ইসরায়েলি হামলা, জবাবে শতাধিক রকেট ছুড়ল ফিলিস্তিনিরা

দ্বিতীয় দিনের মতো গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের ড্রোন ও বিমান হামলা অব্যাহত রয়েছে। জবাবে ফিলিস্তিনি উপদল ইসলামিক জিহাদ (পিআইজে) ইসরায়েলে প্রায় ১২০টি রকেট ছুড়েছে। এর মধ্যে অন্তত তিনটি রকেট তেল আবিব শহরে আঘাত হেনেছে। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনজামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, আমরা একটি যুদ্ধাবস্থার মধ্যে রয়েছি এবং সেটেলারদের আইন মেনে চলার আহ্বান করছি।

ইসরায়েলের আকাশে পিআইজের ছোঁড়া রকেট

আল-মানার টিভির খবরে বলা হয়েছে, খান ইউনুসসহ গাজা উপত্যকার কয়েকটি বসতিতে ইসরায়েলি বাহিনী আবারও হামলা শুরু করেছে। এ নিয়ে দুইদিনে ইসরায়েলি হামলায় ১৯ জন নিহত ও ৩০ জন আহত হলো। পিআইজের বিভিন্ন স্থাপনা লক্ষ্য করে আক্রমণ চলছে বলে ইসরায়েলি বাহিনী দাবি করেছে।

এদিকে পিআইজে আজ দুপুরে গাজা থেকে উত্তরদিকের ইসরায়েলি বসতি লক্ষ্য করে রকেট হামলা শুরু করেছে। আশকেলন, সেদরত, তেল আবিব, মিশান, কাফার সিলভার, বাত হাদের, নির, হোদাইয়া, তালমাই ইয়াফ, বেরেখিয়া, গিয়া, কোকাভ মাইকেল, বাইত শিকমাসহ ইসরায়েলের এক ডজনের বেশি শহরে বিমান হামলার সতর্কতাসূচক সাইরেন শোনা গেছে।

জানা গেছে, তিনটি রকেট তেল আবিব শহরের ভবন ও সড়কে পড়েছে। শহরের ন্যাশনাল পার্ক, আজর ও রামাত গান এলাকা থেকে ধোঁয়া উঠতে দেখা গেছে। তেল আবিবের দক্ষিণাংশে গুশ ডান এলাকায় বড় ধরনের বিস্ফোরণের খবর পাওয়া গেছে। তবে কর্মকর্তাদের বরাতে ইসরায়েল হাইওমের খবরে বলা হয়েছে, তেল আবিবের আকাশে কমপক্ষে তিনটি রকেট আয়রন ডোমের সাহায্যে প্রতিহত করা হয়েছে।

ইসরায়েলি সূত্রগুলো বলছে, আজকের রকেট হামলায় ফিলিস্তিনি সংগঠন হামাস সক্রিয়ভাবে অংশ নিচ্ছে। তবে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর মুখপাত্র বলেছেন, আমরা এ পর্যন্ত হামাসের উপস্থিতি দেখছি না। আমরা সংঘাত বাড়াতে চাচ্ছি না, আমরা যুদ্ধ চাচ্ছি না।

এর আগে মঙ্গলবার ভোরে ইসরায়েলি বিমান ও ড্রোন হামলায় গাজা উপত্যকায় পিআইজের তিন কমান্ডারসহ ১৩ ফিলিস্তিনি নিহত ও ২৯ জন গুরুতর আহত হয়। এরপর দুপুরে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে মধ্যস্থতার জন্য মিশরের প্রতি আহ্বান জানালেও কায়রো তা প্রত্যাখ্যান করে।

মিশরের কর্মকর্তারা বলেছেন, ইসরায়েলের মঙ্গলবারের হামলার পর তাদের পক্ষে ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে মধ্যস্থতা করা সম্ভব নয়। অন্যদিকে পিআইজে বলেছে, ইসরায়েলের সঙ্গে সম্ভাব্য শান্তি আলোচনায় যাদেরকে প্রতিনিধি হিসেবে পাঠানোর কথা ছিল, বিমান হামলায় তাদেরকে হত্যা করা হয়েছে।

একই সময়ে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ সংগঠন হামাসের এক বিবৃতিতে বলা হয়, দখলদার কর্তৃপক্ষ অমার্জনীয় ভুল করেছে, যার মাশুল তাদের গুনতে হবে।

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু এক টেলিভিশন ভাষণে বলেছেন, আমরা একটি যুদ্ধাবস্থার মধ্যে রয়েছি। এ অবস্থায় গাজা উপত্যকার কাছের ইসরায়েলি বসতিগুলোর সেটেলারদের আইন মেনে ও সতর্কভাবে চলাফেরার আহ্বান জানাচ্ছি। সেনাবাহিনীকে আমি সবদিক থেকে আক্রমণের কথা মাথায় রেখে সম্ভাব্য প্রস্তুতি রাখতে বলেছি। এ অবস্থা কয়েক দিন অথবা কয়েক সপ্তাহ স্থায়ী হতে পারে।