রেলমন্ত্রী: সিগন্যালিং গোলযোগেই ভারতে ট্রেন দুর্ঘটনা

ভারতের রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণ বলেছেন, সিগন্যাল সিস্টেমে গোলযোগের কারণে শুক্রবার উড়িষ্যায় ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটেছে। আমরা দুর্ঘটনার কারণ এবং এর জন্য দায়ী ব্যক্তিদের শনাক্ত করেছি। তবে চূড়ান্ত তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার আগে এ বিষয়ে বিস্তারিত বলা সমীচিন হবে না। খবর এএনআই ও দূরদর্শন।

ট্রেন দুর্ঘটনায় উদ্ধার অভিযান সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে

শুক্রবার সন্ধ্যায় উড়িষ্যার বালাসোরে দুটি যাত্রীবাহী ও একটি মালবাহী ট্রেনের সংঘর্ষে নিহতের সংখ্যা এরইমধ্যে তিনশ ছাড়িয়েছে। দুর্ঘটনায় আহত ৯ শতাধিক ট্রেনযাত্রী বালাসোর থেকে ভূবনেশ্বর পর্যন্ত বিভিন্ন জেলার হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন বলে জানিয়েছেন উড়িষ্যার মুখ্যসচিব প্রদীপ জেনা।

রেলওয়ের একটি সূত্র বলেছে, কোলকাতা থেকে চেন্নাইয়ের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়া দক্ষিণমুখী করমন্ডল এক্সপ্রেস সিগন্যালিং ত্রুটির কারণে মূল লাইন ছেড়ে একটি সাইড লেনে চলে যায়। ঘণ্টায় শত মাইলের বেশি সম্পন্ন ট্রেনটি সাইড লেনে গিয়ে একটি মালবাহী ট্রেনে ধাক্কা দেয়। এতে করে করমন্ডলের সামনের কয়েকটি বগি মালবাহী ট্রেনের ওপর উঠে যায় এবং পেছনের বগিগুলো ছিটকে আরেকটি লাইনে গিয়ে পড়ে। একইসময় ব্যাঙ্গালোর থেকে হাওড়ার দিকে যেতে থাকা উত্তরমুখী হাওড়া সুপারফাস্ট এসে করমন্ডলের পেছনের বগিগুলোতে ধাক্কা খায়।

ভারতের রেলমন্ত্রী বলেছেন, ইলেকট্রনিক ইন্টারলকিং সিস্টেমে পরিবর্তনের কারণে দুর্ঘটনা হয়েছে। কে বা কারা এ পরিবর্তন করেছে তা তদন্তে বেরিয়ে আসবে। আমরা তাদের শাস্তি দেব।

এর আগে শনিবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়ে বলেছেন, ঘটনার জন্য দায়ী কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।

ট্রেন দুর্ঘটনায় হতাহতদের উদ্ধার অভিযানের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়েছে শনিবার সন্ধ্যায়। সেখানে পড়ে থাকা ট্রেন ও বগির ধ্বংসস্তুপ সরিয়ে নেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে। দুর্ঘটনাস্থলের কাছের একটি হাসপাতালকে অস্থায়ী মর্গ ঘোষণা করে উদ্ধারকৃত মরদেহগুলো সেখানে মেঝেতে রাখা হয়েছে।

কর্মকর্তারা জানান, নিহতদের অনেকের মরদেহ ছিন্নবিচ্ছিন্ন ও বিকৃত হয়ে গেছে। শোকাকূল স্বজনরা অলঙ্কার ও জামা-কাপড় দেখে তাদের শনাক্ত করছেন। বালাসোর থেকে ভূবনেশ্বর পর্যন্ত ২০০ কিলোমিটার পথের সবকটি হাসপাতালে আহতদের ভর্তি করা হয়েছে। আহতদের হাসপাতালে নেওয়ার জন্য প্রায় ২০০ অ্যাম্বুলেন্সের পাশাপাশি বেশকিছু বাস নিয়োগ করা হয়েছে।

বিশ্বের অন্যতম বড় রেল নেটওয়ার্ক ভারতের। প্রতিদিন আড়াই হাজারের বেশি ট্রেন চলাচল করে দেশটিতে। বিশ্বের ভয়াবহতম কয়েকটি ট্রেন দুর্ঘটনার সাক্ষী ভারত। লাল বাহাদুর শাস্ত্রী থেকে লালু প্রসাদ যাদব পর্যন্ত ভারতের বেশ কজন রেলমন্ত্রীকে দুর্ঘটনার জেরে পদত্যাগ করতে হয়েছে।