আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে একক প্রার্থী নিশ্চিত করতে নানামুখী তৎপরতা চালিয়েছে এবং চালাচ্ছে আওয়ামী লীগ। কিন্তু তারপরও অন্তত ১১টি আসনে দলটির ‘বিদ্রোহীরা’ স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ভোটের লড়াইয়ে রয়ে গেছেন। ভোটের আর মাত্র পাঁচ দিন বাকি। কিন্তু এখনো ভোটের মাঠে থেকে যাওয়া বিদ্রোহী প্রার্থীদের বহিষ্কার করেনি আওয়ামী লীগ।

awami league flag

দলীয় সূত্র বলছে, এবারের নির্বাচনে মনোনয়ন বঞ্চিত গুরুত্বপূর্ণ চার নেতাকে ‘বিশেষ দায়িত্ব’ দেন আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ হাসিনা। এই বিশেষ দায়িত্ব বলতে মূলত এবার নির্বাচনে ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থীদের ভোটের মাঠ থেকে সরিয়ে দলের একক প্রার্থী নিশ্চিত করা এবং নৌকা প্রার্থীদের জিতিয়ে আনার কথা বলা হয়। এটিকে তাদের জন্য ‘অগ্নিপরীক্ষা’ হিসেবেও বর্ণনা করেন দলটির নেতারা।

দায়িত্বপ্রাপ্ত এ সব নেতারা বিদ্রোহী প্রার্থীদের সতর্ক করে বলেন, গত ১৭ ডিসেম্বরের মধ্যে ভোট থেকে সরে না দাঁড়ালে দল থেকে ‘আজীবন বহিষ্কার’ করা হবে। সেই ডেডলাইনের পর পাঁচ দিন পেরিয়ে গেছে। অন্যদিকে ভোটেরও আর মাত্র পাঁচ দিন বাকি আছে। কিন্তু এখনো ভোটে থাকা বিদ্রোহী প্রার্থীরা ভোটের মাঠে সরব রয়েছেন। তাদের বিরুদ্ধে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেয়া বা বাস্তবায়নের খবর পাওয়া যায়নি।

4 al leadersবিশেষ দায়িত্বপ্রাপ্ত চার নেতা

দলটির একাধিক নেতা জানান, এবার অনেকেই আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন। তবে সার্বিক দিক বিবেচনায় দলীয় প্রার্থী নির্ধারণ করে তালিকা প্রকাশ করা হয়। এরপরও দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে ৭০টির মতো আসনে ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থীরা স্বতন্ত্র হিসেবে নির্বাচন করার ঘোষণা দেয়। তাদের অনেকের মনোনয়ন ইসি'র বাছাইয়ের সময় অবৈধ হয়ে যায়। বাকিদের প্রার্থিতা প্রত্যাহারের জন্য কেন্দ্র থেকে বলা হয়। আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ হাসিনা একটি খোলা চিঠিও পাঠান। এরপর কেউ কেউ প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেন, সরে দাঁড়ান। তবে এখনো ১১টির মতো আসনে বিদ্রোহী প্রার্থী রয়ে গেছে।

এ সব বিদ্রোহী প্রার্থীকে কেন বহিষ্কার করা হচ্ছে না? জানতে চাইলে আওয়ামী লীগে একজন সাংগঠনিক সম্পাদক টোয়েন্টিফোর লাইভ নিউজপেপারকে বলেন, ‘এখনো যেসব বিদ্রোহী প্রার্থী মাঠে আছেন, তারা নিজ এলাকায় খুবই জনপ্রিয়। তারা জয়ী হওয়ার মতো অবস্থানে থাকায় হুঁশিয়ারি সত্ত্বেও ভোট থেকে সরছেন না। তাই তাদের আজীবন বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে দলকে বিষয়টি গুরুত্বের সাথে ভাবতে হচ্ছে।

তিনি আরো বলেন, ‘কিছু আসনে নৌকার প্রার্থীর বিরুদ্ধে এবং কিছু আসনে মহাজোট ও ১৪ দলের প্রার্থীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছে। ফলে ভোটের মাঠের সর্বশেষ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে তাদের ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। ভোটের দু-একদিন আগেও তাদের দল থেকে বহিষ্কার করা হতে পারে।’

এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান বলেন, ‘বিদ্রোহী প্রার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যহত রয়েছে। আমরা আশা করছি, দু-এক দিনের মধ্যে তারা ভোট থেকে সরে দাঁড়াবেন।’

বিদ্রোহী যারা:

নরসিংদী-৩ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী জহিরুল ইসলাম মোহন। বিদ্রোহী প্রার্থী সিরাজুল ইসলাম মোল্লা। তিনি ২০১৪ সালের ভোটেও বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে জয়ী হন।

মুন্সীগঞ্জ-৩ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মৃণাল কান্তি দাস। তার বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন পৌর মেয়র ফয়সাল বিপ্লবের স্ত্রী চৌধুরী ফাহরিয়া আফরিন। তিনি জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মহিউদ্দিনের ছেলের বউ।

ফরিদপুর-৪ আসনে নৌকার প্রার্থী আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফরউল্যাহ। তার বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন নিক্সন চৌধুরী। তিনি ২০১৪ সালের নির্বাচনেও বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে জয়ী হন।

মাদারীপুর-২ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী নৌ-পরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান। এ আসনে বিদ্রোহী হিসেবে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আল আমিন মোল্লা।

যশোর-৫ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী স্বপন ভট্টাচার্য। তার বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন দলটির কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সহ-সম্পাদক কায়সার হাসান বারী।

নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনে মহাজোটের প্রার্থী জাতীয় পার্টির লিয়াকত হোসেন খোকা। তার বিরুদ্ধে বিদ্রোহী হিসেবে হয়েছেন আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি আব্দুল্লাহ আল কায়সার।

লক্ষ্মীপুর-২ আসনে মহাজোটের প্রার্থী জাতীয় পার্টির মোহাম্মদ নোমান। এ আসনে কুয়েত আওয়ামী লীগের সাবেক আহ্বায়ক শহিদুল ইসলাম স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন।

গাইবান্ধা-১ আসনে মহাজোটের প্রাথী জাতীয় পার্টির শামীম হায়দার পাটোয়ারী। এ আসনে সুন্দরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক আফরোজা বারী ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ইমদাদুল হক স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন।

পিরোজপুর-৩ আসনে মহাজোটের প্রার্থী জাতীয় পার্টির রুস্তম আলী ফরাজী। তার বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আশরাফুর রহমান। তিনি মঠবাড়িয়া উপজেলা চেয়ারম্যানের পদ ছেড়ে প্রার্থী হয়েছেন।

ঠাকুরগাঁও-৩ আসনে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের প্রার্থী ওয়ার্কার্স পার্টির ইয়াসিন আলী। এ আসনে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন সাবেক এমপি ও জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ইমদাদুল হক।

ফেনী-১ আসনে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের প্রার্থী জাসদের শিরিন আখতার। তার বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য শেখ আবদুল্লাহ।

গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...

খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর

Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.

Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.