রাশিয়ায় বিমান দুর্ঘটনা, যাত্রী তালিকায় ওয়াগনার প্রধানের নাম!

রাশিয়ায় মস্কো থেকে সেন্ট পিটার্সবার্গগামী একটি প্রাইভেট বিমান বিধ্বস্ত হয়ে পাইলট-ক্রুসহ ১০ জন নিহত হয়েছে। বিমানের যাত্রী তালিকায় প্রিগোজিন নামের এক ব্যক্তিও ছিলেন। এই প্রিগোজিন দেশটির ভাড়াটে যোদ্ধাবাহিনী ওয়াগনারের প্রধান হতে পারেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। খবর বিবিসি ও আল জাজিরা।

প্রিগোজিন

রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম আরআইএ নভোস্তির বরাত দিয়ে খবরে বলা হয়, বুধবার মস্কো থেকে ছেড়ে আসা একটি বেসরকারি সংস্থার বিমান এমব্রেয়ার লিগ্যাসি তেভর অঞ্চলের কুজেনকিনো গ্রামের কাছে ভেঙে পড়ে। বিমানটিতে পাইলটসহ তিনজন ক্রু ছিলেন। সব মিলিয়ে বিমানটিতে ১০ জন ছিলেন। বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় ১০ জনের সবাই মারা যান। বলা হচ্ছে, ওই বিমানের একজন যাত্রীর নাম প্রিগোজিন। তবে এই ব্যক্তিই ওয়াগনার প্রধান কি না, সে বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি। যাত্রী  তালিকায় নাম থাকলেও প্রিগোজিন আদৌ সে বিমানে ছিলেন কি না, তা-ও নিশ্চিত করা যায়নি।

রাশিয়ার জরুরি পরিস্থিতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারাও বিমান দুর্ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, বিমান দুর্ঘটনায় নিহত আরোহীদের একজনের নাম প্রিগোজিন। তবে ওই দুর্ঘটনার ব্যাপারে আর কোনো তথ্য জানাননি তারা।

রাশিয়ায় বিদ্রোহ

এর আগে ওয়াগনার গ্রুপ সংশ্লিষ্ট টেলিগ্রাম চ্যানেল ‘গ্রে জোন’ এক খবরে জানায়, মস্কোর উত্তরের একটি এলাকায় আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার গুলিবর্ষণে বিমানটি বিধ্বস্ত হয়েছে। রাশিয়ার একটি অসমর্থিত সূত্রও বলছে, প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ব্যবহার করে বিমানটি নামিয়ে আনা হতে পারে। সেখানে বলা হচ্ছে, এ বিমানটির পাশে আরেকটি বিমান ছিল। পরে সেটি গন্তব্যে না গিয়ে উল্টো ফিরে যায়।

ওয়াগনারপ্রধান দীর্ঘদিন ধরে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত। তার প্রশ্রয়ে পাচক থেকে এক সময়ে ভাড়াটে যোদ্ধাবাহিনীর প্রধান হয়ে উঠেন প্রিগোজিন। ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু হলে তাতে সক্রিয়ভাবে অংশ নেয় প্রিগোজিনের ওয়াগনার বাহিনী। তবে এ বছরের শুরু থেকেই ওয়াগনার বাহিনীর প্রধান রুশ সেনাবাহিনী বিশেষ করে রুশ সামরিক নেতৃত্বের প্রতি অসন্তোষ প্রকাশ করে আসছিলেন।

তাদের প্রতি বৈষম্যের অভিযোগ এনে ওয়াগনার বাহিনী গত জুনের শেষ দিকে বিদ্রোহ করে বসে। পরে অবশ্য বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কোর মধ্যস্ততায় বিদ্রোহের ইতি টানে ওয়াগনার গ্রুপ। সরে যায় বেলারুশের মাটিতে। মাঝে একবার পুতিনের সঙ্গে তাকে বৈঠকে দেখা গেলেও বাকি সময় একেবারেই লোক অন্তরালে সময় পার করেন। দীর্ঘদিন পর গত মঙ্গলবার এক ভিডিওবার্তায় তার দেখা মেলে।

ওই ভিডিওবার্তায় তিনি জানান, এখন থেকে আফ্রিকার মরুভূমিই তার ঠিকানা। সেখানকার তাপমাত্রা বেশি হলেও তাতেই সন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন তিনি। বলেছিলেন, ওয়াগনার এখন সব মহাদেশে রাশিয়ার গৌরব বাড়াতে কাজ করছে। এবার আমরা আফ্রিকার মানুষকে মুক্তি ও আনন্দের স্বাদ দিতে এবং তাদের জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিতে কাজ করব। আমরা আইএস, আল কায়েদাসহ সব জঙ্গিদের দুঃস্বপ্নে পরিণত হব।