এবার টনক নড়বে তো চীনের?

কমিউনিস্ট চীনের স্বায়ত্তশাসিত জিনজিয়াং প্রদেশে জাতিগত নিপীড়নের শিকার উইঘুর মুসলিমদের প্রতি সংহতি জানিয়ে বিশাল বিক্ষোভ-সমাবেশ করেছে হংকংয়ের হাজার হাজার মানুষ। রোববার বিকেলের ওই শান্তিপূর্ণ কর্মসুচিতে চতুর্মুখী হামলা চলিয়েছে চীনা স্বায়ত্তশাসিত হংকং পুলিশ। এ ঘটনায় একজন আহত হয়েছেন। আটক করা হয়েছে দুজনকে।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, এ সংহতি বিক্ষোভ-সমাবেশে অংশ নেয়া সহস্রাধিক হংকংবাসী উইঘুরদের পতাকা উড়ান, পরেন উইঘুরের প্রতীকী মুখোশ। এ সময় অনেকের হাতে ছিল ‘ফ্রি উইঘুর’, ‘ফ্রি হংকং’, ‘ফেইক অটোনমি ইন চায়না রেজাল্টস ইন জেনোসাইড’ স্লোগান সম্বলিত পোস্টার ও প্ল্যাকার্ড।

সমাবেশটি শান্তিপূর্ণ থাকলেও তা ছত্রভঙ্গ করতে চতুর্মুখী হামলা চালায় হংকংয়ের দাঙ্গা পুলিশ। এ সময় বিক্ষোভকারীদের লাঠিপেটা ও তাদের ওপর পিপার স্প্রে নিক্ষেপ করা হয়।

বিক্ষোভকারীরা একটি সরকারি ভবনে ঢুকে সেখান থেকে চীনা পতাকা নামিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে পুলিশ আরও চড়াও হলে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষ বাঁধে। পরিস্থিতি এতটাই উত্তপ্ত হয় যে, বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে পুলিশকে পিস্তল তাক করতে দেখা যায়। অন্তত দুজন বিক্ষোভকারীকে আটক করে পুলিশ।

পুলিশি হামলার মুখে এক পর্যায়ে বাধ্য হয়ে সমাবেশের সমাপ্তি ঘোষণা করে বিক্ষোভকারীরা তাদের মূল বিক্ষোভের যোগ দেয়। পরে সেখানেও পুলিশ হামলা চালায়, রাবার বুলেট ছুঁড়ে ও গুলি চালায়। এতে একজন আহত হয়েছে বলে জানা গেছে।

প্রসঙ্গত, জিনজিয়াংয়ে প্রায় এক কোটি উইঘুর মুসলিমের বসবাস করেন, যাদের ৪৫ ভাগ তুর্কি নৃগোষ্ঠী। দীর্ঘদিন ধরে সেখানকার মুসলিমদের বিরুদ্ধে নানা ধরনের দমনাভিযান চালিয়ে আসছে চীনা সরকার। সম্প্রতি আন্তর্জাতিক সাংবাদিক গোষ্ঠী ইন্টারন্যাশনাল কনসোর্টিয়াম অব ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিস্টের (আইসিআইজে) ফাঁস করা এক তথ্যচিত্রে দেখা যায়, অন্তত ১০ লাখ উইঘুরকে ‘ডিটেনশন ক্যাম্প’-এ বন্দী করে রাখা হয়েছে।

দেশটির সরকারি নথি থেকে এ তথ্য ফাঁস হওয়ার পর আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলো সরব হয়। এছাড়া ধর্মীয় সংখ্যালঘু উইঘুর মুসলিমদের ‘নির্বিচারে আটক, নির্যাতন ও হয়রানির’ বিরুদ্ধে মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদে একটি বিল পাস করে যুক্তরাষ্ট্র। এর কয়েকদিন আগে চীনা হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে হংকংয়ের বিক্ষোভকারীদের সমর্থনেও প্রতিনিধি পরিষদে পাস হওয়া এক বিলে সই করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।