যুক্তরাষ্ট্রের মোকাবেলায় ইরান কতটা শক্তিশালী?

মার্কিন বিমান হামলায় ইরানি শীর্ষ জেনারেল কাশেম সোলায়মানি নিহত হওয়ার ঘটনায় যুদ্ধের উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে গোটা মধ্যপ্রাচ্যে। এ ঘটনায় ইরানের সবোর্চ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি ‘কঠোর ও কঠিনতম’ প্রতিশোধ নেয়ার হুমকি দিয়েছেন। এর মধ্যেই ইরানের যুদ্ধবিমান উড়ানোর ধরন এবং বিশ্ব প্রতিক্রিয়া দেখে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরুর আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

কিন্তু দেশ দুটির মধ্যে যদি যুদ্ধ শুরু হয়ে যায়, সেক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের মোকাবেলায় ঠিক কতটুকু সক্ষমতা রয়েছে ইরানের সামরিক বাহিনীর? সম্প্রতি যুক্তরাজ্য ভিত্তিক ইন্টারন্যাশনাল ইন্সটিটিউট ফর স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ এ নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

সেখানে উল্লেখ করা হয়, ইরানের সামরিক বাহিনীর বিভিন্ন স্তরে প্রায় ৫ লাখ ২৩ হাজার সক্রিয় সদস্য রয়েছে। এর মধ্যে নিয়মিত সদস্য ৩ লাখ ৫০ হাজার। এক লাখ পঞ্চাশ হাজার আছে ইসলামিক রিভলিউশানারি গার্ড কর্পস বা আইআরজিসিতে। আইআরজিসির নৌ বাহিনীতে আছে বিশ হাজার। তারা মূলত হরমুজ প্রণালিতে আর্মড পেট্রল বোট পরিচালনা করে থাকেন।

আইআরজিসি বাসিজ নামে আরো একটি ইউনিট রয়েছে। যারা স্বেচ্ছাসেবী ফোর্স হিসেবে দেশের অভ্যন্তরীণ অসন্তোষ মোকাবেলায় কাজ করে থাকে।

আইআরজিসিকে ইরানের সবচেয়ে প্রভাবশালী ফোর্স বলে মনে করা হয়। এর কুদস ফোর্সের নেতৃত্বে ছিলেন নিহত হওয়া জেনারেল সোলায়মানি। এ ফোর্সটি সাধারণত দেশের বাইরে গোপন অভিযান পরিচালনা করে থাকে এবং যা সরাসরি দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি নিয়ন্ত্রণ করে থাকেন।

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ইরানের ওপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক অবরোধের কারণে অস্ত্র আমদানি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফলে ২০০৯ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে দেশটির প্রতিরক্ষা খাতে যে পরিমাণ অস্ত্র আমদানি হয়েছে, তা সৌদি আরবের মোট সামরিক আমদানির তুলনায় মাত্র ৩ দশমিক ৫ শতাংশ।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা বিভাগের তথ্যমতে, ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র শক্তি মধ্যপ্রাচ্যের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। বিশেষ করে দেশটির স্বল্প বা মাঝারি পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রগুলোর আওতায় রয়েছে সৌদি আরব, ইসরায়েল ও উপসাগরীয় অঞ্চলসমূহের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ এলাকা। এছাড়া আন্তঃমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্র তৈরির লক্ষ্যে স্পেস টেকনোলজি নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে ইরান।

সম্প্রতি ইরান তাদের ড্রোন সক্ষমতাও বাড়িয়ে নিয়েছে। যার প্রমাণ পাওয়া যায়, ২০১৬ সাল থেকে ইসলামিক স্টেটের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে।

এছাড়া ২০১৯ সালের জুনে নিজস্ব প্রযুক্তি ব্যবহার করে যুক্তরাষ্ট্রের একটি ড্রোন ভূপাতিত করে ইরান।