ইসরায়েলের 'স্বাধীনতা দিবস' উদযাপন করে সমালোচনার মুখে আরব আমিরাত

পশ্চিম তীর এবং গাজা উপত্যকায় ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলি বাহিনীর হামলা সত্ত্বেও গত সপ্তাহে ইসরায়েলের স্বাধীনতা দিবস উদযাপনের জন্য সংযুক্ত আরব আমিরাত ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছে। টুইটারসহ বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায় দেশটির নিন্দায় মুখর হয়ে ওঠেছেন ব্যবহারকারীরা। খবর দ্য নিউ আরব।

ইসরায়েলের 'স্বাধীনতা দিবস' উদযাপন করে সমালোচনার মুখে আরব আমিরাত

২০২০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার জন্য আব্রাহাম অ্যাকর্ডস নামে একটি বিতর্কিত চুক্তিতে স্বাক্ষর করে আরব আমিরাত এবং বাহরাইন। দুই বছর পরে ৫ মে প্রথমবার আরব আমিরাতে ইসরায়েলি স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে একটি ইভেন্টের আয়োজন করা হয়। এতে ইসরায়েলি কর্মকর্তা এবং শিল্পীরা ছাড়াও আরব আমিরাতের কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে ইসরায়েলি গায়ক নিকোল রাভিভ একজন আমিরাতি গায়কের পাশাপাশি গান গেয়েছেন। এতে উভয় দেশের জাতীয় সঙ্গীতও গাওয়া হয়। পরে রাভিভ একটি ভিডিও পোস্ট করে ক্যাপশনে লিখেন, ‘আব্রাহামের সন্তানরা এক হও।’

এই অনুষ্ঠানের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে চলমান ইসরায়েলি আগ্রাসন সত্ত্বেও এই ধরনের একটি ইভেন্ট আয়োজন করায় অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

এই ইভেন্টের মাত্র কয়েকদিন পর, ইসরায়েলি বিমান হামলায় গাজা উপত্যকায় বেসামরিক নাগরিক এবং ইসলামিক জিহাদ আন্দোলনের কমান্ডারসহ ৩৩ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়। অধিকৃত পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনিদের অভিযান, গ্রেপ্তার এবং হত্যাও অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েলি বাহিনী।

টুইটারে আরব আমিরাতে নিন্দা জানিয়ে একাধিক টুইট করা হয়। ইসলামপন্থী মার্কিন ভাষ্যকার এবং লেখক ড্যানিয়েল হাকিকাতজু টুইটারে লিখেন, ‘ইহুদিবাদী রাষ্ট্র ইসরায়েল সংযুক্ত আরব আমিরাতে স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করার কিছুক্ষণ পরেই ফিলিস্তিনে বোমাবর্ষণ শুরু করে।’

একজন টুইটার ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘ইসরায়েল সম্প্রতি সংযুক্ত আরব আমিরাতে তার প্রথম স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করেছে। অথচ পশ্চিম তীরে প্রতিদিন ইসরায়েলি অভিযানে ফিলিস্তিনি নিহত হচ্ছে এবং গাজায় নারী ও শিশুদের ওপর বোমা হামলা হচ্ছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের মত বিশ্বাসঘাতকদের কাছ থেকে প্রত্যাশার কিছুই নেই।’

আরেকজন টুইটার ব্যবহারকারী আরবিতে লিখেছেন, ‘ইহুদিবাদীদের সঙ্গে সহযোগিতা করা জাতি ও ধর্মের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতার শামিল।’

উল্লেখ্য, ১৯৪৮ সালের ১৪ মে ইসরায়েল প্রতিষ্ঠিত হয়। সে সময় ইহুদিবাদী মিলিশিয়ারা হামলা করে ৭ লাখ ৫০ হাজার ফিলিস্তিনিদের জোরপূর্বক তাদের বাড়িঘর থেকে বিতাড়িত করে। এদিনকে স্মরণ করে প্রতিবছর নাকবা বা বিপর্যয় দিবস পালন করে ফিলিস্তিনিরা।