রাষ্ট্র সংস্কারে ঐকমত্যের খোঁজে: জাতীয় কমিশনের সঙ্গে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির মতবিনিময়

দেশের শাসন ব্যবস্থা ও সাংবিধানিক কাঠামো সংস্কারের লক্ষ্যে গঠিত জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির বিস্তারিত আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) ঢাকার সংসদ ভবনের এল.ডি হলে এই বৈঠকে পাঁচটি সংস্কার কমিশনের দেওয়া বিভিন্ন প্রস্তাবনা ও সুপারিশের ওপর দলটির মতামত নিয়ে পর্যালোচনা করা হয়। এটি ছিল কমিশনের সঙ্গে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির আনুষ্ঠানিক মতবিনিময় এবং এ প্রক্রিয়ায় অংশ নেওয়া ২১তম রাজনৈতিক দল।

বৈঠকের ছবি

বৈঠকে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের পক্ষে সভাপতিত্ব করেন কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ। এসময় ড. ইফতেখারুজ্জামান, ড. বদিউল আলম মজুমদার, সফর রাজ হোসেন এবং প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী মনির হায়দার কমিশনের সদস্য হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। অন্যদিকে, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হকের নেতৃত্বে ১০ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল আলোচনায় অংশ নেয়।

আলোচনাকালে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির পক্ষ থেকে জানানো হয়, তারা এমন একটি রাষ্ট্র ও সরকার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে চায়, যা স্বেচ্ছাচারী হবে না এবং ক্ষমতার অপব্যবহার করতে পারবে না। দলের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক জোর দিয়ে বলেন, ‘আমরা এমন একটি সংবিধান, রাষ্ট্র ও সমাজ চাই যেখানে ধর্ম বা সামাজিক পরিচয়ের কারণে কোনো নাগরিক বঞ্চনার শিকার হবেন না।’ একইসঙ্গে তিনি জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করা এবং অতীতে ছাত্র-জনতার গণতান্ত্রিক আন্দোলনের আকাঙ্ক্ষা পূরণের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

সূচনা বক্তব্যে অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের মূল লক্ষ্য হলো একটি কার্যকর গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা এবং বৈষম্যহীন সমাজ ও সাংবিধানিক কাঠামো গঠনের রূপরেখা প্রণয়ন করা, যা জনগণের দীর্ঘদিনের সংগ্রামের প্রতিফলন ঘটাবে।

উল্লেখ্য, এর আগে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন বিভিন্ন সংস্কার কমিশনের মোট ১৬৬টি সুপারিশ সংবলিত একটি স্প্রেডশিট ৩৯টি রাজনৈতিক দলের কাছে প্রেরণ করে। বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি এর মধ্যে ১২২টি সুপারিশের সঙ্গে পূর্ণ একমত, ২১টির সঙ্গে আংশিক একমত এবং ২৩টির সঙ্গে ভিন্নমত পোষণ করে। আজকের বৈঠকে মূলত এই আংশিক সম্মতি ও ভিন্নমতের বিষয়গুলো নিয়েই বিস্তারিত আলোচনা হয়। আলোচনার মধ্যে সরকার ও সংসদের মেয়াদ ৪ বা ৫ বছর হওয়া, সরকারপ্রধান ও দলীয় প্রধান একই ব্যক্তি থাকা বা না থাকা, দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট সংসদ প্রবর্তন, সংসদ সদস্য হওয়ার ন্যূনতম বয়স এবং নির্বাচন পদ্ধতির সংস্কারসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় অন্তর্ভুক্ত ছিল।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশন এ পর্যন্ত ৩৫টি রাজনৈতিক দলের কাছ থেকে সংস্কার প্রস্তাবনার ওপর মতামত পেয়েছে এবং বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টিসহ মোট ২১টি দলের সঙ্গে সরাসরি বৈঠক সম্পন্ন করেছে।