পাগলা মসজিদের দানবাক্সে এবার মিলেছে ২৮ বস্তা টাকা

কিশোরগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী পাগলা মসজিদের দানবাক্সে এবার মিলেছে ২৮ বস্তা টাকা। চার মাসের বেশি সময় পর আজ শনিবার সকালে ১১টি সিন্দুক খোলা হয়। দানবাক্সগুলোতে বিদেশি মুদ্রাসহ বেশ কিছু অলংকার ও প্রচুর চিরকুট পাওয়া গেছে। প্রশাসন ও ব্যাংকের সহায়তায় টাকা গণনা চলছে।

পাগলা মসজিদের দানবাক্সে পাওয়া টাকা গণনা করছেন মাদরাসার ছাত্র-শিক্ষকরা

মসজিদ কমিটির সভাপতি জেলা প্রশাসক ফৌজিয়া খান ও পুলিশ সুপার মো. হাছান চৌধুরীর উপস্থিতিতে মসজিদ কমপ্লেক্সের কর্মীরা আজ শনিবার সকাল ৭টার দিকে দানবাক্সগুলো খুলে। এ সময় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জেসমিন আক্তার ও রূপালী ব্যাংকের সহকারী মহাব্যবস্থাপক মো. রফিকুল ইসলামও উপস্থিত ছিলেন।

সংশ্লিষ্টরা জানান, বাক্সে পাওয়া টাকাসহ সবকিছু বস্তায় ভরে মসজিদের দোতলায় মেঝেতে ঢেলে সেগুলো বেছে আলাদা করা হয়। এরপরই শুরু হয়েছে টাকা গণনা।

টাকা গণনায় অংশ নিয়েছেন পাগলা মসজিদ কমপ্লেক্সের নূরুল কোরআন হাফিজিয়া মাদরাসার ৭৫ জন ছাত্র, ৪৫ জন শিক্ষক ও স্টাফ, আল জামিয়াতুল ইমদাদিয়ার ১৯৪ জন ছাত্র, রূপালী ব্যাংকের ৮০ জন স্টাফ।

পুরো কার্যক্রমে নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য জেলা প্রশাসনের ২৪ জন কর্মকর্তা, ১৪ জন সেনা সদস্য, ৩০ জন পুলিশ ও ৯ জন আনসার দায়িত্ব পালন করছেন।

এর আগে সর্বশেষ গত বছরের ৩০ নভেম্বর ১১টি দানবাক্স পাওয়া গেছে ২৯ বস্তা টাকা। সেগুলো গণনা করে মিলেছে মোট ৮ কোটি ২১ লাখ ৩৪ হাজার ৩০৪ টাকা। ওই টাকা রূপালী ব্যাংকে মসজিদের হিসাবে জমা রাখা হয়েছে।

প্রতি তিন মাস অন্তর দানবাক্স খোলার রীতি থাকলেও এবার রমজানের কারণে খোলা হয়েছে ৪ মাস ১২ দিন পর। দানবাক্সের বাইরেও অনেকে গরু-ছাগল, হাঁস-মুরগি, কবুতর ইত্যাদি মানত হিসেবে দিয়ে থাকেন। সেগুলো উন্মুক্ত নিলামের মাধ্যমে বিক্রি করে জমা রাখা হয় মসজিদের ব্যাংক হিসাবে ।

দানবাক্স খোলার পর জেলা প্রশাসক ও মসজিদ কমিটির সভাপতি ফৌজিয়া খান বলেন, এসব টাকা থেকে দরিদ্র মানুষকে সহায়তা করা হয়। মসজিদ ও মাদরাসার স্টাফদের বেতনসহ এতিম ছাত্রদের সমুদয় খরচও বহন করা হয় এই অর্থ থেকে। মসজিদের কিছু উন্নয়ন কাজেও হাত দেওয়া হয়েছে।