মার্কিন কর্মকর্তা: পদে থাকার যোগ্যতা নেই পাক সেনাপ্রধানের

পাকিস্তানি সেনাপ্রধান জেনারেল আসিম মুনীর কোনো পারমাণবিক শক্তিধর দেশের সেনাবাহিনীর শীর্ষপদে থাকার যোগ্য নন বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক মার্কিন কূটনীতিক জালমেই খলিলজাদ। আসিম মুনীরকে ‘অস্থির, বদরাগী ও আত্মমগ্ন’ অভিহিত করে তিনি বলেছেন, এমন ব্যক্তির আঙুল পারমাণবিক সুইচে অবশ্যই থাকা উচিত নয়।

জিমি কার্টার থেকে জুনিয়র বুশ- পাঁচজন মার্কিন প্রেসিডেন্টের অধীনে চাকরি করেছেন খলিলজাদ

দুইদিন আগে শিয়ালকোটে পাক বাহিনীর জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন জেনারেল আসিম মুনীর। ওই বৈঠকে পাক সেনাপ্রধানের বক্তব্যের সমালোচনা করতে গিয়ে খলিলজাদ এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, পাকিস্তান নিয়ে আমি আগেও উদ্বিগ্ন ছিলাম। তবে দেশটির সেনাপ্রধানের সাম্প্রতিক এক বক্তব্যের পর আমি বিশ্বাস করি যে পরিস্থিতি সত্যিই খারাপ। শিয়ালকোটে জ্যেষ্ঠ সেনা কর্মকর্তাদের সঙ্গে বদ্ধ ঘরে তার উত্তেজনাপূর্ণ চিৎকার চেঁচামেচির বিষয়টি আমি নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানতে পেরেছি।

টুইটারে এক দীর্ঘ পোস্টে খলিলজাদ লিখেছেন, প্রথম কথা হলো পাক সেনাপ্রধান তার সমালোচকদের স্ত্রী-সন্তানদের ক্ষতি করার হুমকি দিয়েছেন। গত ৯ মে যে সহিংসতা হয়েছে, তা ভালো নয় এবং তার স্বচ্ছ তদন্ত হওয়া উচিত। তবে ওই ঘটনায় যেসব অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা সম্পৃক্ত থাকতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে, তাদের পরিবারের নির্দোষ সদস্যদের ক্ষতি করার হুমকি দেওয়ার কোনো অজুহাত থাকতে পারে না।

জাতিসংঘ, ইরাক ও আফগানিস্তানে রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালনকারী এ মার্কিন কূটনীতিক ও শিক্ষাবিদ বলেন, শিয়ালকোটের বদ্ধঘরে সেনা কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে পাক সেনাপ্রধান খুব নোংরা ভাষা ব্যবহার করেছেন। জেনারেল আসিম মুনীর হুমকি দিয়ে বলেছেন, তার পতন হলে তিনি সবাইকে তার সঙ্গে নিচে টেনে নেবেন।

খলিলজাদ লিখেছেন, আসিম মুনীরের কথাবার্তা প্রমাণ করছে যে পাকিস্তানের মতো একটি বড় ও গুরুত্বপূর্ণ দেশের সশস্ত্র বাহিনীর নেতৃত্ব দেওয়ার ধৈর্য্য ও স্থিরতা তার নেই। এমন অস্থির, বদরাগী ও আত্মমগ্ন কোনো ব্যক্তির আঙুল পারমাণবিক সুইচে থাকা অবশ্যই উচিত নয়। সেনাবাহিনী একটি দেশের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান, যার নেতৃত্ব অবশ্যই শান্ত্ব, দায়িত্ববান ও রাজনৈতিকভাবে নিরপেক্ষ হওয়া উচিত।

সত্তরের দশকের শেষদিকে কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটির শিক্ষক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করা জালমেই খলিলজাদ পরবর্তী তিন দশকে কূটনীতিক, নীতি-নির্ধারক ও চিন্তক হিসেবে মার্কিন সরকারে কাজ করেছেন।

জিমি কার্টারের আমলে আফগানিস্তানে সোভিয়েত বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধরত মুজাহিদীনদের সহযোগিতার জন্য অপারেশন সাইক্লোন নামক অভিযান সংগঠনে কাজ করেন আফগানিস্তানে জন্মগ্রহণকারী মার্কিন নাগরিক খলিলজাদ। পরবর্তীতে তিনি রোনাল্ড রিগ্যান, জর্জ এইচ ডব্লিউ বুশ, বিল ক্লিনটন ও জর্জ ডব্লিউ বুশের আমলে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাজ করেছেন।