বিএনপির ইশতেহার: ১ কোটি কর্মসংস্থান ও ২ লাখ চাকরির প্রতিশ্রুতি

জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও আওয়ামী লীগের পর নিজেদের নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেছে অপর প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপি। ইশতেহারে ঐক্যফ্রন্টের মতই ক্ষমতায় গেলে প্রতিহিংসা ও জিঘাংসা পরিহার করে বিরোধীদল ও মতকে গুরুত্ব দেবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে দলটি।

আজ মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১ টায় ঢাকার গুলশানে লেকশোর হোটেলে ইশতেহার পাঠ করেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এ সময় তার পাশে ছিলেন স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মঈন খান, নজরুল ইসলামসহ অনেকেই।

ইশতেহারে শিক্ষা ও কর্মসংস্থান বিষয়টি বেশ গুরুত্ব পেয়েছে বলে জানিয়েছে বিএনপি। ক্ষমতায় গেলে মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে সরকারি চাকরিতে দুই লাখ মানুষকে চাকরি দেয়া হবে এবং এক কোটি নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা হবে বলে জানানো হয়।

বিএনপি ইশতেহারের শিক্ষা ও কর্মসংস্থান ব্যবস্থা:

ক) শিক্ষাখাতে জিডিপির পাঁচ শতাংশ অর্থ ব্যয় করা হবে।

খ) উচ্চতর পর্যায়ের শিক্ষা হবে জ্ঞান, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উৎকর্ষে সমৃদ্ধ। এক্ষেত্রে বিষয়ভিত্তিক শিক্ষা, প্রশিক্ষণ ও গবেষণার ওপর গুরুত্ব দেয়া হবে। গড়ে তোলা হবে বিশ্বমানের বিশ্ববিদ্যালয়।

খ) শিক্ষার মানোন্নয়ন ও সম্প্রসারণের জন্য জাতীয় টিভিতে একটি পৃথক শিক্ষা চ্যানেল চালু করা হবে।

গ) বিশ্বের মেধা জগৎ ও আন্তর্জাতিক শ্রম বাজারে বাংলাদেশের একটি নতুন মাত্রা যোগের জন্য বাংলা ভাষার পাশাপাশি ইংরেজিসহ অন্যান্য বিদেশি ভাষা শেখার জন্য অধিকতর সুযোগ সৃষ্টি করা হবে।

ঘ) স্বল্পআয়ের পরিবারের ছাত্রছাত্রীদের জন্য স্বল্প সুদের শিক্ষা ঋণ চালু করা হবে।

ঙ) বিদেশের খ্যাতনামা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সর্বোচ্চ ডিগ্রি অর্জনের সুবিধার্থে মেধাবীদের বৃত্তি প্রদানের জন্য একটি বিশেষ তহবিল গঠন করা হবে।

চ) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সকল বিশ্ববিদ্যালয় ও উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্র-সংসদের নির্বাচন নিশ্চিত করে ছাত্রদের মধ্য হতে ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব বিকাশের পথ করা হবে।

ছ) মাদরাসা শিক্ষাকে আরো আধুনিক ও যুগোপযোগী করা হবে। এ শিক্ষা কারিকুলামে পেশাভিত্তিক ও বৃত্তিমূলক বিভিন্ন বিষয়কে অন্তর্ভুক্ত করা হবে।

জ) সুনির্দিষ্ট নীতিমালার ভিত্তিতে উপজেলা ও ওয়ার্ড পর্যায়ে মসজিদের খতিব, ইমাম ও মুয়াজ্জিনদের জন্য ‘সম্মানীভাতা’ চালু করা হবে।

জ) বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের কারণে শিক্ষাক্ষেত্রে যে নৈরাজ্য সৃষ্টি হয়েছে এবং শিক্ষা ব্যবস্থা ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়েছে তা প্রতিরোধ করার জন্য সকল প্রকার আইনি, প্রতিকারমূলক এবং প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ঝ) শিক্ষার্থীদের ওপর থেকে সকল ধরনের ভ্যাট বাতিল করা হবে। ভ্যাটবিরোধী, কোটা সংস্কার এবং নিরাপদ সড়কের আন্দোলনে ক্ষতিগ্রস্ত ছাত্র-ছাত্রীদের বিরুদ্ধে করা সব মামলা বাতিল করা হবে এবং এসব আন্দোলনে ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে।

ঞ) সরকারি এবং বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গরীব মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য আসন সংরক্ষণ করা হবে। পিএসসি ও জেএসসি পরীক্ষা ব্যবস্থা বাতিল করা হবে।

ট) প্রথম তিন বছরে দুর্নীতি মুক্ত ব্যবস্থায় মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে সরকারি চাকরিতে দুই লাখ মানুষকে চাকরি দেয়া হবে।

ঠ) তরুণ দম্প্রতি ও উদ্যোক্তাদের সাবলম্বী হওয়ার জন্য ২০ বছর মেয়াদী ঋণ চালু করা হবে।

ড) আগামী পাঁচ বছরে এক কোটি নতুন কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ঢ) এক বছরব্যাপী অথবা কর্মসংস্থান না হওয়া পর্যন্ত, যেটাই আগে হবে, শিক্ষিত বেকারদের বেকার ভাতা প্রদান করা হবে। এদের যৌক্তিক অর্থনৈতিক উদ্যোগে আর্থিক সহায়তা দেয়া হবে।