রহস্য: ১০ কিলোমিটার গভীর গর্ত খুঁড়ছে চীন

পৃথিবীর মাটিতে গভীরতম গর্ত খুঁড়তে চলেছে চীন। দেশটির উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় খনিজ তেলসমৃদ্ধ প্রদেশ শিনজিয়াংয়ে গভীর এই গর্ত খুঁড়তে শুরু করেছে বেইজিং। খবর হিন্দুস্তান টাইমস, সিনহুয়া।

গর্ত খুঁড়ছে চীন

স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানায়, গত মঙ্গলবার থেকে শিনজিয়াংয়ে ওই গর্ত খোঁড়ার কাজ শুরু হয়। এর গভীরতা হবে ১০ হাজার মিটার বা ৩২ হাজার ৮০৮ ফুট। এই গর্ত খোঁড়া হলে তা হবে পৃথিবীর সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্টের চেয়ে বেশি দৈর্ঘের। এভারেস্টের বর্তমান উচ্চতা আট হাজার ৮৪৮ মিটার (২৯ হাজার ৩০ ফুট)।

গর্তটি মাটিতে ১০টিরও বেশি শিলার স্তর ভেদ করবে। একই সঙ্গে সেটি পৃথিবীর ভূত্বকের ক্রিটেসিয়াস সিস্টেমে পৌঁছে যাবে, যা প্রায় সাড়ে ১৪ কোটি বছর আগের শিলা বৈশিষ্ট্যযুক্ত।

২০২১ সালেই শি জিনপিং এর কথা বলেছিলেন

চীনের প্রেসিডেন্ট ২০২১ সালে দেশের শীর্ষস্থানীয় বিজ্ঞানীদের সামনে দেওয়া এক বক্তৃতায় পৃথিবীর গভীরতা অন্বেষণে বৃহত্তর অগ্রগতির আহ্বান জানিয়েছিলেন। তবে কাজটিকে ব্যাপক জটিল উল্লেখ করে চীনা একাডেমি অব ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের বিজ্ঞানী সান জিনশেং বলেন, এ প্রকল্পটিকে দুটি পাতলা স্টিলের তারের ওপর দিয়ে একটি বড় ট্রাক চালানোর সঙ্গে তুলনা করা যেতে পারে।

চীনের সরকারি বার্তা সংস্থা সিনহুয়া নিউজ এজেন্সি জানায়, মঙ্গলবার দেশটির তেলসমৃদ্ধ শিনজিয়াং অঞ্চলে চীনের সবচেয়ে গভীরতম গর্ত খননের জন্য কাজ শুরু হয়েছে। একই দিন সকালে চীন তার প্রথম বেসামরিক নভোচারীকে মহাকাশে পাঠিয়েছে।

চীনের বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, এই ধরনের কাজের মাধ্যমে ভূগর্ভে সঞ্চিত ধাতু ও শক্তির উৎস সম্পর্কে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হতে পারে। খনিজ ও শক্তি সম্পদ অধিক কার্যকরভাবে শনাক্ত করা যেতে পারে। শুধু তাই নয়, এই প্রকল্পের মাধ্যমে প্রাকৃতিক দুর্যোগ সম্পর্কেও আগে থেকে নিশ্চিত হওয়া যাবে। ভূমিকম্প ও আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের মতো পরিবেশগত বিপর্যয়ের ঝুঁকিগুলো মূল্যায়নে সাহায্য পাওয়া যাবে।

অবশ্য পৃথিবীর গভীরতম মানবসৃষ্ট গর্তের রেকর্ড এখন পর্যন্ত রাশিয়ার দখলে। ২০ বছর খনন কাজের পর ১৯৮৯ সালে রাশিয়ার ‘কোলা সুপারডিপ বোরহোল’-এর গভীরতা ১২ হাজার ২৬২ মিটারে (৪০ হাজার ২৩০ ফুট) পৌঁছেছিল।