ইরানে বন্দরে ভয়াবহ বিস্ফোরণ: নিহত বেড়ে ৮, আহত ৭৫০

দক্ষিণ ইরানের গুরুত্বপূর্ণ শহিদ রাজাই বন্দরে শনিবারে ঘটে যাওয়া ভয়াবহ বিস্ফোরণে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৮ জনে দাঁড়িয়েছে। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এ ঘটনায় অন্তত ৭৫০ জন আহত হয়েছেন।

ছবি - সংগৃহীত

রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার মাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এস্কান্দার মোমেনি নিহতের সংখ্যা ৫ থেকে বেড়ে ৮ হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বর্তমানে বন্দর আব্বাস শহরে অবস্থান করছেন, যেখানে বন্দরটি অবস্থিত।

মোমেনি জানান, এই ঘটনায় প্রায় ৭৫০ জন আহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে ২১২ জনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। বাকিদের হরমুজগান প্রদেশ এবং পার্শ্ববর্তী প্রদেশগুলোর বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলেও তিনি যোগ করেন।

মোমেনি আরও বলেন, উদ্ধার অভিযান শেষ হওয়ার পর এখন আগুন নিয়ন্ত্রণে আনাকেই সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে এবং দমকলকর্মীরা তা নেভাতে অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন।

তিনি জোর দিয়ে বলেন, রাজধানী তেহরানসহ অন্যান্য শহর থেকে প্রয়োজনীয় সকল সরঞ্জাম বন্দর আব্বাসে পাঠানো হয়েছে। আশা করা হচ্ছে, আগামী কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হবে।

প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স-এ দেওয়া এক বিবৃতিতে হতাহতদের প্রতি গভীর দুঃখ ও সমবেদনা প্রকাশ করেছেন। একইসঙ্গে তিনি ঘটনার কারণ অনুসন্ধানের নির্দেশ দিয়েছেন।

তিনি জানান, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে তার বিশেষ প্রতিনিধি হিসেবে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে। তিনি সেখানে `ঘটনার বিভিন্ন দিক পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তদন্ত করবেন, প্রয়োজনীয় সমন্বয় নিশ্চিত করবেন এবং আহতদের অবস্থার খোঁজখবর নেবেন।'

এর আগে, ইরানের কাস্টমস প্রশাসন এক নির্দেশনায় পরবর্তী বিজ্ঞপ্তি না দেওয়া পর্যন্ত বন্দর আব্বাসের শহিদ রাজাই কাস্টমসের উদ্দেশ্যে পাঠানো রপ্তানি ও ট্রানজিট পণ্যের চালান প্রেরণ বন্ধ রাখার জন্য সকল কাস্টমস দপ্তরকে নির্দেশ দিয়েছে।

স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, শহিদ রাজাই বন্দরের কন্টেইনার ডক এলাকায় স্থানীয় সময় দুপুর ১২টার দিকে (জিএমটি ০৮:৩০ / বাংলাদেশ সময় দুপুর ২:৩০) আগুনের সূত্রপাত হয়। প্রাথমিক প্রতিবেদনে বিস্ফোরণস্থলের কাছে দাহ্য পদার্থের উপস্থিতির কথা উল্লেখ করা হয়েছিল।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুরুতে লাগা ছোট আগুন প্রচণ্ড গরম (৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস) এবং দাহ্য পদার্থের মজুদের কারণে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে এবং পরবর্তীতে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটায়।

ন্যাশনাল ইরানিয়ান অয়েল রিফাইনিং অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি এক বিবৃতিতে স্পষ্ট করেছে যে, বন্দরে ঘটা এই বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ডের সঙ্গে তাদের কোনো শোধনাগার, জ্বালানি তেলের রিজার্ভার বা বিতরণ কেন্দ্র এবং তেল পাইপলাইনের সম্পর্ক নেই।

কৌশলগতভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই বন্দরটি দক্ষিণ ইরানের হরমুজগান প্রদেশে অবস্থিত। এটি হরমুজ প্রণালীর উত্তর উপকূলে, বন্দর আব্বাস শহর থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে এর অবস্থান।