ফিলিস্তিন-আরাকান-কাশ্মিরের স্বাধীনতার দাবিতে বায়তুল মোকাররমে বিক্ষোভ

ফিলিস্তিন, আরাকান এবং কাশ্মিরের মুসলমানদের ওপর চলমান নিপীড়ন বন্ধ ও তাদের স্বাধীনতার দাবিতে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে জাতীয় বিপ্লবী পরিষদ। শুক্রবার (১১ এপ্রিল, ২০২৫) বাদ জুমা মসজিদের উত্তর গেটে এই বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়। এতে সংগঠনটির নেতাকর্মীদের পাশাপাশি সাধারণ মুসল্লিরাও অংশ নেন।

ছবি - সংগৃহীত

বিক্ষোভকারীরা ফিলিস্তিন, আরাকান ও কাশ্মিরের স্বাধীনতার পক্ষে এবং ইসরায়েল, ভারত ও মিয়ানমারের দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দেন। উল্লেখযোগ্য স্লোগানের মধ্যে ছিল – ‘ফ্রি ফ্রি, প্যালেস্টাইন’, ‘ফ্রি ফ্রি, আরাকান’, ‘ফ্রি ফ্রি, কাশ্মির’, ‘বিশ্ববাসী এক হও, গাজা দখল রুখে দাও’, ‘দুনিয়ার মুসলিম এক হও, লড়াই করো’, ‘ইসরায়েলের কালো হাত ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’, ‘ভারতের কালো হাত ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’, ‘মিয়ানমারের কালো হাত ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’।

জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের সিনিয়র যুগ্ম-আহবায়ক মোহাম্মদ শামসুদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন যুগ্ম-আহবায়ক সাইয়েদ কুতুব, সহকারী সদস্য সচিব আব্দুস সালাম ও গালীব ইহসান, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য তোফায়েল আহমেদ ও ওয়াসিম আহমদ এবং বিপ্লবী ছাত্র পরিষদের আহবায়ক আবদুল ওয়াহেদ, সদস্য সচিব ফজলুর রহমান প্রমুখ।

মোহাম্মদ শামসুদ্দিন তার বক্তব্যে গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর চালানো গণহত্যার বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী মুসলমানদের সোচ্চার হওয়ার কথা উল্লেখ করেন। তিনি অবিলম্বে গাজায় জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়েন এবং গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য ইসরায়েলি সরকার ও সেনা সদস্যদের বিচারের দাবি জানান। তিনি ভারত-অধিকৃত কাশ্মির এবং মিয়ানমার-অধিকৃত আরাকানের মুসলমানদের উপর জাতিগত নিপীড়নের প্রতিবাদ জানিয়ে বাংলাদেশ সরকারকে এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক ফোরামে সক্রিয় ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান। শামসুদ্দিন ইসরায়েলি মালিকানাধীন ও সমর্থক ব্র্যান্ডের পণ্য বর্জন অব্যাহত রাখার জন্যও সকলের প্রতি আহ্বান জানান।

সহকারী সদস্য সচিব গালীব ইহসান বলেন, গাজায় ইসরায়েলি গণহত্যার বিষয়ে পূর্ববর্তী সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোর নীরবতার পর জাতীয় বিপ্লবী পরিষদই প্রথম সরব হয় এবং গত ৭ ফেব্রুয়ারি বায়তুল মোকাররম থেকে প্রতি শুক্রবার ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভের ঘোষণা দেয়। তিনি দাবি করেন, তাদের উদ্যোগের ফলেই বর্তমানে অন্যান্য দলও ফিলিস্তিনের পক্ষে কথা বলছে।

ইহসান আরও উল্লেখ করেন, বাংলাদেশি পাসপোর্টে ‘এক্সেপ্ট ইসরায়েল’ পুনর্মুদ্রণের দাবিতে তাদের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ইতিবাচক আশ্বাস দিলেও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগের অভাবে তা এখনো বাস্তবায়িত হয়নি। এ দাবি আদায়ে ভবিষ্যতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘেরাওয়ের মতো কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দেন তিনি।

তিনি জোর দিয়ে বলেন, ফিলিস্তিন মুক্ত না হওয়া পর্যন্ত প্রতি শুক্রবার তাদের বিক্ষোভ চলবে এবং এই কর্মসূচি সারাদেশে ছড়িয়ে দেওয়া হবে।