ইউক্রেনের সদস্যপদ নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত ন্যাটো

ইউক্রেনকে ন্যাটোর সদস্য করা নিয়ে স্পষ্ট সিদ্ধান্ত চান দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। তিনি বলেন, এ বছরটি হলো সিদ্ধান্তের বছর। সে ক্ষেত্রে ন্যাটোর পক্ষ থেকে আমরা একটি হ্যাঁ-সূচক সিদ্ধান্ত চাই। গতকাল বৃহস্পতিবার মলদোভায় ইউরোপিয়ান নেতাদের এক সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি। তবে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে বিভক্তি দেখা গেছে ন্যাটোর সদস্যদের মধ্যে। খবর আল জাজিরা

মলদোভায় জেলেনস্কি

মলদোভায় ইউরোপীয় রাজনৈতিক সম্প্রদায়ের বৈঠকে জেলেনস্কি ন্যাটো ও ইইউ’র সদস্য হওয়ার ব্যাপারে তার দাবি পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, যদি এটি বাস্তবায়িত হয় তাহলে সেটা হবে ইউক্রেনের জন্য ভালো সিদ্ধান্ত, এমনকি পুরো বিশ্বের জন্যও ভালো।

জেলেনস্কি বলেন, শুধু ইউক্রেন নয়, রাশিয়ার সীমান্তবর্তী সমস্ত দেশকে উভয় সংস্থার পূর্ণ সদস্য করে নেওয়া উচিত। কারণ মস্কো শুধুমাত্র তাদেরই গ্রাস করার চেষ্টা করে, যারা সাধারণ সুরক্ষাসীমার বাইরে থাকে। এ অবস্থায় জীবন রক্ষা করা এবং আক্ষরিক অর্থে শান্তিকে ত্বরান্বিত করতে তিনি ইউরোপের নেতাদের কাছে আরও ব্যাপকাকারে সহায়তা কামনা করেন।

দীর্ঘদিন ধরেই ন্যাটোর সদস্যপদ চাইছে ইউক্রেন

তবে গতকালই নরওয়ের অসলো সিটি হলে ন্যাটোর এক বৈঠকে ইউক্রেনের বিষয়ে দ্বিধাবিভক্তি দেখা গেছে। আগামী জুলাইয়ের মধ্যবর্তী শীর্ষ সম্মেলনের মাত্র কয়েক সপ্তাহ আগে নরওয়েতে এক বৈঠকে বসে ন্যাটো। তবে সেখানে কিয়েভের সংস্থাটিতে যোগদানের ব্যাপারে বিভক্তি স্পষ্ট হয়ে ওঠে।

২০০৮ সালেই ন্যাটো সম্মত হয়েছিল, ইউক্রেন জোটে যোগ দেবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা আর হয়ে ওঠেনি। কিয়েভ এবং পূর্ব ইউরোপের তার ঘনিষ্ঠ মিত্ররা ইউক্রেনকে সদস্য পদ দেওয়ার জন্য দৃঢ় পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানালেও যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানির মতো কিছু রাষ্ট্র এ ব্যাপারে সতর্কতা অবলম্বন করে। রাশিয়ার সঙ্গে জোটের সংঘাত তৈরি হতে পারে এমন পদক্ষেপ থেকে তারা দূরে ছিলেন।

গতকাল এ বিষয়টির দিকে ইঙ্গিত করে লিথুয়ানিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী গ্যাব্রিলিয়াস ল্যান্ডসবার্গিস বলেন, ১৪ বছর ধরে ন্যাটোর উত্তরের অপেক্ষায় কিয়েভ দুটি আক্রমণের শিকার হয়েছে। এখন ইউক্রেন কীভাবে ন্যাটোর কাছাকাছি আসতে পারবে এবং কবে নাগাদ তারা জোটের সদস্য হবে সে সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট উত্তর খুঁজে বের করার উপযুক্ত সময় এসেছে।

তবে জার্মানি ও লুক্সেমবার্গ মন্তব্য করে, কিয়েভকে যোগদানের জন্য ন্যাটোর তাড়াহুড়োতে ঝুঁকির সৃষ্টি হতে পারে। জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনালেনা বেয়ারবক বলেন, ন্যাটোর খোলা দরজা নীতি বহাল রয়েছে। তবে একই সঙ্গে এটাও স্পষ্ট যে, যুদ্ধরত কোনো দেশকে আমরা নতুন সদস্য হিসেবে নেওয়ার কথা বলতে পারি না। অন্যদিকে হাঙ্গেরি স্পষ্টভাবে জানায়, আসন্ন শীর্ষ সম্মেলনে ইউক্রেনের ন্যাটো যোগদান সংক্রান্ত বিষয় আলোচ্যসূচিতে না থাকাই ভালো।