মোদি-অমিতের ভাষণেই সর্বনাশ!

ভারতের বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারণায় এবার মোট নয়বার ঝাড়খণ্ডে এসেছিলেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। প্রতিবারই তারা জোর গলায় দাবি করে বলেছিলেন, ৮১টি আসনের মধ্যে ৭৫ টিতেই জয়ী হবেন। রাজ্য বিজেপির নেতারাও বলেছিলেন, মোদি-ম্যাজিকে ভর করে ফের তারা ক্ষমতায় আসবেন।

কিন্তু সোমবার ফলাফল ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই দেখা গেল ভিন্ন চিত্র। রাজ্যটিতে কংগ্রেস-ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা জোটের কাছে হেরে গেল ক্ষমতাসীন বিজেপি। নির্বাচনে মুখ্যমন্ত্রী রঘুবর দাস এবং বিজেপি সভাপতি বিপুল ব্যবধানে পরাজিত হয়েছেন।

সোমবার অধিকাংশ আসনের ফলাফল সরকারিভাবে ঘোষিত না হলেও ব্যবধান থেকে পরিষ্কার, স্পষ্ট জনমত নিয়েই ঝাড়খণ্ডের কুর্দি দখল করেছে কংগ্রেস-জেএমএম জোট। ৮১ আসনের বিধানসভায় ৪৭টি আসনে এগিয়ে রয়েছে তারা। যেখানে সরকার গঠনের জন্য দরকার ৪১ আসন।

দেশটির গণমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, গত নির্বাচনের চেয়ে এবার ১২টি আসন কম পেয়ে ২৫টিতে জয় পেয়েছে বিজেপি। জেএমএম জয় পেয়েছে ৩০টিতে ও কংগ্রেস ১৭টি আসনে। বাকি আসনগুলোতে অন্যান্য আঞ্চলিক দল জয় পেয়েছে। নির্বাচনে নিজ আসন পূর্ব জামশেদপুরে হেরে গেছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী রঘুবর দাস। এ আসনে জয় পেয়েছেন রাজ্যের সাবেক এক মন্ত্রী।

পরাজয় মেনে নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী রঘুবর দাস বলেন, ‘এটা আমার হার, বিজেপির নয়।’ কিন্তু দেশটির রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, দেশজুড়ে বিজেপির ভাবমূর্তি চরমভাবে ধাক্কা খাওয়াতেই রঘুবরের এমন পরাজয়।

বিতর্কিত সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধেও ঝাড়খণ্ডবাসী ভোট দিয়েছেন বলে তাদের অভিমত। এই বিল পাশ হওয়ার পর দুই দফায় ১৮টি আসনে ভোট হয় এ রাজ্যে। যার মধ্যে এখন পর্যন্ত পাওয়া হিসেবে ১২টিতেই ভরাডুবি হয়েছে বিজেপির।

গত ৩০ নভেম্বর থেকে শুরু হয়ে ২০ ডিসেম্বর পর্যন্ত পাঁচ দফায় ঝাড়খন্ড বিধানসভার ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে জয়ী হওয়ায় ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারে বসতে চলেছেন শিবু সোরেনের পুত্র হেমন্ত সোরেন। শিবু সোরেনও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। জয়ের পর রাজ্যবাসীকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন হেমন্ত। পাশপাশি জোটসঙ্গীদের প্রতিও কৃতজ্ঞতা ব্যক্ত করেছেন।

এর আগেও বিভিন্ন রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফলে দেখা গেছে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ যে সব জায়গায় জনসভা ও প্রচারণা বেশি করেছেন, সেসব জায়গায় বিজেপির চরমভাবে ভরাডুবি হয়েছে।