ফেরার লড়াই শুরু, মিরপুরে আশরাফুলের অনুশীলন

সাড়ে তিন বছরেরও বেশি সময় পর মিরপুরে ব্যাট হাতে দেখা গেলো মোহাম্মদ আশরাফুলকে। নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে আবার ফেরার লড়াই শুরু হলো সাবেক টেস্ট অধিনায়কের। ফিক্সিংয়ের কালো অন্ধকার পিছনে ফেলে নতুন আলোর সন্ধানে আশরাফুলকে দেখা গেলো ব্যাকুল।

চলতি সপ্তাহের শুরুর দিকে মিরপুরের অনুশীলন সুবিধা পেয়ে বোর্ডের কাছে আবেদন করেছিলেন আশরাফুল। তার আবেদনে সাড়া দিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। এর মাধ্যমেই ফেরার লড়াইয়ে আশরাফুলকে সহায়তা শুরু করলো বোর্ড। ফেরার জন্য এটাই চেয়েছিলেন সবচেয়ে কম বয়সে টেস্ট সেঞ্চুরি করা ব্যাটসম্যান।

অনুশীলনে আশরাফুলকে দেখা গেলো রান ক্ষুধায় কাতর এক ব্যাটসম্যান হিসেবে। নেটে বোলিং মেশিনের সামনে নিবিড় মনোযোগে তিনি ব্যস্ত থাকলেন দীর্ঘ সময়। নানা ধরনের শটে তাকে দেখা গেলো সাবলিল। মনেই হলো না, জীবনের সবচেয়ে বড় যন্ত্রণা কাটিয়ে মাত্রই ফিরেছেন।

এ প্রসঙ্গে সংবাদ মাধ্যমের অশেষ কৌতুহলও মেটালেন তিনি। আশরাফুল বললেন, ‘গত তিন বছর এখানকার সুবিধা পাইনি। তবে আমি কিন্তু অনুশীলনের মধ্যেই ছিলাম। আমার স্যার ওয়াহিদুল গনি এবং সারোয়ার ইমরান আমাকে অনেক সহয়তা করেছেন। বিভিন্ন নির্দেশনা দিয়েছেন। আমি চেষ্টা করেছি তা অনুসরণ করে নিজেকে ফিট রাখতে।’

আশরাফুল ফিট থাকার সুযোগ পেয়েছিলেন বিভিন্ন অনানুষ্ঠানিক ক্রিকেট লিগ খেলেও। বাংলাদেশেই বিভিন্ন জেলায় সুযোগ পেলে খ্যাপে খেলেছেন তিনি। দেশের বাইরেও যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যেও খেলেছেন ‘হলি ডে’ ক্রিকেট। ফলে ব্যাট তার হাত থেকে দূরে ছিলো কমই।

মিরপুরে অনুশীলনের সুযোগ পাওয়া এবং ফেরার নতুন পথ পেয়ে আশরাফুল নিজেকে ভাগ্যবান মনে করছেন। তার মতে এটা তার ‘দ্বিতীয় জীবন’। এই জীবনে আশরাফুল চান মানুষ এবং ক্রিকেটার হিসেবে আরো পরিণত এবং ভালো হয়ে উঠতে।

খুব ছোটবেলায় আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলা শুরু করা আশরাফুল চান বাকি জীবনটাও ক্রিকেটের সঙ্গেই কাটিয়ে দিতে। সবার আগে চান, আবার ব্যাটসম্যান হিসেবে নিজের কার্যকারিতা প্রমাণ করতে।

আশরাফুল বলেন, ‘সাড়ে তিন বছর এখানে অনুশীলন করতে পারিনি। খুব খারাপ লেগেছে। আজ আবার এখানে আসতে পেরে ভালো লাগছে। আশা করছি এখানে অনুশীলন করে ফিট হয়ে উঠতে পারবো এবং আবার ভালো ভালো ইনিংস খেলার জন্য প্রস্তুত হয়ে উঠবো।’

নিষেধাজ্ঞা কেটে গেলেও আবার জাতীয় দলে আশরাফুলকে দেখা যাবে কিনা, সেটা এখনই নিশ্চিত নয়। অন্তত দুই বছর জাতীয় দলে তাকে দেখা যাওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। ঘরোয়া ক্রিকেটে পারফর্ম করলে হয়তো সুযোগ আসতে পারে। কিন্তু সেটাও দুই বছর পর।

আশরাফুল তাই জাতীয় দল নিয়ে নয়, তিনি বরং চিন্তা করছেন ঘরোয়া ক্রিকেটে নিজের দক্ষতা প্রমাণ করে আলোচনায় থাকতে। তারপর জাতীয় দলে ফেরার ‘হার্ড ওয়ার্ক’টাও করতে প্রস্তুত তিনি। আশরাফুল বলেন, ’১৬ বছর ক্রিকেট খেলেছি। গত তিনটা বছর জীবনের সবচেয়ে কঠিন সময় ছিলো। তারপরও পরিবার-পরিজন, বন্ধু- বান্ধব এবং সমর্থকরা আমাকে সব সময় সাহস যুগিয়েছেন। তাদের জন্য হলেও দেশকে কিছু দিতে চাই। এর জন্য যতো হার্ড ওয়ার্ক করা দরকার, আমি করবো।’

আপনি আরো পড়তে পারেন

মিরপুরে ইংল্যান্ডের প্রতিনিধি দল

অসিদের হোয়াইটওয়াশ করেই ছাড়লো শ্রীলঙ্কা

শিগগিরই মিরপুরে অনুশীলন শুরু করবেন আশরাফুল

‘ইংল্যান্ড না এলে ক্ষতি হবে বাংলাদেশের’

আশরাফুল: আরো ১০ বছর খেলতে চাই