ভারত সীমান্তে আগ্রাসী চীন!

সীমান্তে উত্তেজনা কমানোর আহ্বানের মধ্যেই সীমান্তে শক্তি বাড়িয়েই চলেছে চীন। লাদাখ সীমান্তের লাগোয়া স্থানেই বিমানবাহিনীর ঘাঁটি তৈরির পাশাপাশি হেলিপ্যাড, রেললাইন, মিসাইল বেস, সড়ক, সেতু নির্মাণ করে পুরোপুরি যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হয়ে থাকছে দেশটি। সাম্প্রতিক উপগ্রহ চিত্রের বিশ্লেষণ করে এমনটিই দাবি করছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস।

সীমান্তবর্তী তিনটি ঘাঁটিতেই উন্নয়ন কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে চীন

সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদনে বলা হয়, সীমান্তে শান্তি ফেরাতে সেনা প্রত্যাহার নিয়ে অব্যাহতভাবে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে এশিয়ার বৃহৎ দুই রাষ্ট্র। কিন্তু এর মধ্যেই সীমান্তে শক্তি বাড়িয়ে যাচ্ছে চীন।

‘প্ল্যানেট ল্যাব’ থেকে পাওয়া কিছু উপগ্রহ চিত্রের বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, গত কয়েক বছরে চীন হোতান, নগারি গুনসা ও লাসা অঞ্চলে তাদের বিমানবাহিনীর ঘাঁটিকে আরও উন্নত করেছে। ২০২০ সালের ২৩ জুনের উপগ্রহ চিত্রে হোতান ঘাঁটি এলাকায় কোনো পাকা বাড়ি দেখা যায়নি। অথচ ২০২৩ সালের ১৮ মে’র চিত্রে দেখা যাচ্ছে, সেখানে নতুন এয়ার বেস গড়ে তোলা হয়েছে। কোথাও আবার বেশি করে যুদ্ধবিমান রাখতে নতুন জায়গা প্রস্তুত করা হয়েছ। এই হোতানের অবস্থান চীনের শিনজিয়ায় প্রদেশে। আলোচিত সীমান্তবর্তী এলাকা লাদাখ এখান থেকে খুবই কাছে।

লাদাখ

আরেক উপগ্রহ চিত্রে দেখা গেছে, নগারি গুনসা এয়ার বেসেও উন্নয়ন কাজ চালাচ্ছে চীন। ২০২০ সালের ১০ জুনের উপগ্রহ চিত্রে ওই এলাকায় মাত্র একটি রানওয়ে দেখা গেছে। তবে ২০২৩ সালের ১৬ মে’র চিত্রে দেখা গিয়েছে, সেখানে নতুন করে রানওয়ে ও ট্যাক্সিওয়ে তৈরি করা হয়েছে। যুদ্ধবিমান রাখার জন্য হ্যাঙার তৈরি করা হয়েছে। পাশাপাশি মিলিটারি ও এয়ার অপারেশনের জন্য নতুন করে সামরিক ভবন তৈরি করা হয়েছে সেখানে। এই নগারি গুনসা ঘাঁটিটিও ভারতীয় ভূখণ্ডে বেশ কাছাকাছি এলাকায় অবস্থিত। এর বাইরে গত তিন বছরে তিব্বতের রাজধানী লাসাতে থাকা চীনা বিমানঘাঁটির পরিকাঠামোগত ব্যাপক উন্নয়ন করা হয়েছে।

চীনের এই তিনটি ঘাঁটিই ভারতীয় ভূখণ্ডের খুব কাছাকাছি এলাকায় হওয়ায় দুশ্চিন্তা বেড়েছে ভারতের। হোতান ঘাঁটিটি সীমান্ত থেকে ৪০০ কিমি, নগারি গুনসা সীমান্ত থেকে ২০০ কিমি এবং লাসা মাত্র ২৫০ কিমি দূরে অবস্থিত। বিমানহামলাসহ সার্বিক বিচারে এ দূরত্ব আসলে তেমন কিছুই নয়।

এ বিষয়ে আপাতত মুখ খুলতে নারাজ ভারতীয় সেনা কর্মকর্তারা। তবে অবসরপ্রাপ্ত এয়ার ভাইস মার্শাল মনমোহন বাহাদুর বলেন, এর আগে সীমান্তবর্তী অঞ্চলে চীনের থেকে ভারতীয় বিমান বাহিনীর প্রভাব বেশি ছিল। কিন্তু ধীরে ধীরে চীন এসব নির্মাণ কাজের মাধ্যমে ভারত থেকেও অনেক এগিয়ে গেছে। নিজেদের হামলা চালানোর সুযোগ যেমন বাড়িয়েছে তেমনি ভারতীয় বাহিনীর হামলা প্রতিহত করার মতো যোগ্য করে তুলেছে এসব ঘাঁটিকে।

এর আগে ভারত বিভিন্ন সময়ে এসব নিয়ে আপত্তি তুললেও চীন একে থোড়াই কেয়ার করেছে। নতুন উপগ্রহ চিত্র পর্যালোচনায় সেটিই আরো পরিষ্কার হলো।