মালিতে পাঁচ দিনে ৫০০ মানুষ হত্যা
- Details
- by আন্তর্জাতিক ডেস্ক
মালির সেনাবাহিনী ও তাদের বিদেশি সহযোগীরা গত বছরের মার্চ মাসে কয়েকদিনে সে দেশের মধ্যাঞ্চলীয় মৌরা শহরে কমপক্ষে ৫০০ মানুষকে হত্যা করেছে। পবিত্র রমজান মাসকে সামনে রেখে আয়োজিত একটি মেলা থেকে আটকের পর এসব মানুষকে হত্যা করা হয়। আজ শুক্রবার প্রকাশিত জাতিসংঘের এক তদন্ত প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে। খবর এএফপি।
গত বছর মার্চে মৌরা শহরে নির্বিচার হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে মালির সেনাবাহিনী
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের দপ্তরের (ওএইচসিএইচআর) তথ্য মতে, ২০১২ সালে মালিতে জিহাদি বিচ্ছিন্নতাবাদী তৎপরতা শুরুর পর এটাই নৃশংসতার সবচেয়ে জঘন্য ঘটনা। মালির সেনাবাহিনী ও তাদের বিদেশি সহযোগীদের মানবাধিকার লঙ্ঘনেরও বড় প্রমাণ এটা।
মালির সেনাবাহিনীর বিদেশি সহযোগীদের নাগরিকত্ব সম্পর্কে প্রতিবেদনে স্পষ্ট বলা হয়নি। যদিও মালির সরকার সেদেশে রুশ সামরিক উপদেষ্টাদের নিয়োগ দিয়েছে। বিভিন্ন পশ্চিমা দেশ ও বিশেষজ্ঞদের মতে, এসব উপদেষ্টা রাশিয়ার ওয়াগনর গ্রুপের ভাড়াটে সৈন্য।
ওএইচসিএইচআরের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২২ সালের মার্চ মাসের ২৭-৩১ তারিখ পর্যন্ত মধ্যাঞ্চলীয় মৌরা জেলায় নির্বিচার হত্যাযজ্ঞ চলেছে। এটা বিশ্বাস করার যুক্তিযুক্ত কারণ রয়েছে যে কমপক্ষে ৫০০ মানুষকে আন্তর্জাতিক আইনের বিধি, রীতি, মানদণ্ড ও নিয়ম লঙ্ঘন করে হত্যা করা হয়েছে। মালির সশস্ত্র বাহিনী ও বিদেশি সামরিক সদস্যরা এ হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে।
মালিতে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী মিশন মিনুসমার মানবাধিকার বিভাগের দীর্ঘ তদন্ত শেষে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হলো। মালির সরকার মিনুসমার মানবাধিকার বিভাগের কর্মকাণ্ডকে প্রায়শ আক্রমণ করে থাকে।
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, মৌরা শহর বেশ কয়েক বছর ধরে কাতিবা মাসিনা গ্রুপের শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। আল-কায়েদা সংশ্লিষ্ট সাপোর্ট গ্রুপগুলোর সঙ্গে কাতিবা মাসিনার যোগ রয়েছে। ২০২২ সালের ২৭ মার্চ মৌরা শহরে গবাদি পশুর বিরাট হাট বসে। রমজান মাসকে সামনে রেখে কেনাকাটার জন্য হাটে হাজার হাজার লোক সমাগম হয়। কাতিবা মাসিনার প্রায় ৩০ জন সদস্য হাটে আসা লোকের ভিড়ে ঘোরাঘুরি করছিল।
এরইমধ্যে সেনাবাহিনীর সদস্য ও বিদেশি সহযোগীরা হাটে আক্রমণ চালায়। পাঁচটি হেলিকপ্টারে চড়ে আসা সৈন্যরা নির্বিচারে গুলিবর্ষণ শুরু করে। এ সময় জিহাদীরাও পাল্টা গুলি চালায়। এ ঘটনায় প্রায় ৩০ জন নিহত হয়, যার মধ্যে ১২ জন জিহাদী সদস্য ছিল।
কয়েক ঘণ্টার মধ্যে মালির সেনাবাহিনী পুরো এলাকার নিয়ন্ত্রণ নেয় এবং প্রায় তিন হাজার মানুষকে আটক করে। চারটি পৃথক স্থানে এসব মানুষকে আটকে রাখা হয়। পরবর্তী কয়েকদিনে আটককৃতদের মধ্য থেকে লম্বা দাড়ি ও অন্যান্য চিহ্ন দেখে বেছে বেছে মানুষকে হত্যা করা হয়। ভিকটিমদের গণকবরে সমাহিত করা হয়।
প্রতিবদনে বলা হয়, সৈন্যদের হাতে যারা হত্যার শিকার হন তাদের মধ্যে ২০ জন নারী ও সাতজন শিশু। প্রাপ্ত তথ্য প্রমাণে দেখা গেছে, আটককৃতদের মধ্যে ৫৮ জন নারী শিশু ধর্ষণ ও যৌন নিপীড়নের শিকার হয়েছে। অন্যদের ওপর নানাভাবে নির্যাতন চালানো হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ১৫৭ জন ব্যক্তির জবানবন্দি ও ১১টি গ্রুপ সাক্ষাৎকারে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে জাতিসংঘ তদন্ত দল এ প্রতিবেদন প্রস্তুত করেছে। ২০২২ সালের মার্চ থেকে অক্টোবর পর্যন্ত সাত মাস সরেজমিন এ তদন্ত চালানো হয়। মিনুসমা মিশন সম্প্রসারণ করা হবে কিনা এ মর্মে জাতিসংঘের সিদ্ধান্তকে সামনে রেখে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হলো।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক প্রধান ভোলকার তুর্ক এ তদন্ত প্রতিবেদনের তথ্যকে ‘চরম উদ্বেগজনক’ অভিহিত করে বলেছেন, সশস্ত্র সংঘাতের সময়ে ঢালাও, সংক্ষিপ্ত বিচার, ধর্ষণ ও নির্যাতনের ঘটনাগুলো প্রেক্ষাপট অনুযায়ী মানবতাবিরোধী অপরাধ বলে বিবেচ্য হতে পারে।
গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...
খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর
Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.
Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.