ায় নির্বাচন নিয়ে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করেন। এরপর থেকেই পরিস্থিতি ধীরে ধীরে জটিল হতে থাকে।

উল্লেখ্য, সংবিধানের ১৮৪ অনুচ্ছেদের অধীনে স্বতঃপ্রণোদিত ক্ষমতা ব্যবহার করে থাকেন পাকিস্তানের প্রধান বিচারপতিরা। বছরের পর বছর ধরে প্রধান বিচারপতিরা এই ক্ষমতার অপব্যবহার করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। তবে এই প্রথম কোনো বিচারপতিকে সরাসরি এ বিষয়ে কথা বলতে দেখা গেল।