জয়: তিন সিটিতেই আওয়ামী লীগ প্রার্থীরা জিতবেন

আগামীকাল সোমবার বরিশাল, রাজশাহী ও সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থীদের জয় দেখছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তথ্য ও যোগাযোগ বিষয়ক উপদেষ্টা ও ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়। রোববার নিজের ভ্যারিফাইড ফেসবুক পেজে দেয়া এক পোস্টে স্বতন্ত্র গবেষণা প্রতিষ্ঠান রিসার্চ ডেভেলপমেন্ট সেন্টার (আরডিসি) এর জরিপের তথ্য অনুযায়ী এই বিজয়ের কথা জানান তিনি।

জয় লেখেন, 'আমি আত্মবিশ্বাসী যে বরিশাল ও রাজশাহীতে আওয়ামী লীগ বিশাল ব্যবধানে জয়ের পথে। যদিও সিলেটে আমরা কিছুটা এগিয়ে আছি, এই মুহূর্তে আসলে কাউকেই বিজয়ী হিসেবে দেখার সুযোগ নেই।' বরিশাল, রাজশাহী ও সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে ২০১৮ সালের পুরো জুলাই মাস ধরে আরডিসি এর মাধ্যমে তিনটি জনমত জরিপ করিয়েছেন জয়।

জরিপে দেখা যায়, বরিশালে আওয়ামী লীগের মেয়রপ্রার্থী সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহর প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন ৪৪ শতাংশ ভোটার। অন্যদিকে বিএনপি প্রার্থী মুজিবুর রহমান সরোয়ারকে সমর্থন দিয়েছেন ১৩ দশমিক ১ শতাংশ। অন্যান্য প্রার্থীদের সমর্থন দেন শূন্য দশমিক ৮ শতাংশ। সিদ্ধান্ত দেননি ২৩ দশমিক ৫ শতাংশ। উত্তর দিতে চাননি এমন মানুষ ১৫ দশমিক ৯ শতাংশ। বরিশাল সিটি করপোরেশনের এক হাজার ২৪১ নিবন্ধিত ভোটারের মাঝে এই জরিপটি চালানো হয়।

রাজশাহীতে আওয়ামী লীগ মেয়রপ্রার্থী খায়রুজ্জামান লিটন তিন সিটির মধ্যে সবচেয়ে বেশি সমর্থন পেয়েছেন, ৫৮ শতাংশ। অন্যদিকে বিএনপি প্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল পেয়েছেন ১৬ দশমিক ৪ শতাংশ। অন্যান্য প্রার্থীদের সমর্থন দিয়েছেন শূন্য দশমিক ৯ শতাংশ। সিদ্ধান্ত জানাননি ১২ দশমিক ৩ শতাংশ। আর উত্তর দেননি ৯ দশমিক ৬ শতাংশ। রাজশাহী সিটি করপোরেশনের ১,২৯৪ নিবন্ধিত ভোটারের মাঝে এই জরিপটি চালানো হয়।

সিলেট আওয়ামী লীগের মেয়রপ্রার্থী বদর উদ্দিন আহমেদ কামরান ৩৩ শতাংশ জনসমর্থন পেয়েছেন। কাছাকাছি ২৮ দশমিক ১ শতাংশ সমর্থন পেয়েছেন বিএনপি প্রার্থী আরিফুল হোক চৌধুরী। জরিপে অন্যান্য প্রার্থীরা ভোট পেয়েছেন ১ দশমিক ৩ শতাংশ। সিদ্ধান্তহীন ছিলেন ২৩ শতাংশ। আর উত্তর দেননি ১২ দশমিক ৬ শতাংশ ভোটার। সিলেট সিটি করপোরেশনের ১,১৯৬ নিবন্ধিত ভোটারের মাঝে এই জরিপটি চালানো হয়।

সিটি করপোরেশনের ভোটার তালিকার নারী ও পুরুষ ভোটারের অনুপাত এবং বরিশাল, রাজশাহী ও সিলেট শহরের ২০১১ সালের শুমারির বয়স সম্পর্কিত তথ্যের বিন্যাস অনুযায়ী এই জরিপের ফলাফল উপস্থাপন করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের ভোটার তালিকা থেকে ঠিকানা নিয়ে জরিপের জন্য নমুনা বাছাই করা হয়। এর মধ্য থেকে যারা নিজেদেরকে সিটি করপোরেশনের ভোটার বলে নিশ্চিত করেন তাদেরকেই জরিপে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এই জরিপে ভুলের মাত্রা ধরা হয় +/- ২ দশমিক ৫।

জয় জানান, ‘গত পাঁচ বছর ধরে আরডিসি-এর মাধ্যমে আমরা জরিপ পরিচালনা করছি। তাদের জরিপের পদ্ধতি ও ফলাফল বরাবরই আমার সঠিক মনে হয়েছে। আমাদের মনে রাখতে হবে যে, যেহেতু জরিপগুলো গত এক মাস ধরে করা হয়েছে এবং এর মধ্যে নির্বাচনী প্রচারণা জোরেশোরে চলেছে তাই জরিপ ও নির্বাচনের ফলাফলে কিছুটা তফাৎ হতে পারে। ’

বিএনপিকে উদ্দেশ করে জয় লিখেন, 'বিএনপি অনেক ধরনের অভিযোগ করতে থাকে, কিন্তু আসল কথা হচ্ছে তাদের কোনো জনপ্রিয়তাই নেই। অন্যদিকে আওয়ামী লীগের জনসমর্থন দিন দিন বাড়ছে। নির্বাচনী লড়াইয়ে বিএনপি এখন আওয়ামী লীগের জন্য কোনো প্রতিদ্বন্দ্বীই না।'

নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে জয় বলেন, 'আমি আমাদের দলীয় নেতাকর্মী, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ও নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাদের প্রতি আহবান জানাবো তারা যেন সজাগ থাকেন। কারণ আমাদের আশংকা বিএনপি ভোট কেন্দ্র দখল করে জাল ভোট দিয়ে সেই দায় আমাদের উপর চাপানোর চেষ্টা চালাবেন। আপনারা সবাই বিএনপি নেতাদের এইরূপ ষড়যন্ত্রের ফোনালাপ সম্প্রতি শুনেছিলেন গাজীপুর নির্বাচনের সময়। বিএনপির প্রার্থীরা যতই ভোটারদের কাছে যান, ততই তারা বুঝতে পারেন তাদের দল বাংলাদেশের মানুষদের থেকে কতটা দূরে সরে গিয়েছেন। তাই আওয়ামী লীগকে বিতর্কিত করে নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করাই তাদের একমাত্র কৌশল।'