আবারও নীতি সুদের হার বাড়ানোর পথে বাংলাদেশ ব্যাংক

লাগামহীন মুদ্রাস্ফীতি এবং জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির মোকাবেলায় বাংলাদেশ ব্যাংক আবারও নীতি সুদের হার (রেপো রেট) বাড়ানোর কথা ভাবছে। আসন্ন জানুয়ারি-জুন মুদ্রানীতিতে এই ঘোষণা আসতে পারে বলে বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন সহকারী পরিচালক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের লোগো

বর্তমানে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো ট্রেজারি বিল বন্ধক রেখে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ১০ শতাংশ সুদে ঋণ নিতে পারে। নতুন নীতিতে এই সুদের হার ১০.৫০ শতাংশে উন্নীত হতে পারে বলে জানা গেছে।

এই সম্ভাব্য বৃদ্ধি ব্যবসায়ী মহলে উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে। বিজিএমইএ’র কার্যনির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম সতর্ক করে বলেছেন, সুদের হার বৃদ্ধিতে ভোক্তা পর্যায়ে ঋণের খরচ বেড়ে যাবে, যা ব্যবসা-বাণিজ্যের খরচ আরও বাড়াবে। সরকার সম্প্রতি ১০০টিরও বেশি পণ্য ও সেবার ওপর ভ্যাট ও অন্যান্য কর বৃদ্ধি করেছে, যা মুদ্রাস্ফীতির চ্যালেঞ্জকে আরও জটিল করে তুলেছে। এই প্রেক্ষাপটে হাতেম সিদ্ধান্তের সময় নির্ধারণ নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন।

নীতি সুদের হার বৃদ্ধি পেলেও সরকারি কর্মকর্তা ও ব্যাংকারদের ঋণের সুদের হার ৪ শতাংশে স্থির থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে, যা ঋণ বাজারে বৈষম্য সৃষ্টি করছে বলে অংশীজনরা অভিযোগ করেছেন।

অর্থনীতি বিশ্লেষকরা বলছেন, ডলার সংকট এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি বেসরকারি খাতের বিনিয়োগে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে। বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধি নভেম্বরে ৭.৬৬ শতাংশে নেমে এসেছে, যা সাম্প্রতিক বছরগুলোর মধ্যে সর্বনিম্ন।

ডিসেম্বরে গড় মুদ্রাস্ফীতি ১০.৩৪ শতাংশে পৌঁছেছে। দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে মুদ্রাস্ফীতি ১০ শতাংশের আশেপাশে ঘোরাফেরা করছে। চলতি অর্থবছরের শেষ নাগাদ মুদ্রাস্ফীতি ৭.৫০ শতাংশে নামিয়ে আনার লক্ষ্যমাত্রা সরকারের।

তবে বিশ্লেষকরা সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, ১০০টিরও বেশি পণ্যের ওপর শুল্ক ও কর বৃদ্ধি এবং সরকারি কর্মচারীদের মহার্ঘ ভাতা আগামী মাসগুলোতে মুদ্রাস্ফীতি আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে।