অবশেষে কথা বললেন মোদি

গরুর মাংস খাওয়ার জের ধরে এক মুসলিম বুদ্ধকে হত্যার কারণে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়ে অবশেষে মুখ খুলতে বাধ্য হলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। গতকাল এক জনসভায় মোদি বলেন, ‘হিন্দু-মুসলিমের মধ্যে লড়াই নয়, দরিদ্রতার বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে।’

উল্লেখ্য, সম্প্রতি ভারতের উত্তর প্রদেশের দাদরিতে উন্মত্ত হিন্দুত্ববাদীরা গরুর গোশত খাওয়া এবং তা বাসায় রাখার অপবাদ দিয়ে মুহাম্মদ আখলাক নামে এক বৃদ্ধকে পিটিয়ে হত্যা করে। এ ঘটনায় সারাদেশে নিন্দার ঝড় উঠলেও মোদি একেবারেই চুপ ছিলেন। সামান্য ঘটনার জন্যও টুইট করা মোদি এই ঘটনায় চুপ থাকায় বিরোধীদের তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েন।

গতকাল বৃহস্পতিবার বিহারের এক নির্বাচনী জনসভায় তিনি বলেন, ‘দেশকে এক থাকতে হবে। ঐক্য, সংহতি, শান্তিই দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। হিন্দু-মুসলিমের মধ্যে লড়াই নয়, দরিদ্রতার বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে।’

মোদি নিরবতা ভাঙ্গায় জম্মু-কাশ্মিরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ওমর আব্দুল্লাহ বলেন, মোদি সাহেব কড়া ভাষায় এ ঘটনার নিন্দা করেন নি। তবে ওনি নীরবতা ভেঙেছেন। এটা কিছু না হওয়ার থেকে ভালো।

কংগ্রেস নেতা আর পি এন সিং বলেন, ‘যে নেতা দেশের পরিবেশ নষ্ট করছে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে, শুধু বিবৃতি দিলে চলবে না। বলা এবং করার মধ্যে পার্থক্য থাকা উচিত নয়।’
এদিকে দাদরির হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নিশ্চুপ থাকায় বিশিষ্টজনেরা ক্ষুব্ধ হয়ে ঐতিহ্যবাহী সাহিত্য আকাদেমী পুরস্কার ফিরিয়ে দিয়েছেন।

কবি আশোক বাজপেয়ী সাহিত্য আকাদেমী পুরস্কার ফিরিয়ে দিয়ে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী সব বিষয়ে এত বোঝেন, এত জানেন, এত কথা বলেন। অবাক হচ্ছি এটা দেখে যে লেখক, নিরীহ মানুষ, যুক্তিবাদী নেতাদের ধরে ধরে পিটিয়ে মারা হচ্ছে, কিন্তু তাতে তার কোনো হেলদোল নেই! অসহিষ্ণুতা বরদাস্ত করা হবে না বলে সরকার শুধু ভাষণ দিচ্ছে, কিন্তু বাস্তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের কোনো চেষ্টাই দেখা যাচ্ছে না।’

এছাড়াও এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে উত্তর প্রদেশের সিনিয়র মন্ত্রী আজম খান জাতিসংঘ মহাসচিবের কাছে একটি চিঠি পাঠান। এর ফলে প্রচণ্ড চাপের মধ্যে ছিলেন মোদি। অবশেষে সম্প্রীতির বার্তা দিয়ে তিনি সমালোচকদের মুখ বন্ধ করার চেষ্টা করলেন।

আপনি আরও পড়তে পারেন

রুশ ক্ষেপণাস্ত্র ইরানে পড়েছে: যুক্তরাষ্ট্র

আইএস-এর নতুন হাতিয়ার 'টেলিগ্রাম'

জার্মানিতে অমুসলিমদের জন্য উন্মুক্ত হলো মসজিদ