দেশজুড়ে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ওপর হামলা, নিহত ২০

সোমবার (৫ আগষ্ট) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশ ত্যাগের পর থেকে দেশজুড়ে আওয়ামী লীগ এবং সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী ও তাদের পরিবারের সদস্যদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার পর্যন্ত এসব হামলায় কমপক্ষে ২০ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।

আওয়ামী লীগের দলীয় পতাকা

সাতক্ষীরায় শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশ ত্যাগের খবরের পর সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন নেতাকর্মীর বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়। এছাড়াও, সাতক্ষীরা সদর ও শ্যামনগর থানায় অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের খবর পাওয়া গেছে। এসব ঘটনায় কমপক্ষে ১০ জন নিহত হয়েছেন।

কুমিল্লায়, জনতার হামলায় কমপক্ষে ১১ জন নিহত হয়েছেন। অশোকতলায় সাবেক কাউন্সিলর মো. শাহ আলমের তিনতলা বাড়িতে দুষ্কৃতকারীরা আগুন ধরিয়ে দিলে ৬ জন নিহত হন। সোমবার রাত ও মঙ্গলবার সকালে বাড়িটি থেকে তাদের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। নিহতদের মধ্যে শাওন (১২), আশিক (১৪), শাকিল (১৪), রনি (১৬), মহিন (১৭) এবং মাহফুজুর রহমান (২২) নামে পাঁচ কিশোর রয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সোমবার শাহ আলমের বাড়িতে ক্ষুব্ধ জনতা হামলা চালায়। একপর্যায়ে কিছু লোক বাড়িটির তৃতীয় তলায় উঠে যায়। এদিকে, জনতা বাড়িটির নিচতলায় আগুন ধরিয়ে দেয়। পরে তৃতীয় তলায় আশ্রয় নেওয়া লোকজন ধোঁয়ায় আক্রান্ত হয়ে এবং পুড়ে মারা যান। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও কমপক্ষে ১০ জন। আহতদের মধ্যে একজন গুরুতর আহত অবস্থায় আইসিইউতে চিকিৎসাধীন।

এদিকে, নাটোর-২ (সদর ও নলডাঙ্গা) আসনের সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুলের বাড়িতে ক্ষুব্ধ জনতা আগুন ধরিয়ে দিলে চারজনের মৃত্যু হয়। মঙ্গলবার সকালে শহরের 'জান্নাতি প্যালেস' নামে সংসদ সদস্যের বাড়িটির বিভিন্ন কক্ষ, বারান্দা এবং ছাদ থেকে তাদের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়।

সকাল সাড়ে ৭টার দিকে প্রথমে আকিব হোসেন (১৭) নামে এক কলেজ শিক্ষার্থীর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। সে নাটোর সিটি কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র ছিল। অন্যান্য নিহতরা হলেন সিয়াম হোসেন (১৮), ইয়াসিন আলী (১৮) এবং শরিফুল ইসলাম মোহন (২৭)।

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, শেখ হাসিনার পদত্যাগের খবর শুনে ক্ষুব্ধ জনতা সংসদ সদস্য শফিকুলের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। পাশের তার ছোট ভাইয়ের পাঁচতলা ভবন ও সংসদ সদস্যের পুরাতন বাড়িতেও আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। তিনটি বাড়িতেই লুটপাট চলে।

ফেনীতে, স্থানীয়রা দুই যুবলীগ নেতার মৃতদেহ উদ্ধার করেছে। এর মধ্যে, সোনাগাজী উপজেলার একটি সেতুর নিচ থেকে যুবলীগ নেতা মুশফিকুর রহিমের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। মুশফিক ঢালিয়া ইউনিয়ন যুবলীগের কার্যালয় সম্পাদক ছিলেন।

এদিকে, সকালে ফেনী সদর উপজেলায় বাদশা মিয়া নামে আরেক যুবলীগ নেতার মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়।

লালমনিরহাটে, স্থানীয়রা জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সুমন খানের বাড়ি থেকে ছয়টি মৃতদেহ উদ্ধার করেছে। সোমবার একদল উত্তেজিত জনতা বাড়িটিতে আগুন ধরিয়ে দেয়।

বগুড়ায়, দুই যুবলীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যা করেছে একদল দুষ্কৃতিকারী। ঘটনাটি ঘটেছে ধীরখিপাড়া ও শাজাহানপুর উপজেলায়।