প্রিয়জনদের মরদেহ ফেরত চেয়েছেন ফিলিস্তিনি মায়েরা

এবারের মা দিবসে ফিলিস্তিনি নারীরা ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের কাছে তাদের প্রিয়জনদের মরদেহ ফেরত দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। ২১ মার্চ মা দিবস উপলক্ষে রামাল্লায় একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন ফিলিস্তিনের কয়েকজন নারী। সে সময় তারা ফিলিস্তিনি বন্দিদের মরদেহ আটকে রাখার ইসরায়েলের নিষ্ঠুর নীতি তুলে ধরেছেন। খবর দ্য নিউ আরব।

ইসরায়েলের কাছে প্রিয়জনদের মরদেহ ফেরত দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন ফিলিস্তিনি মায়েরা

আদলাহ ঘাত্তাস নামে শোকাহত এক ফিলিস্তিনি মা জানিয়েছেন, তার ছেলে ফাদি এর মরদেহ কোথায় আছে সে বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না। তবে গত বছর ইসরায়েলি মিডিয়ার খবরে বলা হয়েছিল, আল-খলিলের কাছে ছুরিকাঘাতে হামলা চালানোর চেষ্টা করলে তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়।

হতাশ এই মা লন্ডনভিত্তিক নিউজ ওয়েবসাইট দ্য নিউ আরবকে বলেন, ‘এই ঘটনার পর ২০০ দিন পার হয়ে গিয়েছে।'

৪৭ বছর বয়সী ফিলিস্তিনি এই শরণার্থী মা বলেন, ‘আমার মন বিশ্বাস করতে পারছে না যে আমার ছেলে শহীদ হয়েছে। আমি এখনও তার লাশ দেখার অপেক্ষায় আছি। আমি নিজের চোখে দেখতে চাই যে সে সত্যিই শহীদ হয়েছে।'

বেথলেহেমের দক্ষিণে দেহেইশেহ শরণার্থী শিবিরে বাস করেন আদলাহ। তিনি উল্লেখ করেন, ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ এখনও তার ছেলের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে সরকারি নথি উপস্থাপন করতে পারেনি।

আদলাহ বলেন, ‘এমনকি সে জীবিতও থাকতে পারে। হয়তো আহত অবস্থায় কোনো হাসপাতালে পড়ে রয়েছে।' অসহায় এই মা এভাবেই তার এবং তার পরিবারের প্রতিদিনের এই অনিশ্চয়তার অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন দ্য নিউ আরবের প্রতিনিধির কাছে।

হুসেইন শুজাইয়াহ, ফিলিস্তিনি শহীদদের মরদেহ পুনরুদ্ধার ক্যাম্পেইনের সমন্বয়কারী। তিনি জানিয়েছেন, ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে নিহত ফিলিস্তিনিদের মরদেহ এখন তাদের আত্মীয়স্বজনদেরও দেখতে দিচ্ছে না ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ। ২০১৮ সাল থেকে এই নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। ইসরায়েলের এই নীতি এ অঞ্চলে উত্তেজনা বাড়িয়ে দিয়েছে।

তিনি বলেন, ‘ফিলিস্তিনি শহীদদের মরদেহ পুনরুদ্ধার করার এই প্রচারণা ২০০৭ সাল থেকে শুরু হয়েছে। এ পর্যন্ত ১২১ জন শহীদের মরদেহ ফেরত দিতে বাধ্য হয়েছে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ।'

মানবাধিকার এই কর্মী জানিয়েছেন, ইসরায়েল ২৫৬ জন ফিলিস্তিনি শহীদকে এমন একটি কবরস্থানে কবর দিয়েছে যেখানে তাদের নামের উল্লেখ করা হয়নি। এর পরিবর্তে সংখ্যা দিয়ে কবরগুলো চিহ্নিত করা হয়েছে। এছাড়া মর্গে ১৩৩ ফিলিস্তিনির মরদেহ ফেলে রাখা হয়েছে।

উল্লেখ্য, ইসরায়েলি বাহিনী কিংবা ইহুদী বসতি স্থাপনকারীদের হাতে নিহত ফিলিস্তিনিদের মরদেহ আটকে রাখার নীতি ২০১৫ সাল থেকে আবার শুরু করেছে ইসরায়েল।