বেতনের টাকা দান করে দেবেন এমপি নাদিয়া

নিজের বেতনের অর্ধেকেরও বেশি অংশ এলাকার উন্নয়নে দান করে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন যুক্তরাজ্যের সর্বকনিষ্ঠ নারী সংসদ সদস্য নাদিয়া হুইটমোর। ২৩ বছর বয়সী এ সাংসদ তার বেতনের ৮০ হাজার পাউন্ডের ৪৫ হাজারই দান করে করে দেবেন বলে বৃটিশ গণমাধ্যম বিবিসিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে জানান।

গণমাধ্যমটির প্রতিবেদনে বলা হয়, একজন সাধারণ শ্রমিক গড়ে যে বেতন পান, ঠিক ততটুকুই বেতন গ্রহণ করবেন তিনি। বাকি অর্থ সাংসদের নির্বাচনী এলাকার উন্নয়নে তহবিল গঠন ও তৃণমূল পর্যায়ের প্রকল্প তৈরির মতো কাজে ব্যয় করা হবে।

নাদিয়া হুইটমোরের এমন সিদ্ধান্তকে অনেকেই স্বাগত জানিয়েছেন। আবার কেউ কেউ অবাক হয়ে বলছেন, এলাকার উন্নয়ন করার জন্য যেখানে সরকারি অর্থ রয়েছে, সেখানে নিজের বেতনের টাকা খরচ করার কি দরকার? এটি কি শুধুই সমাজসেবা নাকি লোক দেখানো?

সমালোচকদের এমন মন্তব্যের জবাবে নাদিয়া বলেন, শুধু সমাজসেবা করার উদ্দেশ্যে এমন সিদ্ধান্ত নয়। বরং এর মধ্য দিয়ে যুক্তরাজ্যে চলমান বেতন বৈষম্যের বিষয়টিকে সামনে নিয়ে আসা হবে। যেন সমস্যাটির একটা সমাধান হয়।

তিনি বলেন, দেশের শিক্ষক, সেবিকা, দমকলকর্মী ও অন্যান্য শ্রমিকরা অনেক পরিশ্রম করার পরও ন্যায্য বেতন পান না। তাদের বেতন আরো বাড়ানো উচিত। যতদিন পর্যন্ত তাদের বেতন বৃদ্ধি না হচ্ছে, ততদিন নিজের বরাদ্ধকৃত বেতন গ্রহণ করব না। টাকাগুলো সামাজিক উন্নয়নে কাজে লাগানো হবে।

সদ্য অনুষ্ঠিত হওয়া যুক্তরাজ্যের সাধারণ নির্বাচনের আগেও নাদিয়া হুইটমোরকে তেমন কেউ চিনত না। কিন্তু নির্বাচনে সর্বকনিষ্ঠ সংসদ সদস্য বনে যাওয়ার পর তাকে নিয়ে এখন পুরো দেশেই আলোচনা হচ্ছে। এর মধ্যেই নিজের বেতন দান করার ঘোষণায় নতুন করে আবারো আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে নাদিয়া।

তবে নাদিয়ার এমন সিদ্ধান্তকে সহজভাবে নিতে পারেননি দেশটির অনেক রাজনীতিবিদ। এমনকি নিজের দল লেবার পার্টির কয়েকজন সংসদ সদস্যও তার এই দানকে লোক দেখানো বলে মন্তব্য করেছেন।

দলটির সাবেক সাংসদ মেলানি অন এক টুইট বার্তায় এমন সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে বলেন, ‘লোক দেখানো রাজনীতি এখনও চলছে। গুরুত্বপূর্ণ একটি দায়িত্বের জন্য ঠিকভাবে বেতন পেলেও যেন কর্মজীবী শ্রেণির সহ্য হয় না।’

এমন অভিযোগের বিষয়ে হুইটমোর বলেন, কারো কাজই ছোট করে দেখানোর কোনো উদ্দেশ্য নেই। বরং সমপরিমাণ অর্থে একজন দমকলকর্মী, সেবিকা, শিক্ষক কিংবা অন্যান্য শ্রমিকরা ভালোভাবেই তাদের জীবন চালাতে পারেন। তাহলে সংসদ সদস্যরা কেন পারবেন না?

জানা যায়, বৃটিশ পার্লামেন্টের সর্বকনিষ্ঠ এই নারী সংসদ সদস্য নটিংহ্যাম ইস্ট আসন থেকে লেবার পার্টির হয়ে নির্বাচনে বিজয়ী হয়েছেন। মাত্র ১৭ বছর বয়স থেকেই দেশটির সক্রিয় রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হন তিনি। আইন বিষয়ের ওপর পড়াশোনা করা নাদিয়া একসময় বর্ণবিদ্বেষের শিকার হওয়া ব্যক্তিদের সহায়তার কাজ করতেন।