বড় হার দিয়ে শেষ চরম ব্যর্থতার ওয়ানডে সিরিজ

মাশরাফিরা নিশ্চয় হাফ ছেড়ে বাঁচলেন! দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে চরম ব্যর্থতার ওয়ানডে সিরিজটা শেষ পর্যন্ত ফুরালো। সেটিও যথারীতি বড় হার দিয়ে। প্রথম ম্যাচে হারতে হয়েছিলো ১০ উইকেটে। পরের ম্যাচে ১০৪ রানের নিচে চাপা পড়ে। শেষ ম্যাচেও রানের নিচেই পিষ্ট হলেন মাশরাফিরা। হারতে হলো ২০০ রানের ব্যবধানে। রানের হিসেবে এটা বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় হারগুলোর মধ্যে তৃতীয়।

টস জিতে আগে ব্যাটিং করে দক্ষিণ আফ্রিকা তুলে ৩৬৯ রান। যার মাধ্যমে তিন ম্যাচে তাদের মোট রান পেরিয়ে যায় হাজারের বেশি (১০০৪)। বাংলাদেশ এই প্রথমবার তিন ম্যাচের সিরিজে হাজারের বেশি রান দিলো প্রতিপক্ষকে। বাংলাদেশি বোলারদের জন্য যা চরমতম এক লজ্জার সিরিজ হয়ে থাকলো।

বোলারদের লজ্জা 'উপহার' দেয়ার পর ৩৭০ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে বাংলাদেশ যেনো খেলতে শুরু করে প্রথম তিন উইকেট ছাড়াই। কারণ তারা যে গুটিয়ে যান স্কোরবোর্ডে ২০ রান উঠতে না উঠতেই।

দলকে বিপদে ফেলে সবার আগে ড্রেসিংরুমে ফেরেন ইমরুল কায়েস। ছয় বলে মাত্র এক রান করে ডেন পিটারসনের শিকার হন তিনি। ইমরুলকে হারানোর পর জুটি গড়েন সৌম্য সরকার ও একের পর এক ব্যর্থতার পরও সুযোগ পেতে থাকা লিটন দাস।

ইস্ট লন্ডনের তুলনামূলক ধীর গতির উইকেটে দারুণ কিছু করার সুযোগ ছিলো এ দুজনের সামনে। কিন্তু লিটন দাস করতে পারেননি কিছুই। ছয় রানে ফিরে যান ঘরোয়া ক্রিকেটে রানের বন্যা বইয়ে দেয়া এই ব্যাটসম্যান।

ঘরোয়া ক্রিকেটের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান হলেও লিটন দাসের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার যোগ্যতা কতোটুকু আছে, সেই প্রশ্নটা এখন উঠতে বাধ্য। ১২ ম্যাচের ১২ ইনিংসে তিনি করতে পেরেছেন মোটে ১৬৫ রান। গড় মাত্র ১৫। সর্বোচ্চ করতে পেরেছিলেন ৩৬ রান।

লিটনের আরো একটি ব্যর্থতার দিনে ম্লান ছিলেন ওয়ানডে সিরিজে প্রথম মাঠে নামা সৌম্য সরকার। সর্বশেষ ছয় ইনিংসে মাত্র একবার দুই অংকের রান করতে পেরেছেন সৌম্য। এর মধ্যে শূন্যতে ফিরেছেন দুইবার। আজ সৌম্যর ব্যাট থেকে এসেছে আট রান।

দ্রুত তিনটি উইকেট পড়ে যাওয়ার পর ম্যাচ থেকে পুরোপুরি ছিটকে যায় বাংলাদেশ। তারপরও একটা সম্মানজনক স্কোরের জন্য বাংলাদেশ তাকিয়ে ছিলো মুশফিকুর রহিম ও সাকিব আল হাসানের দিকে। কিন্তু এ দুজনের একটা প্রত্যাশিত জুটি আজ দেখা যায়নি। আগের দুই ম্যাচে সেঞ্চুরি ও হাফ সেঞ্চুরি করা মুশফিক আজ ফিরেছেন আট রান করে।

তবে সাকিব একপ্রান্ত আগলে রান করে যেতে থাকেন। তাকে যোগ্য সঙ্গ দিতে পারেননি দুই রান করা মাহমুদুল্লাহও। তার পরে নামা সাব্বির সাকিবের সঙ্গে উইকেটে থাকেন সবচেয়ে বেশি সময়। তারা গড়েন ৬৭ রানের জুটি। সাকিব ৬৩ রানে ক্যাচ তুলে বিদায় নেওয়ায় সম্মানজনক স্কোরের শেষ আশাটাও শেষ হয়ে যায়।

দলীয় ১৩৫ রানে বিদায় নেন সাব্বির। সপ্তম উইকেট হিসেব তার বিদায়ের পর বাংলাদেশের বড় হার হয়ে দাঁড়ায় কেবলই সময়ের ব্যাপার। শেষ তিন উইকেটে তবু ৩৪ রান করে বাংলাদেশ। অর্থাৎ ১৬৯ রানে শেষ হয়ে বাংলাদেশের ইনিংসের দম। হারতে হয় ২০০ রানের বিশাল ব্যবধানে।

শেষ ম্যাচেও বাংলাদেশের পরণতি যে সুখকর হবে না, তা নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিলো ম্যাচের প্রথম ইনিংসেই। যখন প্রোটিয়ারা বাংলাদেশের বিপক্ষে ওয়ানডেতে তাদের সর্বোচ্চ ৩৬৯ রান করে ফেলে। বিশ্বের কোনো দেশেই এতো রান চেজ করে জেতা সহজ নয়। বড্ড কঠিন এই কাজটা করার পথে একদমই যেতে পারেনি বাংলাদেশ।

দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে বল হাতে সেরা পারফর্মার ছিলেন ডেন পিটারসন। তিনি ৪৪ রান দিয়ে তিনটি উইকেট নেন। ইমরান তাহির এবং অ্যাইডেন মার্করাম দুটি করে উইকেট। মার্করাম ব্যাট হাতে ৬৬ রানও করেন। এটা আবার ছিলো তার অভিষেক ম্যাচ।