জুলাই গণহত্যা: ‘টপ কমান্ডারদের’ বিচার এক বছরের মধ্যে

ট্রাইব্যুনালে সাধারণত মানবতাবিরোধী অপরাধের ‘টপ কমান্ডার’ বা শীর্ষ অপরাধীদের বিচার করা হয়। জুলাই-আগস্টে গণহত্যার প্রধান নিউক্লিয়াস ছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীসহ তার সঙ্গে কয়েকজন ছিলেন। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে প্রাধান্য দিয়ে এসব প্রধান অভিযুক্তদের বিচার করা হবে। এসব কথা জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম

আজ শনিবার রাজধানীর খামারবাড়ি কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ (কেআইবি) মিলনায়তনে জাতীয় সংলাপের দ্বিতীয় দিনে ‘গুম-খুন থেকে জুলাই গণহত্যা : বিচারের চ্যালেঞ্জÕ শীর্ষক অধিবেশনে এসব কথা বলেন তাজুল ইসলাম। ‘ঐক্য, সংস্কার ও নির্বাচন’ নিয়ে সংলাপের আয়োজন করেছে ফোরাম ফর বাংলাদেশ স্টাডিজ।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম বলেন, মানবতাবিরোধী অপরাধে সাধারণত টপ কমান্ডারদের বিচার করা হয়। জুলাই-আগস্টের গণহত্যার প্রধান নিউক্লিয়াস ছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি ও তার সঙ্গে কয়েকজন ছিলেন, তাদের বিচারকে প্রাধান্য দিচ্ছে ট্রাইব্যুনাল।

অধিবেশনের সঞ্চালক মনির হায়দার প্রশ্ন করেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের যে সক্ষমতা, তাতে গণহত্যা, গুম-খুনের মতো মানবতাবিরোধী অপরাধের মতো এত বড় পরিধির বিচারে কি সেটি যথেষ্ট?

জবাবে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম বলেন, ট্রাইব্যুনালে বর্তমানে ১০ জন প্রসিকিউটর ও ১৭ তদন্ত কর্মকর্তা রয়েছেন।

চিফ প্রসিকিউটর বলেন, ট্রাইব্যুনালের প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে গুম, গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী যেসব অপরাধ বাংলাদেশের মাটিতে হয়েছে, সেই অপরাধের যারা মাস্টারমাইন্ড (হোতা), বিশেষ করে যারা সর্বোচ্চ জায়গায় বসে অপরাধ সংঘটিত করেছেন, প্রাধান্য দিয়ে, তাদের বিচার করা।

তিনি আরও বলেন, সারা দেশে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত হয়েছে এবং এর সঙ্গে আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গ সংগঠনগুলো রাজনৈতিকভাবে সম্পৃক্ত ছিল। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীরও অনেক কর্মকর্তার সম্পৃক্ততা ছিল। দেশব্যাপী সব ঘটনার বিচার করতে গেলে এই ট্রাইব্যুনালের পক্ষে সেটি সম্ভব নয়।

তাজুল ইসলাম বলেন, দ্রুততম সময়ের মধ্যে বিচার শেষ করতে হবে। গণহত্যার হোতাদের বিচারের সক্ষমতা ট্রাইব্যুনালের রয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে প্রধান অভিযুক্ত ব্যক্তিদের মামলা এবং সবার বিচারই আগামী এক বছরের মধ্যে শেষ করা যাবে।

তাজুল ইসলাম বলেন, এর বাইরে জুলাই-আগস্টে দেশব্যাপী যত অপরাধ হয়েছে, সেজন্য বিভিন্ন থানায় মামলা হয়েছে এবং সাধারণ আদালতে বিচার চলছে, সেটা চলবে। ওইসব বিচার করতে কত সময় লাগবে, সেটি বলতে পারবেন সংশ্লিষ্ট আদালত।

দুই দিন আগে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে কথা হয়েছে জানিয়ে তাজুল ইসলাম বলেন, বিচারের ক্ষেত্রে কিছু প্রাধান্যের কথা বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা। কিন্তু সবচেয়ে বড় প্রাধান্য হচ্ছে, যারা দেশটাকে গুম-খুনের স্বর্গরাজ্যে পরিণত করেছিল, যারা ছাত্র-জনতার রক্তে বাংলার মাটি রঞ্জিত করেছে, তাদের বিচার এক নম্বর প্রাধান্য। এই জায়গায় ব্যর্থ হওয়ার কোনো সুযোগ নেই।