আশরাফুল: আরো ১০ বছর খেলতে চাই

নিষেধাজ্ঞা শেষ করে ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলার অপেক্ষায় আছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক মোহাম্মদ আশরাফুল। তবে এখনই তিনি জাতীয় দল কিংবা বিপিএল খেলতে পারবেন না। তার জন্য তাকে আরো অন্তত দুই বছর অপেক্ষা করতে হবে বলেই জানিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। এ দিকে আশরাফুলের ইচ্ছে, অন্তত আরো ১০ বছর প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেট খেলা।

নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ফিরলেও আশরাফুলের সামনের সময়টা অনেক বেশি চ্যালেঞ্জিং। এখনো আগের মতো খেলতে পারেন, এই ব্যাপারটা সবার আগে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে তাকে। অর্জন করতে হবে সতীর্থদের এবং বাংলাদেশ ক্রিকেট সংশ্লিষ্টদের বিশ্বাসও। দুটি কাজই একসঙ্গে করা আশরাফুলের জন্য বেশ কঠিনই বটে।

তবে অনেকে মনে করছেন পুরোনো ফর্মে ফেরাটা তেমন একটা কঠিন হবে না আশরাফুলের জন্য। কারণ স্বীকৃত প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেটে না খেললেও আশরাফুল কিন্তু খেলার মধ্যেই ছিলেন। ২০১৪ ও ২০১৫ সালে দীর্ঘ সময় তিনি যুক্তরাষ্ট্রে অনানুষ্ঠানিক ক্রিকেট খেলেছেন। খেলেছেন যুক্তরাজ্যেও। এ ছাড়া বাংলাদেশেও বিভিন্ন জায়গায় ‘খ্যাপে’ খেলেছেন তিনি।

১৭ বছর বয়স থেকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলা আশরাফুলের ক্যারিয়ারের লম্বা একটা সময় কেটে বিশ্বের বড় বড় ক্রিকেট খেলুড়ে দেশে খেলে। অথচ তাকেই গত তিন বছর খেলতে হয়েছে প্রায় ‘গলির ক্রিকেট’। এ প্রসঙ্গে ক্রিকেট বিষয়ক একটি আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমকে আশরাফুল বলেন, ‘এই তিন বছর অনেক খ্যাপ খেলেছি। সিলেটে নিয়মিত খেলতে গিয়েছি। সাতক্ষীরায় খেলেছি। ২০০১ সালে যখন আমার ক্যারিয়ার শুরু হয় তখন সুজন ভাই (খালেদ মাহমুদ) এবং বুলবুল ভাইয়ের (আমিনুল ইসলাম) কাছে খ্যাপ খেলা নিয়ে অনেক গল্প শুনেছি। তারা নানা জায়গায় খেলেছেন। তবে আমার কখনো খেলা হয়নি। আমি সব সময় আন্তর্জাতিক ক্রিকেট নিয়েই ব্যস্ত ছিলাম।’

৩০ বছর বয়সের পর আবার ক্যারিয়ার চাঙ্গা করা যে কঠিন, সেটা ভালোই জানা আছে আশরাফুলের। তবে তার বিশ্বাস, তিনি এটা করতে পারবেন। এ জন্য আশরাফুল অনুপ্রেরণা নিচ্ছেন ৪২ বছরে দাঁড়িয়েও দুর্দান্ত খেলতে থাকা মিসবাহ উল হকের কাছ থেকে।

আশরাফুল বলেন, ‘আমার প্রাথমিক কাজ ঘরোয়া ক্রিকেটে ভালো খেলা। ৩০ পেরিয়ে ভালো কিছু করা বাংলাদেশি ক্রিকেটারদের জন্য খুবই কঠিন। এ ছাড়া আমি তো দীর্ঘ একটা গ্যাপ থেকে আসলাম। বাংলাদেশে আর কারো ক্ষেত্রে এ ধরনের ঘটনা ঘটেনি। তারপরও আমি দুটি চ্যালেঞ্জই নিচ্ছি। আমি আরো ১০ বছর খেলতে চাই। যেমন মিসবাহ এখনো খেলে যাচ্ছে।’

আশরাফুলের ঘটনা মিশ্র প্রতিক্রিয়া তৈরি করেছে জাতীয় দলে তার সতীর্থদের মধ্যে। জাতীয় দলের বর্তমান টেস্ট অধিনায়ক মুশফিকুর রহিমই যেমন আশরাফুলের ব্যাপারটাকে বাংলাদেশ ক্রিকেটের ‘গৌরবহানী’ বলে উল্লেখ করেছেন।

আশরাফুলের আপাতত লক্ষ্য হলো ২০ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হতে যাওয়া বিসিএলে খেলা। যদিও এই আসরে তার খেলার সম্ভাবনা কিছুটা কমই। কারণ জাতীয় লিগের সেরা পারফর্মাররাই কেবল বিসিএল খেলার সুযোগ পান। আশরাফুল তো এ বছর জাতীয় লিগ খেলেননি। সুতরাং শেষ পর্যন্ত তার কোনো দলে থাকাটাও এখন পর্যন্ত অনিশ্চিত।

ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলা এবং সেখানে ভালো খেলে আবার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরা আশরাফুলের জন্য খুবই কঠিন কাজ। ভালো খেলার পাশাপাশি সতীর্থদের এবং ক্রিকেট সংশ্লিষ্টদের বিশ্বাস অর্জন করাও হবে তার জন্য বড় এক চ্যালেঞ্জ।

আপনি আরো পড়তে পারেন

হাসপাতাল ছেড়েছেন মুস্তাফিজ

আশরাফুল ফিরছেন, কিন্তু আশার ফুল হয়ে কি আর ফেরা হবে?

ধোনি: অবসর নিয়ে কিছুই ভাবছি না

শেষ হচ্ছে নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ, কিন্তু কবে ফিরবেন আশরাফুল?

সিপিএল জিতে দেশে ফিরলেন সাকিব