মিনা বিপর্যয়: চাপে সৌদি সরকার

গত ২৫ বছরের মধ্যে এমন দুর্ঘটনা আর ঘটেনি। মিনায় শয়তানের স্তম্ভে পাথর নিক্ষেপের সময় প্রাণ হারিয়েছেন ৭১৭ জান হাজি। আহতও হয়েছেন প্রায় এক সহস্র হাজি। এই পরিস্থিতি সৌদি সরকারের উপর পড়ছে বহির্বিশ্বের চাপ। বিশেষ করে ইরান সমালোচনায় মুখর হয়েছে সৌদি সরকারের। শুক্রবার বিক্ষোভও হয়েছে তেহরানে।

ঘটনার তিনদিন হয়ে গেলেও সৌদি সরকারের পক্ষ থেকে মৃতের সংখ্যা প্রকাশ করা হয়নি। ইরান এ বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে জানিয়েছে, মিনা বিপর্যয়ে মোট মৃতের সংখ্যা দুই হাজারের বেশি। ইরান দাবি করেছে, তাদের কাছে এর প্রমাণ আছে।

একই সাথে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে ইন্দোনেশিয়াও। ইরানের সাথে সুর মিলিয়ে তারা বলেছে, হজ ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব শুধু সৌদি সরকার না করে মুসলিম দেশগুলো ভাগ করে করতে পারে। সৌদি সরকারের অদকক্ষতার কারণেই এমন বিপর্যয় হয়েছে বলে দাবি করছে দেশ দুটি।

সৌদি সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে মৃতের সংখ্যা প্রকাশ না করলেও সৌদি ভিত্তিক বিভিন্ন সংবাদ সংস্থা বলছে, মিনায় প্রাণ হারানো সবচেয়ে বেশি হাজি পাকিস্তানের। প্রায় আড়াইশ পাকিস্তানি হাজি সেখানে শাহাদাত বরণ করেছেন। এরপর ইরানের হাজি আছেন দেড়শর মতো।

সৌদি ভিত্তিক একটি দৈনিক তাদের খবরে বলেছে, ঘটনার দিন সৌদি প্রিন্স বাদশার সাথে সাক্ষাতের জন্য মিনায় যাচ্ছিলেন। তার সাথে তিন শতাধিক নিরাপত্তাকর্মী ছিলো। প্রিন্সের বহরকে জায়গা করে দিতে হাজিদের দুটি পথ বন্ধ করে দেয়া হয়। মূলত এ কারণেই দুর্ঘটনাটি ঘটে। কিন্তু সৌদি সরকার এই খবরকে বানোয়াট বলে উড়িয়ে দিয়েছে।

তারপরও বহির্বিশ্বের চাপ থেকে বাঁচতে পারছে না সৌদি সরকার। ইরান ও ইন্দোনিশিয়ার সাথে প্রায় একই রকম কথা বলছে আফ্রিকার মুসলিম দেশগুলোও। সৌদি এক প্রিন্স ঘটনার পরপর আফ্রিকান হাজিদের দায়ী করে। যা আফ্রিকায় ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে। ফলে তারাও এখন হজ ব্যবস্থাপনায় সৌদির একক কর্তৃত্বের বিপক্ষে কথা বলছে। অভিযোগ উঠেছে, হজ ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকা কর্মীদের নিয়েও। তারা অদক্ষ বলে অভিযোগ করেছেন হাজিরা। এমন কি বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন ভাষাভাষী হাজিদের সাথে যোগাযোগের জন্য যথেষ্ট ভাষাজ্ঞানও তাদের নেই বলে দাবি করেছেন অনেকে।

আপনি আরো পড়তে পারেন

মিনায় চলছে মৃতদেহ শনাক্তের কাজ

মিনা বিপর্যয়: বাংলাদেশি হাজিদের খোঁজ নিতে হটলাইন

মিনায় ৭১৭ হাজির শাহাদাত, আছেন বাংলাদেশিরাও