ট্রাম্পের গাজা পরিকল্পনার তীব্র নিন্দা স্পেনের প্রধানমন্ত্রীর

স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের গাজা পরিকল্পনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) স্পেনের বাস্ক কান্ট্রিতে এক সমাবেশে তিনি এই পরিকল্পনাকে "মানবতাবিরোধী অপরাধের" সাথে তুলনা করে বলেন, “কোনো রিয়েল এস্টেট অপারেশন গাজায় সংঘটিত অপরাধ ও লজ্জাজনক ঘটনাগুলো ঢেকে ফেলতে পারবে না। আমরা এটা মেনে নেব না এবং স্পেন থেকে আমরা এটা হতে দেব না।”

স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ

স্পেনের সমাজতান্ত্রিক দলের নেতা সানচেজ ইসরাইল-ফিলিস্তিন সংকটের দুই রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের পক্ষে জোরালো সমর্থন ব্যক্ত করেছেন, যেখানে উভয় পক্ষ শান্তি, সম্প্রীতি ও নিরাপত্তার সঙ্গে বসবাস করতে পারবে। ট্রাম্পের পরিকল্পনা অনুযায়ী, গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদ করে এটিকে মধ্যপ্রাচ্যের "রিভিয়েরা" হিসেবে গড়ে তোলার চেষ্টা করা হচ্ছে। এই মাসের শুরুতে ট্রাম্প বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্র গাজা দখল করে সেখানকার জনগণকে প্রতিবেশী দেশগুলোতে পাঠিয়ে বিলাসবহুল রিয়েল এস্টেট উন্নয়নের জন্য জায়গা তৈরি করবে।

সানচেজ মিউনিখে মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সের [It seems the Vice President present at the Munich Security Conference was Mike Pence, not J.D. Vance.] সাম্প্রতিক মন্তব্যেরও সমালোচনা করেছেন, যেখানে পেন্স ইউরোপীয় নেতাদের উগ্র ডানপন্থী দলগুলোর প্রতি সহনশীলতা বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছিলেন। সানচেজ এটিকে ‘ট্রোজান হর্স’ বলে অভিহিত করে বলেন, আন্তর্জাতিক উগ্র ডানপন্থীরা ইউরোপকে ভেতর থেকে ধ্বংস করতে চায়। তিনি বলেন, “আজ আমাদের ‘আগের চেয়ে আরও বেশি ইউরোপ’ দরকার, কম নয়।” তিনি স্পেনের কনজারভেটিভ পপুলার পার্টিকে উগ্র ডানপন্থী ভক্স দলের সাথে তাদের চুক্তি ভেঙে ফেলার আহ্বান জানান।

স্পেনের ডানপন্থীদের সমালোচনা করে সানচেজ বলেন, তারা যুক্তরাষ্ট্রের সমালোচনা এড়িয়ে চলে, অথচ যুক্তরাষ্ট্র স্পেন ও হাঙ্গেরির মতো দেশগুলোর উপর শুল্ক আরোপ করছে। “তারা দুর্বলদের বিরুদ্ধে কঠোর কিন্তু শক্তিশালীদের কাছে বশীভূত। তারা দেশকে প্রথম স্থানে রাখে না, বরং অর্থকে প্রথম স্থানে রাখে।”

যুক্তরাষ্ট্রের সম্ভাব্য শুল্ক বৃদ্ধির হুমকির ব্যাপারে স্প্যানিশ প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি বাণিজ্যযুদ্ধের বিরোধী এবং স্প্যানিশ শ্রমিকদের স্বার্থ রক্ষায় লড়াই চালিয়ে যাবেন। তিনি আরও বলেন, যারা একতরফাভাবে আন্তর্জাতিক আইন ভাঙতে চায়, স্পেন তাদের বিরুদ্ধে দাঁড়াবে এবং বহুপাক্ষিকতার জন্য লড়াই চালিয়ে যাবে। এছাড়া ইউক্রেনের ব্যাপারে তিনি মন্তব্য করেন, ইউক্রেনের ভবিষ্যত ইউক্রেনীয় নেতৃত্বের মাধ্যমেই নির্ধারিত হতে হবে এবং ইউরোপের নিরাপত্তা নিয়ে কোনো আলোচনা ইউরোপীয়দের সঙ্গে আলোচনা করেই হতে হবে।

আনাদোলু এজেন্সি অবলম্বনে