আপনি পড়ছেন

বিশ্বে এমন একটি দেশই আছে, যেখানে জনসংখ্যার চেয়ে আগ্নেয়াস্ত্র বা বন্দুকের সংখ্যা বেশি। দেশটি হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। সুইজারল্যান্ডভিত্তিক সংস্থা স্মল আর্মস সার্ভের (এসএএস) প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে। গত সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের টেনেসি রাজ্যের ন্যাশভিল শহরে বন্দুক হামলায় ছয়জন নিহতের ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রের সহজলভ্য আগ্নেয়াস্ত্রের কথা আবারো আলোচনায় ওঠে আসে। খবর সিএনএন।

us armsযুক্তরাষ্ট্রে অস্ত্র এখনও সহজলভ্য

এসএএসের হিসেবে দেখা গেছে, , যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি ১০০ নাগরিকের বিপরীতে রয়েছে ১২০টি আগ্নেয়াস্ত্রের মালিকানা। এ তালিকায় অনেক দূরে অবস্থান করছে দ্বিতীয় স্থানে থাকা ফকল্যান্ড আইল্যান্ড। সেখানে বিদ্যমান আগ্নেয়াস্ত্রের পরিমাণ যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় অর্ধেক। অর্থাৎ প্রতি ১০০ জনের বিপরীতে আগ্নেয়াস্ত্রের সংখ্যা ৬২ দশমিক ১০। তৃতীয় স্থানে রয়েছে যুদ্ধরত দেশ ইয়েমেন। সেখানে প্রতি ১০০ জনের বিপরীতে অস্ত্র রয়েছে ৫৩টি।

এসএএসের হিসেবে বিশ্বজুড়ে ৮৫ কোটি ৭০ লাখ বেসামরিক আগ্নেয়াস্ত্র বা বন্দুক রয়েছে। এরমধ্যে প্রায় অর্ধেক বা ৩৯ কোটি ৩০ লাখ বা ৪৪ শতাংশ রয়েছে মার্কিন নাগরিকদের হাতে। অবশ্য সংস্থাটি বলছে, অবৈধ অস্ত্র, চোরাচালান ও অনিবন্ধিত অস্ত্রের হিসাব না পাওয়া এবং যুদ্ধকবলিত এলাকার হিসাব করা কঠিন হওয়ায় পুরোপুরিভাবে অস্ত্রের পরিসংখ্যান দেওয়া সম্ভব নয়।

ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাস-অস্টিনের সহযোগী অধ্যাপক জাচ্যারি এলকিনস জানান, বিশ্বে মাত্র তিনটি দেশে সাংবিধানিকভাবে আগ্নেয়াস্ত্র রাখার বৈধতা রয়েছে। দেশগুলো হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র, মেক্সিকো ও গুয়েতেমালা। এরমধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ছাড়া অন্য দুই দেশে ব্যক্তি পর্যায়ে আগ্নেয়াস্ত্রের মালিকানা যুক্তরাষ্ট্রের তুলনায় এক-দশমাংশ।

২০২০ সালের একটি গ্যালাপ-জরিপে বলা হয়েছিল, যুক্তরাষ্ট্রে যারা পরিবার নিয়ে থাকেন তাদের ৪৪ শতাংশ নাগরিক অন্তত একটি বন্দুক রাখেন।

ইউএস বুরো অব অ্যালকোহল, টোব্যাকো, ফায়ারআর্মস অ্যান্ড এক্সপ্লোসিভসের (এটিএফ) তথ্যানুযায়ী, ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রে ৯০ লাখ আগ্নেয়াস্ত্র তৈরি করা হয়। সংখ্যাটি ২০০৮ সালের তুলনায় দ্বিগুণ। অন্যদিকে ২০২০ সালের তুলনায় ২০২১ সালে আগ্নেয়াস্ত্র কেনার হার ৬০ শতাংশ বেড়েছে।

আগ্নেয়াস্ত্রের সহজলভ্যতায় দেশটিতে এ সংক্রান্ত মৃত্যুর সংখ্যাও অনেক বেশি। দেশটির ইনস্টিটিউট ফর হেলথ ম্যাট্রিক্স অ্যান্ড ইভ্যালুয়েশনের (আইএইচএমই) ২০১৯ সালের প্রকাশিত তথ্যানুযায়ী, আগ্নেয়াস্ত্রের সহিংসতায় উন্নত বিশ্বের দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি মানুষ মারা যায় যুক্তরাষ্ট্রে। এক্ষেত্রে শীর্ষে রয়েছে দেশটির রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসি, যেখানে মৃত্যুর হার গোটা ব্রাজিলের প্রায় সমান।

আবার বিশ্বজুড়ে বন্দুক দিয়ে গুলি করে মানুষ হত্যার দিক দিয়ে সবার ওপরে অবস্থান দক্ষিণ আমেরিকা ও ক্যারিবীয় অঞ্চলের দেশগুলোর। সেখানে হত্যাকাণ্ডে শীর্ষে আছে এল সালভাদর, ভেনেজুয়েলা, গুয়েতেমালা, কলম্বিয়া ও হন্ডুরাস। এ তালিকায় যুক্তরাষ্ট্রের নাম না থাকলেও এসব দেশে অস্ত্র সরবরাহের রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের বড় অবদান। ২০২১ সালের মার্কিন এক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, বছরে প্রায় দুই লাখ মার্কিন আগ্নেয়াস্ত্র মেক্সিকোর সীমান্ত হয়ে বিভিন্ন দেশে পাচার হয়। সে সব অস্ত্রও প্রচুর হত্যাকাণ্ডের সাক্ষী।

গত বছর কলোরাডো, সাউথ ক্যারোলিনা ও টেক্সাসে বন্দুকধারীদের গুলিতে প্রচুর হতাহত হওয়ার ঘটনায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারে কড়াকড়ি আরোপের আহ্বান জানান। তবে দেশটির প্রধান দুই রাজনৈতিক দল রিপাবলিকান ও ডেমোক্রেটের মধ্যে বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক উদাসীনতা দেখা দেয়। দেখা গেছে, ৮০ শতাংশ রিপাবলিকান ও ১৯ শতাংশ ডেমোক্র্যাট দলীয় সদস্য চান, আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারের অধিকার থাকুক অথবা শিথিলতা বজায় রাখা হোক।

গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...

খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর

Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.

Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.