যদি আরো কিছু রান হতো, বাজছে সেই ভাঙা রেকর্ড!
- Details
- by সাইফ হাসনাত
এমনিতে ভাঙা রেকর্ড, তারপর সেটা যদি বেজে উঠে বাংলাদেশের অধিনায়কদের কণ্ঠে, তা হয়ে যায় একেবারে শ্রবণঅযোগ্য ধ্বনি! প্রথমে ব্যাট হাতে সন্তোষজনক রান, পরে নির্বিষ বোলিংয়ে সেই রান বিসর্জন দিয়ে এসে মুখটা ছাইকালো করে অধিনায়কদের এ কথা বলা যে, ‘আর কিছু রান হলে ভালো হতো’! আর কতো?
বৃহস্পতিবার মিরপুরের ব্যাটিং স্বর্গে সৌম্য-মুশফিকের চওড়া ব্যাট বাংলাদেশকে এনে দেয় ১৯৩ রানের বুক ফুলিয়ে দেয়া স্কোর। টি-টোয়েন্টিতে এতো রান আগে করেনি বাংলাদেশ। ফলে প্রথম ইনিংস শেষে ফাল্গুনের তৃতীয় দিনের সন্ধ্যাটা আক্ষরিক অর্থেই বসন্তের আভা ছড়িয়ে দেয় মিরপুরের গ্যালারিতে। সেই আভা চর্মচক্ষে দৃশ্যমান না হলেও হৃদয়ে নানা রঙের ঢেউ তুলেছিলো ঠিকই।
সেই ঢেউয়ে যুক্তির পক্ষপাত এনে দিচ্ছিলো পরিসংখ্যান— শ্রীলঙ্কা কোনোদিন এতো রান চেজ করে জেতেনি। মিরপুরেও নেই এই রান পাহাড় টপকে যাওয়ার কোনো নজির। সুতরাং প্রথম ইনিংস শেষে ছড়িয়ে পড়া জয়ের আভা মাখা বসন্তরঙকে কেবলই সমর্থকদের আশার বুদবুদ মনে হয় না। বরং মনে হয় যৌক্তিক দাবি। হারতে হারতে খাদের কিনারে চলে যাওয়া একটা দলের সমর্থকদের জন্য এই আশা নির্দোষ, এই আশা তাদের জন্য ঘুরে দাঁড়ানোর শক্তি।
কিন্তু সেই শক্তি যে বিশ্বাস থেকে তৈরি হয়, তা ভেঙে চুরমার করে দেন বোলাররা। নির্বিষ বোলিংয়েও কখনো কখনো মিলে প্রচেষ্টার ছাপ। কিন্তু বৃহস্পতিবার মাহমুদুল্লাহরা সেই প্রচেষ্টার ছাপ রাখতে গিয়েই গুলিয়ে ফেললেন সব। সাইফুদ্দিন-মোস্তাফিজরা গেলেন ইয়র্কার দিতে। তা হয়ে গেলো ব্যাটসম্যানের রক্তে নাচন তোলা একেকটা ফুলটস। কুসাল মেন্ডিস-থিসারা পেরেরারা মারলেনও সেভাবে। একেকটা বল আঁছড়ে পড়লো সীমানা দড়ির ওপারে। কোনো কোনোটা আরো দূরে— গ্যালারিতে।
ঘুরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেয়া ব্যাটিং ততক্ষণে বিস্মৃত প্রায়। দর্শকরা তখন একমুখ বিষাদ নিয়ে তাকিয়ে থাকেন মোস্তাফিজ-রুবেলদের বল কুড়ানোর দিকে। যেনো এ ছাড়া আর কিছু করার থাকে না তাদের। মাহমুদুল্লাহ হঠাৎ পাওয়া অধিনায়কত্বের দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে বোলারদের এটা-ওটা বলে দেন। চেষ্টা করেন বিপিএলে দেখানো নেতৃত্বের ঝলক আন্তর্জাতিকেও দেখাতে। কিন্তু বোলাররা যেনো হজম করতে পারেন না তার কথা। পরপর খেতে থাকেন বাউন্ডারি। সমান্তরালে ১৯৩ রানের পাহাড়টা শ্রীলঙ্কার সামনে পরিণত হতে থাকে, ছোট্ট টিলায়। যা পেরিয়ে যাওয়া চোয়াল শক্ত না করেই।
এই রকম হারের পর বিষণ্নতার মূর্তি হয়ে সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। কী হলে কী হতো, এই সব বলতে বলতে ‘আর কিছু’ রানের আক্ষেপ ঝড়ে তার কণ্ঠে। মাহমুদুল্লাহ বলতে থাকেন, ‘দুইশ বা এর চেয়ে বেশি রান হলে ভালো হতো। এই স্কোরও ভালোই ছিলো। কিন্তু বোলাররা লাইন-লেন্থ ঠিক রেখে বোলিং করতে পারেনি।’
অথচ এক বছরও হয়নি, যখন লঙ্কানদের ঘরের মাঠে গিয়ে তাদের নাস্তানাবুদ করে এসেছেন মাহমুদুল্লাহরা। সিরিজ জয়ের আনন্দতিলক কপালে জুটেনি বটে, কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে জয়ের গৌরব তো ঠিকই ধরা দিয়েছিলো। সে হিসেবে, এই এক বছরে নিশ্চয় আরো শক্তিধর হয়ে উঠার কথা ছিলো বাংলাদেশের। কিন্তু হয় আসলে উল্টোটা।
এক বছরে কী হয়েছে বা কী হয়নি, সে ব্যাখ্যায় গেলেন না সাকিবের অনাহুত ইনজুরির কারণে অধিনায়কত্বের ভার নেয়া মাহমুদুল্লাহ। তিনি বলেন, ‘আমরা ভালো বোলিং করছি না। এটাই গড়ে দিচ্ছে মূল পার্থক্য। যদি ভালো জায়গায় বোলিং করতে পারতাম, হয়তো জয় ধরা দিতো। আমরা এক সঙ্গে জ্বলে উঠতে পারছি না। এর বাইরে আর কারণ নেই মনে হয়।’
এ রকম আরো কিছু বলে যান মাহমুদুল্লাহ। কিন্তু তার কথাদের ঠিক মনে ধরার মতো মনে হয় না। বরং কোথায় যেনো বাজতে থাকে ভাঙা রেকর্ড; এটা-ওটা শোনা যায় ঠিকই, কিন্তু বোঝা যায় না কিছুই! যদিও বোঝা যায়, কিন্তু বসন্তের সন্ধ্যায় নেমে আসা বিষাদে সেই বোঝাবুঝির অর্থ কী?
গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...
খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর
Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.
Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.