তিন অর্থনীতিবিদ নোবেল পুরস্কারে ভূষিত

রয়্যাল সুইডিশ অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সেস সোমবার অর্থনীতিতে নোবেল স্মারক পুরস্কার ঘোষণা করেছে। এ বছর এই সম্মানে ভূষিত হয়েছেন তিন অর্থনীতিবিদ – ড্যারন অ্যাসেমোগলু, সাইমন জনসন এবং জেমস এ. রবিনসন। ‘প্রতিষ্ঠান কীভাবে গড়ে ওঠে এবং সমৃদ্ধিকে কীভাবে প্রভাবিত করে, সে বিষয়ে গবেষণার জন্য’ তাদের এই পুরস্কার প্রদান করা হলো।

ড্যারন অ্যাসেমোগলু, সাইমন জনসন এবং জেমস এ. রবিনসন

এই ঘোষণার মধ্য দিয়েই এ বছরের ছয়টি বিভাগের নোবেল পুরস্কার ঘোষণার সমাপ্তি ঘটল। উল্লেখ্য, অর্থনীতিতে নোবেল আনুষ্ঠানিকভাবে 'অ্যালফ্রেড নোবেলের স্মরণে অর্থনীতি বিজ্ঞানে সুইডিশ রিজার্ভ ব্যাংক পুরস্কার' হিসেবে পরিচিত।

নোবেল কমিটি জানিয়েছে, ‘এ বছরের অর্থনীতিবিদ ত্রয়ী – অ্যাসেমোগলু, জনসন এবং রবিনসন – তাদের গবেষণায় দেখিয়েছেন, কোনো দেশের সমৃদ্ধির জন্য সেখানকার প্রতিষ্ঠানগুলো কতটা গুরুত্বপূর্ণ। যেসব সমাজে আইনের শাসন দুর্বল এবং প্রতিষ্ঠানগুলো জনগণকে শোষণ করে, সেখানে উন্নয়ন বা ইতিবাচক পরিবর্তন প্রায় অসম্ভব। নোবেলজয়ীদের গবেষণা আমাদের বুঝতে সাহায্য করে, কেন এমনটা ঘটে।’

নোবেল কমিটি আরও উল্লেখ করে, ‘ইউরোপীয়রা যখন বিশ্বের বিশাল অংশ উপনিবেশ স্থাপন করেছিল, তখন উপনিবেশগুলোর সামাজিক কাঠামোতে ব্যাপক পরিবর্তন আসে। কোথাও এই পরিবর্তন ছিল নাটকীয়, কোথাও আবার খুব একটা পরিবর্তন হয়নি। কোন কোন ক্ষেত্রে স্থানীয় জনগোষ্ঠীকে শোষণ করে উপনিবেশকারীদের সুবিধা আদায়ই ছিল মূল লক্ষ্য। আবার কোথাও কোথাও উপনিবেশকারীরা দীর্ঘমেয়াদী স্থায়িত্বের লক্ষ্যে ইউরোপীয় অভিবাসীদের জন্য অন্তর্ভুক্তিমূলক রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থা গড়ে তোলে।’

‘নোবেলজয়ীদের গবেষণা প্রমাণ করে যে, উপনিবেশকালে গড়ে উঠা সামাজিক প্রতিষ্ঠানগুলোই মূলত আজকের দেশগুলোর মধ্যে সমৃদ্ধির পার্থক্যের অন্যতম কারণ। যেসব দেশে উপনিবেশ স্থাপনের সময় দারিদ্র্য বিরাজ করছিল, সেখানে যদি অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রতিষ্ঠান চালু করা হতো, তাহলে কালক্রমে সেখানকার মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নত হতো। ”

নোবেল কমিটি আরও বলে, ‘কিছু কিছু দেশ শোষণমূলক প্রতিষ্ঠান এবং নিম্ন অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জালে আটকা পড়ে। অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রতিষ্ঠান চালু করলে সবার জন্য দীর্ঘমেয়াদী সুবিধা তৈরি হবে, তবে শোষণমূলক প্রতিষ্ঠান কেবল ক্ষমতাসীনদের স্বল্পমেয়াদী সুবিধা প্রদান করে।’

অর্থনীতি বিজ্ঞানে পুরস্কার কমিটির চেয়ারম্যান জ্যাকব সভেনসন বলেন, ‘বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মধ্যে আয় বৈষম্য হ্রাস করা আমাদের সময়ের অন্যতম বড় চ্যালেঞ্জ। নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ত্রয়ী এই লক্ষ্য অর্জনে সামাজিক প্রতিষ্ঠানগুলির গুরুত্ব তুলে ধরেছেন।’