প্রথমবারের মত বিশ্বে বাঘের সংখ্যা বেড়েছে

গত একশ বছরের মধ্যে ২০১৬ সালে প্রথমবারের মত বিশ্বে বাঘের সংখ্যা বেড়েছে। ২০১০ সালের বাঘ শুমারিতে দেখা যায়, বাঘের সংখ্যা মোট ৩২০০টি। কিন্তু ২০১৬ সালে সেই সংখ্যা এসে দাঁড়িয়েছে ৩৮৯০টি। এর পেছনে অনেকগুলো কারণ রয়েছে। যার মধ্যে অন্যতম কারণ হলো, কিছু কিছু অঞ্চলের মানুষ, যারা বাঘ এবং নিজেরা পাশাপাশি অবস্থান করার উপায় বা বন্দোবস্ত করে নিয়েছে। অলিখিত এই বিশ্বাসযোগ্যতা এবং ভরসার কারণেই বাঘের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে।

বিশ্বের মোট বাঘের প্রায় অর্ধেকেরই ভারতে বাস। দেশটির কিছু স্থানীয় আদিবাসীরা বহুদিন ধরেই হিংস্র ও বাঘদের সঙ্গে বসবাস করছে। যদিও সুযোগ পেলে বাঘ মাঝে মধ্যেই আক্রমন করে বসে। বাঘদের সঙ্গে কেমন আচরণ করতে হয় এবং বাঘের প্রজননের সময় কীভাবে চলতে হয় ইত্যাদি বিষয়গুলো এই আদিবাসী সম্প্রদায়গুলো আসলে ভালো বুঝতে পারে। তাই এক অর্থে তারাই বাঘ সংরক্ষণের কাজ করে বাঘকে বিলুপ্তির হাত থেকে বাঁচাচ্ছে।

বাঘ রক্ষার্থে কাজ করা সারভাইভাল ইন্টারন্যাশনাল নামের দাতব্য প্রতিষ্ঠানটি ২০১৫ সালের ডিসেম্বর মাসে ভারতের পশ্চিমাঞ্চলে বসবাসরত বাঘের উপর একটি রিপোর্ট প্রকাশ করে। রিপোর্টে দেখা গেছে, শুধুমাত্র পশ্চিমাঞ্চলের সোলিগা আদিবাসী গোষ্ঠির রক্ষণাবেক্ষনের ফলেই ২০১০ থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে ওই অঞ্চলের বাঘের সংখ্যা প্রায় দ্বিগুনে দাঁড়িয়েছে। যা বাঘদের বংশবৃদ্ধিতে ভারতের জাতীয় হারের তুলনায় এই হার অনেক বেশি। সোলিগা সম্প্রদায় বাঘকে মূলত তাদের দেবতা হিসেবে মানে, ফলে তাদের মধ্যে বাঘ হত্যার প্রবনতা নেই।

চলতি বছরের মে মাসে প্রকাশিত আরেকটি রিপোর্টে দেখা যায়, মহারাষ্ট্রের বণ্যপ্রাণীর অভয়ারণ্য হিসেবে পরিচিত জঙ্গলের স্থানীয়দের সঙ্গে বাঘেদের সম্পর্ক সোলিগাদের মতো নিবিড় না হলেও বেশ সহনশীল। সেখানকার স্থানীয় আদিবাসী বোর গোষ্ঠির অধিকাংশই নিরামিষভোজী। তাই আমিষের প্রয়োজন না থাকায় বনের কোনো প্রাণীকেও হত্যা করতে হয় না। ফলে জঙ্গলে বাঘের শিকারের অভাব হয় না। চাষী বা গরুর দুধের ব্যবসায়ীরা চান যেন বাঘদের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক ভালো থাকে। কারণ ক্ষেতের আশেপাশে বাঘ থাকলে শস্য বিনষ্টকারী কোনো প্রাণী আসতে পারে না। আর দুধ চোররাও বাঘের ভয়ে গরুর দুধ চুরি করার সাহস পায় না। বেশকিছু গবাদিকে বাঘে ধরে নিয়ে যাওয়ায় বেশ কয়েকবার সংঘর্ষের ঘটনা ঘটলে তাদের মনে বাঘ নিয়ে কোনো নেতিবাচক প্রভাব নেই।

হিন্দুদের দেবী দুর্গার বাহন বাঘ হওয়ার কারণেই হয়ত বাঘদের প্রতি ওই আদিবাসী গোষ্ঠিগুলোর এই বিশেষ দুর্বলতা।

আপনি আরও পড়তে পারেন

৩৪ কোটি টাকায় একটি গাড়ির নম্বর প্লেট

বাংলাদেশের আশীষ পালের বিদ্যুৎবিহীন এসি

যে গ্রামের সব বাড়ি দরজাবিহীন!

গরমে অতিষ্ঠ হয়ে সূর্যের বিরুদ্ধে মামলা!

৯৬ বছর বয়সে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি, রেকর্ড বুকে নাম